তালায় বাঁধ সংস্কারসহ পাখিমারা বিলে টিআরএম কার্যক্রম অব্যাহত রাখার দাবী
কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায় বাস্তবায়ন ও দ্রæত পেরিফেরিয়াল বাঁধ সংস্কার পূর্বক পাখিমারা বিলের টিআরএম কার্যক্রম অব্যাহত রাখার দাবীতে তালা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৫ আগষ্ট) বেলা ১১টায় তালা উপজেলা পানি কমিটির পক্ষ থেকে উক্ত সংবাদ সম্মেলনে আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তালা উপজেলা পানি কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ময়নুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, তালা উপজেলার পাখিমারা বিলে টিআরএম কার্যক্রম বাস্তবায়ন হওয়ায় কপোতাক্ষ অববাহিকার জনজীবনে স্বস্তি দেখা দিয়েছে, দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতার কবল থেকে এই এলাকা মুক্ত হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন জটিলতার কারণে পাখিমারা বিলে টিআরএম কার্যক্রম অব্যাহত রাখা যাবে কিনা তা নিয়ে বিভিন্ন ধরণের সন্দেহ দেখা দিয়েছে। ‘কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্প (১ম পর্যায়)’ প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১১ সালের জুলাই মাসে এবং সমাপ্ত হয় ২০১৭ সালের জুন মাসে। প্রকল্পটির প্রধান দুটি বিষয় ছিল- ৯০ কি.মি নদী খনন এবং তালা উপজেলার জালালপুর, খেশরা ও মাগুরা ইউনিয়নে অবস্থিত পাখিমারা বিলে টিআরএম বাস্তবায়ন। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের জলাবদ্ধতা দূরীকরণে এটি দৃষ্টান্তমূলক একটি সফল প্রকল্প। পাখিমারা বিলে টিআরএম বাস্তবায়ন হওয়ায় বিশাল কপোতাক্ষ অববাহিকা জলাবদ্ধতা মুক্ত হয়েছে, উপকৃত হয়েছে ১৫ লক্ষ অধিবাসী। অববাহিকার মানুষরা এখন নির্বিঘেœ ধানচাষ, মাছ চাষ, সবজি চাষ ও পশুপালন করতে পারছে। বসতি এলাকা, চলাচলের রাস্তা ও বিভিন্ন ধরণের প্রতিষ্ঠানসমূহ জলাবদ্ধতার কবল থেকে মুক্ত হয়েছে এবং এলাকার জনজীবন স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশ প্রতিবেশেরও ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের অগ্রগতি অব্যাহত রাখার স্বার্থে ইতিমধ্যে ২য় পর্যায় প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়েছে। বিগত ২০২০ সালের আগষ্ট মাসে ৫৩১ কোটি ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে ৪ বৎসর মেয়াদী ২য় পর্যায় প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। দ্বিতীয় পর্যায় প্রকল্পটির মূল কাজ হলো পাখিমারা বিলে টিআরএম কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং নদী খনন।
তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালের ২০ মে উপকূলীয় এলাকায় প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় আম্ফান সৃষ্ট জলোচ্ছ¡াস তান্ডবে পাখিমারা বিলের পেরিফেরিয়াল বাঁধ ৫ জায়গায় ভেংগে যায়। এতে জালালপুর ও মাগুরা ইউনিয়নের ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। মানুষের ঘরবাড়িতে পানি উঠে যায়। ভেসে যায় ফসলিক্ষেত, মৎস্য খামার এবং চলাচলের রাস্তা। প্রবল জলোচ্ছ¡াসের আঘাতে পেরিফেরিয়াল বাঁধ দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। বাঁধের ভগ্নদশা এমন অবস্থায় উপনীত হয় যে অতি জোয়ারে যে কোন সময় বাঁধ ভেঙে ব্যাপক এলাকা পুনরায় প্লাবিত হবে। তখন সর্বদা জনমনে আশংকা বিরাজ করেছিল যে, টিআরএম এর পেরিফেরিয়াল বাঁধ পুননির্মাণ না করে যদি টিআরএম কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয় তাহলে এলাকায় বসবাস করা যাবে না।
তিনি বলেন, কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত অগ্রাধিকার মূলক একটি প্রকল্প। প্রকল্পটির সফলতা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হোক সেটি কোনক্রমেই কাম্য হতে পারে না। অবশ্যই প্রকল্পটির সফলতা ধরে রাখা নির্ভর করছে পাখিমারা বিলে টিআরএম কার্যক্রম অব্যাহত রাখা যাবে কিনা তার উপর। সেকারণে অতিদ্রুত পেরিফেরিয়াল বাঁধ সংস্কার করে টিআরএম চালু করা অত্যন্ত জরুরী। তাই স্থানীয় জনগণ এখনই পেরিফেরিয়াল বাঁধ সংস্কার পূর্বক পাখিমারা টিআরএম বিলের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি গুরুত্ব দিয়ে প্রথম পর্যায় প্রকল্পের বকেয়া ও দ্বিতীয় পর্যায় প্রকল্পের ক্ষতিপূরণের টাকা পরিশোধ পূর্বক অতিদ্রæত কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের বাস্তবায়ন মাঠ পর্যায়ে দৃশ্যমান করার দাবী জানান। এজন্য তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনসহ সকল মহলের জোরালো ভূমিকা গ্রহণের জন্য জোর দাবী জানান।
তালা উপজেলা পানি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মীর জিল্লুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আলাউদ্দীন জোয়ার্দ্দার, পানি কমিটি নেতা অচিন্ত্য সাহা, মোঃ শফিকুল ইসলাম, উত্তরণের দিলীপ কুমার সানা, মোঃ ফাওজুল কবীর প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)