‘ই-ওয়ার্ল্ড মার্কেটিং সামিট ২০২০’: আগামির বাংলাদেশের জন্য নব দিগন্তের উন্মোচন


গত এক দশকে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, দরিদ্র বিমোচন ও সার্বিক অগ্রগতি বিশ্ব দরবারে এখন অন্যন্য উদাহরণ। ০৬ ও ০৭ নভেম্বর নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ও কটলার ইমপ্যাকট, ইনকরপোরেটেড যৌথভাবে আয়োজন করেছে ‘ই-ওয়ার্ল্ড মার্কেটিং সামিট ২০২০’ যা বাংলাদেশকে সম্ভাবনার এক নতুন দারপ্রান্তে পৌছে দিবে।
‘ই-ওয়ার্ল্ড মার্কেটিং সামিট ২০২০’
আগামির বাংলাদেশের জন্য নব দিগন্তের উন্মোচন
এই সামিটের আদ্যোপান্ত ও সুফল বাংলাদেশে কি কি প্রভাব ফেলবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলেন ডব্লিউএমএস বাংলাদেশ এর প্রধান উপদেষ্টা ও চিফ পেট্রোন, নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহ।
প্রশ্ন: এবারের ‘ই-ওয়ার্ল্ড মার্কেটিংসামিট ২০২০’ এ কী কী বিশেষ বিষয় থাকছে?
ড. ইউসুফ আব্দুল্লাহ:
এবারের সামিট অন্যান্য বছরের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন ও ব্যতিক্রমী। বিশ্বব্যাপী কোভিড -১৯ পরিস্থিতি বিচেনায় ‘ওয়ার্ল্ড মার্কেটিং সামিট ২০২০’ কে এবার ‘ইলেক্ট্রনিক ওয়ার্ল্ড মার্কেটিং সামিট ২০২০’ ঘোষণা করা হয়েছে। তাই এই সামিট অনুষ্ঠিত হবে অনলাইনের মাধ্যমে। ইতিহাসের পাতায় এই প্রথম এতো বড় ওয়ার্ল্ড মার্কেটিং সামিট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যেখানে একই সময়ে, একই মঞ্চে বাংলাদেশসহ ১০৪ দেশের সম্মানিত অতিথিরা যুক্ত থাকছেন। শুধু তাই নয়, যেখানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সব মিলিয়ে প্রায় ৮০ জনের বেশি অতিথি তাদের মূল্যবান বক্তব্য রাখবেন, যারা কথা বলবেন মার্কেটিং এর বিভিন্ন দিক, অর্থনীতি উন্নয়ন ও মানুষের জীবন মানের উপর এর প্রভাব, করবেন চুলচেরা বিশ্লেষণ।
এই ধরণের আন্তর্জাতিক সামিট বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী ও চাকুরিজীবীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে দিবে নতুন ধরণা। ‘ওয়ার্ল্ড মার্কেটিং সামিট ২০২০’ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কান্ট্রি প্রতিনিধি হিসেবে নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ সার্বিকভাবে সহায়তা করছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো- আন্তর্জাতিক মানের এই ধরণের সামিট বাংলাদেশ খুব কম অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেহেতু বাংলাদেশকে বিশ্বপরিমন্ডেলে মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে আরো এগিয়ে যেতে হবে সেহেতু উন্নত বিশ্বের দেশগুলো মতো তথ্য-প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে আরো বেশি সফলতা অর্জন করা যায় সেদিকগুলোও খুজে বের করা যাবে।
প্রশ্ন: এ সামিট বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ও মানুষের জীবন মান উন্নয়নে কি প্রভাব ফেলবে?
ড. ইউসুফ আব্দুল্লাহ:
মার্কেটিং এর সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে একটি দেশ, জাতি ও সমাজের পরিবর্তন করা সম্ভব। যেসব দেশ আধুনিক মার্কেটিং এর সূত্রগুলো জানে এবং সময় মতো প্রয়োগ করতে পারছে, সেই রাষ্ট্রগুলো রাতারাতি ভালো করছে গেøাবাল মার্কেটে। এমন ধরণের একটি অনুষ্ঠান আমাদের দেশের সফল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকেগুলোকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এই সামিটের অন্যতম লক্ষ্য হলো, কোটি কোটি দর্শককে একত্রিত করা ও জ্ঞানের সাগরে অবগাহন করানো। প্রফেসর ফিলিপ কটলার ও তার বিশেষজ্ঞ দল, বিশ্বের মার্কেটিং বিশারদগণ, ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্ট, বিপনন দুনিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ব্যক্তিবর্গ, সফল উদ্যোক্তা, নিউরোমার্কেটার, সামাজিক উদ্যোক্তা, ডিজিটালমার্কেটিং গুরুরা বক্তব্য প্রদানকরবেন এই সামিটে।
প্রশ্ন: মার্কেটিং এর মাধ্যমে তথ্য-প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ব্যবসায় উন্নয়ন কিভাবে সম্ভব?
ড. ইউসুফ আব্দুল্লাহ:
এই সামিটের লক্ষ্যে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিচয় করিয়ে দেয়া পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন উদ্যোক্তাদের একত্রিত করার মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন, ব্যবসার প্রসার, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ উন্নতি সাধনকরা। এছাড়া, বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্জিত সফলতাকে আরো বেগবান করতে হলে মার্কেটিং ও সোশ্যাল মার্কেটিং ব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের উন্নয়নে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা দরকার। বিশেষ করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাতে চাইলে মার্কেটিং এর সবগুলো বিষয়কে কাজে লাগানো উচিত।
যেহেতু বাংলাদেশ সরকারের মূল লক্ষ্য সমাজ ও দেশের উন্নয়ন সেহেতু মার্কেটিং ও সোশ্যাল মার্কেটিং ব্যবস্থায় পাবলিক সেক্টর, প্রাইভেট সেক্টর ও এনজিও একসঙ্গে কাজ করতে হবে। উন্নত দেশগুলোর অর্জন ও সাফল্য আমাদেও বাস্তবিক কর্মে রূপান্ত্রিত করার লক্ষ্যে ‘ওয়ার্ল্ড মার্কেটিং সামিট ২০২০’ এর মতো আরো বড় বড় প্রোগ্রাম হাতে নিতে হবে। তবেই কেবল উন্নত রাষ্ট্রের মতো ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল পাবে বাংলাদেশ।
প্রশ্ন: আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অবস্থানও সুনাম রক্ষায় কি ভূমিকা পালন করবে এই সামিট?
ড. ইউসুফ আব্দুল্লাহ:
আধুনিক মার্কেটিং এর নতুন নতুন দিকগুলো উন্মোচিত হবে এই সামিটে। উন্নত বিশ্বের দেশগুলো কোন কোন পদ্ধতি অবলম্বন করে দ্রæত সফল হচ্ছে বা হয়েছে, বিশ্ব বাজারে বছরের পর বছর টিকে আছে, সেই সব অজানা কথা ও নতুন কৌশল নিয়ে আলোচনা হবে সম্মেলনে। এক কথায় বলা যায়- আর্ন্তজাতিক অঙ্গনের সঙ্গে বাংলাদেশের উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী ও পেশারজীবীদের মধ্যে একটা সেতুবন্ধ তৈরি হবে যা আমাদের দেশ ও জাতির উন্নয়নে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
প্রশ্ন: চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে গ্রহণের ক্ষেত্রে এই সামিট বাংলাদেশ কিভাবে সাহায্য করবে ?
ড. ইউসুফ আব্দুল্লাহ:
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে পথে এগিয়ে যেতে হলে বাংলাদেশকে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ও মানব সম্পদের দক্ষতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে রোবটিকস, ক্লাউড টেকনোলজি, বøকচেইন, থ্রিডিপ্রিন্টিং, ন্যানোটেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি এবং বিগ ডাটার মতো বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্ব পাবে। এ সময় এক দিকে কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত হবে, অন্যদিকে তথ্য প্রযুক্তি নির্ভও নতুন নতুন ক্ষেত্র উন্মোচিত হবে। এই সুযোগকে শতভাগ কাজে লাগাতে হবে আমাদের। এ শিল্প বিপ্লবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি, নতুন কর্মদক্ষতা উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের প্রকৃতি জড়িত। নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মেলানোর জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন এবং শিল্প-ব্যবসা ও শিক্ষার সমন্বয় আরও বাড়াতে হবে। ‘ওয়ার্ল্ড মার্কেটিং সামিট ২০২০’ আমাদের দেশের অর্থনীতি, উন্নতি ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
