অলিম্পিকের প্রথম ম্যাচেই বিতর্ক
দু’ঘণ্টা পর গোল বাতিল! মরক্কোর কাছে হেরে গেলো আর্জেন্টিনা
টানা দুটো কোপা আমেরিকা এবং একটি বিশ্বকাপ জয় করে অলিম্পিকে স্বর্ণের লড়াইয়ে নেমেছে লিওনেল মেসির দেশ আর্জেন্টিনা। এবার প্যারিস থেকে ফুটবলের সোনাটা ছিনিয়ে নিতে পারলে ইতিহাস গড়ে ফেলবে আর্জেন্টাইনরা। অলিম্পিকে মেসি-ডি মারিয়ারা নেই। তবে বিশ্বকাপজয়ী দলের চার ফুটবলার রয়েছেন। যার মধ্যে অন্যতম হুলিয়ান আলভারেজ এবং নিকোলাস ওতামেন্দি।
কিন্তু সেই অজেয় দলটিই অলিম্পিকের প্রথম ম্যাচে ২-১ গোলে হেরে গেছে মরক্কোর কাছে। যদিও আর্জেন্টিনা ও মরক্কো ম্যাচ ঘিরে তৈরি হল নানা নাটক।
শেষ মুহূর্তে দুই ঘণ্টা ধরে বন্ধ থাকল ম্যাচ। ততক্ষণ পর্যন্ত ম্যাচ ছিল ২-২ গোলে সমতা। এরপর খেলা শুরু হতেই ভিএআর দেখে আর্জেন্টিনার গোল বাতিল করে দিলো রেফারি। সে সঙ্গে ম্যাচ শেষের বাঁশি। সুতরাং, হারতেই হলো আর্জেন্টিনাকে।
সেন্ট এতিয়েনে স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে পুরোপুরি দাপট নিয়ে খেলে মরক্কোর ফুটবলাররা। যার ফলে ৬৭ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে এগিয়ে থাকলো আশরাফ হাকিমির দেশ। মরক্কোর হয়ে ৪৫+২ মিনিট এবং ৫১তম মিনিটে গোল করেন সুফিয়ানে রাহিমি। দ্বিতীয় গোলটি আসে পেনাল্টি থেকে।
সদ্য কোপা আমেরিকা জয়ী দেশটির বিরুদ্ধে তখন জয়ের স্বপ্ন দেখছিলেন মরক্কোর সমর্থকরা। ৬৮ মিনিটে একটি গোল শোধ করে দেয় আর্জেন্টিনা। গোল করেন জিউলিয়ানো সিমিওনে। এরপরও নির্ধারিত সময়ে ২-১ গোলে এগিয়ে ছিল মরক্কো।
এ সময়ই বিতর্কের সূত্রপাত। কারণ, ম্যাচে ১৫ মিনিট সংযুক্তি সময় দেওয়া হয়। দীর্ঘ সংযুক্ত সময় দেয়া দেখে সবাই বিস্মিত হয়। কারণ, পুরো ম্যাচের দৈর্ঘ্য তখন দাঁড়িয়ে যায় ১১০ মিনিট ২৯ সেকেন্ড (সূত্র: অপটা, প্রথমার্ধের সংযুক্ত সময়সহ)। পুরো ম্যাচে বল পায়ে ছিল মাত্র ৫৪ মিনিট ২৭ সেকেন্ড। দ্বিতীয়ার্ধ খেলা হয়েছে মোট ৬৫ মিনিট। এর মধ্যে বল পায়ে ছিল কেবল ২৬ মিনিট ৫ সেকেন্ড।
সংযুক্ত সময় এত বেশি দেয়ার ফলে একটাই প্রশ্ন দেখা দেয়, রেফারি কী তাহলে আর্জেন্টিনাকে বিশেষ কোনো সুযোগ দিচ্ছে সমতায় ফেরার জন্য! ধারণা সত্যি করে সংযুক্ত সময়ের শেষ দিকে এসে ক্রিশ্চিয়ান মেদিনা গোল করে বসেন। আর্জেন্টিনা সমতায় ফেরে ২-২ গোলে।
কিন্তু এরপরই বৃষ্টির মত মাঠে ছুটে আসতে থাকে বোতল আর আতশবাজি। তুমুল বোতল বৃষ্টির মধ্যে খেলা বন্ধ করে দিয়ে রেফারি দুই দলের ফুটবলারদের নিয়ে মাঠ ত্যাগ করেন। তখনই মাঠে ঢুকে পড়েন মরক্কোর সমর্থকরা। তারা ধরেই নিয়েছিলো, মরক্কো আর জয় পায়নি। আর্জেন্টিনার সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র হয়ে গেছে।
সাইটস্ক্রিণেও দেখাচ্ছিলো ম্যাচ ফুলটাইম। এরপরই সেখানে দর্শকদের উদ্দেশ্য করে বার্তা ভেসে ওঠে, ‘আপনাদের মাঠে থাকার সময় শেষ হয়ে গেছে। প্লিজ, যে যেখানে আছেন তার কাছাকাছি বের হওয়ার গেট দিয়ে স্টেডিয়াম ত্যাগ করুন।’ বার্তা দেখে ম্যাচ শেষ ধরে নিয়ে দর্শকরাও মাঠ ত্যাগ করে।
তবে তখন প্যারিস অলিম্পিকের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ম্যাচটি ‘বিঘ্নিত’ বলে লেখা ছিল। এ অবস্থায় ম্যাচ বন্ধ ছিল দু’ঘণ্টা। ততক্ষণ ২-২ গোলে সমতায় ম্যাচ। দু’ঘণ্টা পর আবার খেলা শুরু হয়; কিন্তু ভিএআর দেখে মেদিনার গোলটি বাতিল করে দেন রেফারি। ইতালির পাওলো ভ্যালেরি ভিএআর দেখে সিদ্ধান্ত দেন ব্রুনো আমিওনে ছিলেন অফসাইডে। যার ফলে দু’ঘণ্টা পর শুরু হতে না হতেই গোল বাতিল করা হয় এবং এক মিনিটের মধ্যে খেলা শেষের বাঁশি বাজিয়ে দেন রেফারি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)