আশাশুনির নওয়াপাড়া
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও নৈশ প্রহরীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের নওয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও নৈশ প্রহরীর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ২৪ নং নওয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান সরকারি চাকরি করা স্বর্তেও জামায়তে ইসলামী বাংলাদেশের রোকন হিসেবে গোপনে দায়িত্ব পালন করেন ও সংগঠনের অর্থ যোগান দাতা বলে অভিযোগ করেছেন।
এছাড়া স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ বলেন প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান সরকারি নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারি স্কুলে ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস কৌশলে পালন না করে স্কুল প্রাঙ্গন ত্যাগ করেন। প্রধান শিক্ষক নিষিদ্ধ ঘোষিত দলের নেতা হওয়ায় রাজনৈতিক মেধাকে কাজে লাগিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানটি একতন্ত্রে পরিণত করেছেন।
অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক থাকলেও বর্তমানে প্রধান শিক্ষক একে অপরের প্রতি বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি করে রেখেছেন বলে অভিযোগে প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে মোঃ মিলন হোসেন অত্র বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরীর পদে কর্মরত থাকলেও যোগদানের পর থেকে অদ্যবদি আর রাতে স্কুলে পাহারায় থাকেন না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। রাতে তিনি স্কুল পাহারা না দিলেও অভিভাবকদের নিকট থেকে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে স্কুল টাইম শেষে বিদ্যালয় ভবনে নিয়মিত প্রাইভেট পড়িয়ে থাকেন বলে জানান অভিভাবক আফতাবুজ্জামান, আব্দুল মজিদ ও শাহিন আলম।
তারা নৈশ প্রহরী মিলনের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ তুলে বলেন নৈশ প্রহরী মিলনের কাছে তাদের শিশুদের প্রাইভেট না পড়ালে প্রধান শিক্ষকের সাথে গোপন যোগসাজছে প্রাইভেট না পড়া শিক্ষার্থীদের খাতায় মার্ক কমিয়ে দেওয়া হয়। শুধু এখানেই শেষ নয় অত্র বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী হিসেবে মিলন হোসেন নিয়োজিত থাকলেও স্কুলের ক্লাসরুম ঝাড়ু দেওয়া, বাথরুম পরিষ্কার বিদ্যালয়ের কমলমতি শিক্ষার্থীদের দিয়ে করানো হয় বলে লিখিত অভিযোগে জানান স্থানীয় অভিভাবকরা।
কোমলমতি শিশুদের দিয়ে কঠোর পরিশ্রম করানোর ফলে অনেক শিক্ষার্থীই স্কুলে যেতে চায় না বলে অভিযোগ অভিভাবকরা। বাধ্য হয়ে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের মাদ্রাসা ও অন্যান্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেছেন বলে জানান অভিভাবক কামরুল ইসলাম।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান ইতিপূর্বে মহিষাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান থাকাকালীন বার্ষিক বনভোজনের সনাতন ধর্মালম্বী শিক্ষার্থীদের কৌশলে গরুর মাংস ভক্ষণ করানোর অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে।
অবস্থা বেগতিক দেখে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে জোকসাজোস রেখে কৌশলে দ্রুত বদলি হন তিনি। বর্তমানে ২৪ নং নওয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে এসে সরকারি প্রতিষ্ঠানটিকে একতন্ত্রে পরিণত করেছেন প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মিজানুর রহমান বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবত শারীরিকভাবে অসুস্থ। তবে সরকারি প্রোগ্রাম নির্দেশনা মোতাবেক পালন করে থাকি। তিনি আরো বলেন আমার বিরুদ্ধে আনীত লিখিত অভিযোগ মিথ্যা।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার বর্মন এ প্রতিবেদাকে বলেন কয়েকদিন আগে এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। তদন্ত-পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)