আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আছে বলে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুন্ন আছে – ডাঃ রুহুল হক এমপি
আশাশুনি প্রতিনিধি ঃ সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি বলেছেন, শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আছে তাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুন্ন আছে। তার নেতৃত্বে আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্বে সুপরিচিত হয়েছি। জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন তাই স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি আবারো আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে মানুষ পুড়িয়ে বাস পুড়িয়ে বাংলার আকাশ দূষিত করে বাতাসে লাশের গন্ধ ছড়িয়ে দিয়েছে। দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে তারা সন্ত্রাসী কর্মকাÐকে বেছে নিয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে আশাশুনি উপজেলার কামালকাটি (শালখালি) রাধেশ্যাম মন্দির ও নামহট্ট মন্দিরে অন্নকুট মহোৎসব উপলক্ষে ধর্মীয় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।
নরেন্দ্র নাথের সভাপতিত্বে সভায় তিনি আরও বলেন, শুধু শোভনালী ইউনিয়নে অবস্থিত এই মন্দিরের জন্য আপনাদের ধর্মীয় অনুভূতিকে সন্মান প্রদর্শন করে ইস্কন মন্দিরের নাট মন্দির নির্মাণে ১০ লক্ষ টাকা প্রদান করেছি। পূর্ণার্থীদের জন্য আধুনিক শৌচালয় নির্মাণ করতে ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সুপেয় পানির জন্য গভীর নলকূপ, বিদ্যুতায়ন, স্ট্রীট লাইট সহ সর্বপ্রকার সহযোগিতা করে চলেছি। মন্দির সংলগ্ন শোভনালী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বসুখালী বাজার পর্যন্ত ৫.৩ কি.মি. রাস্তা কার্পেটিং ও পূর্ব কামালকাটি থেকে পশ্চিম কামালকাটিগামী রাস্তা কার্পেটিং, শালখালি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কালিবাড়ী দীঘির পাড় পর্যন্ত ১০ কি.মি. রাস্তা কার্পেটিং এর কাজ চলমান রয়েছে। শালখালি বাজার থেকে বাকড়া বাজার পর্যন্ত আড়াই কি.মি. আরসিসি ঢালাই রাস্তার কাজ চলছে। এছাড়া বসুখালী বাজার ব্রীজ এবং শালখালি বাজার ব্রীজের কাজ চলমান রয়েছে।
তাছাড়া সাপমারা খাল খনন করে এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে একটা ইউনিয়নের উন্নয়নের চিত্র বলে শেষ করা যাবে না তাই উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে পুনরায় নৌকায় ভোট দিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন।
মনীন্দ্র নাথের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শম্ভুজিৎ মন্ডল, যুবলীগ নেতা তরিকুল ইসলাম তুষার, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহŸায়ক গোপাল কুমার মÐল প্রমুখ।
আশশুনিতে ধানের মৌ-মৌ গন্ধে কৃষকদের মুখে হাসি
আশাশুনি প্রতিনিধি ঃ নতুন ধানের মৌ-মৌ গন্ধে যেন মাঠের পর মাঠ সোনালী ধানের শীষ বাতাসে দোল খাচ্ছে। কেউ ধান কাটছে। আবার কেউ প্রস্তুতি নিচ্ছে। আশাশুনিতে ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষকরা বলছে, ৪০ ভাগ ধানই কাটার উপযোগী হয়েছে। আর ১ সপ্তাহের মধ্যে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়ে যাবে।
তবে সার, কিটনাশক ও শ্রমিকসহ সবকিছুর দাম বৃদ্ধি হওয়ায় ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে হতাশায় রয়েছেন কৃষকরা। এখন শ্রমিক পেলেও পুরো মৌসুমে শ্রমিক সংকট নিয়েও ভাবছেন কৃষক। এমন পরিস্থিতে কৃষি বিভাগের ভাষ্য, যান্ত্রিক নির্ভর হলে শ্রমিক সংকট থাকবে না। পাশাপাশি খরচও কমে আসবে। মঙ্গলবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, আশাশুনির উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৯ হাজার ৩০০ হেঃ জমিতে রোপা আমন চাষ করা হয়েছে। হাইব্রিড ৪০, দেশি ৪০, উপশি ৮হাজার ৪ শত ৮০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে আধাআধি ধান কাটা হয়েছে। তবে ধান কাটা নির্ভর করে সাতক্ষীরা অঞ্চলের শ্রমিকের উপর। এই শ্রমিকরা এসে ধানকাটা মাড়াই শুরু করে এতে শ্রমিকের দাম কম পড়ে।
বুধহাটা ইউনিয়নের ধান চাষী মাহবুব জানান, ৪ বিঘা জমিতে দেশি জাতের রোপা আমন ধান চাষ করেছেন। কাটা মাড়াই শুরু করেছেন, ৩ বিঘা কাটা মাড়াই সম্পন্ন হয়েছে। প্রতি বিঘায় গড়ে ১৬/১৭ মণ করে ফলন পেয়েছেন।
কুল্যা ইউনিয়নের পুরোহিতপুর গ্রামের ধান চাষী রহমত আলী বলেন, এবার পোকা মাকড় বেশি দেখা দিলেও কিটনাশক প্রয়োগ করার পর তা সেরে গেছে। আমি এবার ৩ বিঘা জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছি। তবে খরচ বাদ দিয়ে ৩ হাজার টাকা জমিতে থাকবে।
কাদাকাটি এলাকার আজিজুর রহমান জনান, আমি এবার ৬ বিঘা জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছি। তবে ধানের দাম বৃদ্ধি থাকায় প্রতি বিঘার ধান বিক্রি করা হচ্ছে ২২ হাজার থেকে ২৭ হাজার টাকা। সাবেক মেম্বার আবু হেনা বাবু জানান, তিনি ৫ বিঘা আবাদ করেছেন। ধান চাষে লাভের মুখ দেখেছেন।
দরগাহপুর থেকে আশা শ্রমিক শহিদুল ইসলাম জানান, ৪ হাজার ৮শ টাকা বিঘা চুক্তিতে জমি থেকে ধান কাটা মাড়াই করে দেওয়া পর্যন্ত চুক্তিতে দান কাটছেন র্তা। দিনে ৫ জনে ১ বিঘা করে জমির ধান কাটা মাড়াই করতে পারে তারা।
উপজেলার বিভিন্ন ধানের হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটে বিআর-২৮ নতুন ধান বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯৩০ টাকা, মিনিকেট ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকা এবং স্থানীয় কাটারী ১০২০ থেকে ১১৭০ টাকা, আতপ ৯০ (সুগন্ধী) ধান ১৯২০ টাকা মণ দরে বিক্রী হচ্ছে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মহিউদ্দিন জানান, সময়মত পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের সহযোগিতা করায় ভালো ফলন হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এস এম এনামুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দির্শেশনায় ১ ইঞ্চি জমি খালি থাকবে না। এই লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার রোপা আমন ফলন ভালো হয়েছে। মাঠে মাঠে কৃষি কর্মীরা অনেক পরিশ্রম করছেন। এ ছাড়াও চাষীরা রোপা ধানের ফলন ভালো করার জন্য উঠে-পরে লেগেছিলেন। আশানুরূপ ফলন হয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)