মঙ্গলবার, জানুয়ারি ২৮, ২০২৫

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

কলারোয়ার অপরূপ পুরাকীর্তি শ্যামসুন্দর মঠ-মন্দির, সংরক্ষণে নেই কার্যকরী উদ্যোগ

শেখ জিল্লু : প্রকৃতির সাথে পুরাকীর্তি যাদের সমানভাবে আকর্ষণ করে তাদের আসতে হবে সাতক্ষীরার কলারোয়ার সীমান্ত জনপদ সোনাবাড়িয়ায়। মধ্যযুগীয় নানা পুরাকীর্তির নিদর্শন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে গোটা সোনাবাড়িয়াজুড়ে। এমনই এক পুরাকীর্তির নাম মঠবাড়ি মন্দির গুচ্ছ। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সংরক্ষণ করা গেলে এটি হতে পারে অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্র। কলারোয়া উপজেলা সদর থেকে ৯.৬ কিলোমিটার দূরে সোনাবাড়িয়া গ্রামে ঐতিহাসিক এই প্রতœস্থলটির অবস্থান। ২৫৭ বছরের পুরানো ৬০ ফুট উঁচু টেরাকোটা ফলক খচিত পিরামিড আকৃতির এই মঠ-মন্দির প্রাচীন স্থাপত্যের অপরূপ নিদর্শন হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে। জরাজীর্ণ ও ভগ্নপ্রায় এই ঐতিহাসিক মঠ-মন্দিরটি এখনই সংস্কার ও সংরক্ষণ করা না গেলে একটি ঐতিহাসিক প্রতœতাত্তি¡ক নিদর্শন বিনষ্ট হয়ে যাবে, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। ২০১৪ সালের ২৬ অক্টোবর এই মঠ-মন্দির সরেজমিনে পরিদর্শন করেন ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার স›দ্বীপ চক্রবর্তী। ১০ বছর আগের ওই পরিদর্শনকালে ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনারসহ অতিথিবৃন্দ ঐতিহাসিক এই স্থাপনা সংস্কার ও সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।

এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে প্রতœতত্ত¡ বিভাগ, খুলনা জাদুঘর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের টিমসহ বিভিন্ন দপ্তর থেকে এটি পরিদর্শন করা হয়েছে। কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ এখনো সেভাবে নেওয়া হয়নি বলে জানা যায়। প্রতœতত্ত¡ অধিদপ্তরের সাবেক উপ-পরিচালক মোঃ মোশারফ হোসেনের লেখা ‘প্রতœতাত্তি¡ক জরিপ প্রতিবেদন বৃহত্তর খুলনা’ এ বইটিতে উল্লেখ করা হয়েছে এ মন্দিরটি ১৭৬৭ খ্রিস্টাব্দে জনৈক হরিরাম দাশ (মতান্তরে দুর্গাপ্রিয় দাশ) নির্মাণ করেছিলেন। যেটি সতীশ চন্দ্র মিত্রের বইয়েও উল্লেখ রয়েছে। এই পুরাকীর্তির সবচেয়ে বড় এর ত্রিতলবিশিষ্ট নবরত্ন মন্দির। এটিই ‘শ্যামসুন্দর মন্দির’ নামে পরিচিত। এর সাথে লাগোয়া রয়েছে দুর্গামন্দির ও শিবমন্দির। এই মন্দিরগুচ্ছের দক্ষিণে একটি অসম বাহুবিশিষ্ট চৌকো দিঘি আছে। দেখতে মন্দিরটি একটি পিরামিড আকৃতি ধারণ করেছে। দক্ষিণমুখী এই মন্দিরের নিচের তলার ভিতরের অংশে চারটি ভাগ রয়েছে। প্রথম ভাগের চারপাশে রয়েছে ঘূর্ণায়মান টানা অলিন্দ। দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে একটি মন্ডপ। তৃতীয় ভাগের পশ্চিম পাশের কোঠা এবং মাঝের কোঠাটির উত্তরে একটি করে প্রকোষ্ঠ রয়েছে। কিন্তু পূর্বাংশের কোঠাটির পিছনে রয়েছে একটি অলিন্দ, যেখানে দ্বিতল ভবনে ওঠার সিঁড়ি রয়েছে। ধারণা করা যায়, পূর্ব ও পশ্চিম কোঠা দুটিতে সংরক্ষিত মূর্তির উদ্দেশ্যে মন্দিরটি নিবেদিত ছিল।

দ্বিতলে রয়েছে একটি দক্ষিণমুখী কোঠা। ত্রিতল ভবনটি তুলনামূলক ছোট। এর দক্ষিণ দিকের মধ্যের খিলানটির ওপর একটি পোড়ামাটির ফলক রয়েছে। মোশারফ হোসেনের ওই জরিপ বইয়ে আরো বলা হয়েছে, শ্যামসুন্দর মঠের নিচে রয়েছেএকটি উঁচু নিরেট মঞ্চ। এর প্রত্যেক তলার ছাদপ্রান্ত ধনুকের মত বাঁকা। কোণগুলো কৌণিক। এগুলোর ছাদের ওপর ক্রমান্বয়ে ধাপে ধাপে ঊর্ধ্বমুখী গম্বুজ রয়েছে। আর মাঝখানে তুলনামূলক বড় একটি ররত্ন রয়েছে। এটি তাই ‘নবরত্ন স্মৃতি মন্দির’। নবরত্ন বা শ্যামসুন্দর মঠের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে আরও একটি দক্ষিণমুখী মন্দির আছে। এটি ‘দুর্গা মন্দির’ নামে পরিচিত। শ্যামসুন্দর মন্দিরের গা ঘেঁষে পূর্বমুখী মন্দিরটিতে ৩ ফুট উঁচু একটি কালো পাথরের শিবলিঙ্গ আছে। এর ওপর একটি ভাষ্য ফলক পাঠোদ্ধার অনুপযোগী অবস্থায় সংস্থাপিত আছে। এর ছাদ চৌচালা, কার্ণিশ ধনুকাকারে বাঁকা এবং কোণগুলো কৌণিক। এটি ‘অন্নপূর্ণা মন্দির’ নামে পরিচিত। এগুলো গাঁথা হয়েছে চুন ও সুরকি মিশ্রিত মসলা দিয়ে।

বর্তমানে এ মন্দিরগুচ্ছ পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এই মঠের পাশে আরও ৮ টি (মতান্তরে ১০টি) মন্দির ছিল। অনেকের মতে, রামহংস পরমানন্দ এক সময় মন্দিরগুলো পরিদর্শনে এসেছিলেন। জানা যায়, মঠ মন্দিরগুচ্ছের অল্প দক্ষিণে ‘জমির বিশ্বাসের পুকুর’ নামে যে জলাশয়টি আছে সেটির পাকাঘাটে ব্যবহৃত ইটের সাথে ‘অন্নপূর্ণা মন্দির’ এর ইটের মিল পাওয়া যায়। তাতে ধারণা করা হয়, পুকুরটি একই সময়কালের নিদর্শন। বর্তমানে এই ঐতিহাসিক পুকুরটি বিষমবাহুর আকার ধারণ করেছে। বিশিষ্ট লেখক প্রফেসর আবু নসরের লেখা ‘কলারোয়া উপজেলার ইতিহাস’ বইতেও এই প্রাচীন মঠটি সম্পর্কে অনুরূপ তথ্য-উপাত্ত উল্লেখিত রয়েছে। এলাকার মানুষ জানান, প্রত্মতত্ত¡ বিভাগ মন্দিরগুচ্ছের সংরক্ষণের দায়িত্ব নিক-এটাই তারা চান। সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন এ বিষয়ে আলাপকালে বলেন, তিনি একাধিকবার সোনাবাড়িয়ার এই ঐতিহাসিক প্রত্মতাত্তি¡ক নিদর্শন পরিদর্শন করেছেন। এটি রক্ষার্থে সংস্কার ও সংরক্ষণ করা অতি প্রয়োজন। এরজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা তিনি নিবেন বলে জানান।

সোনাবাড়িয়া সম্মিলিত হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আখতার আসাদুজ্জামান বলেন, এই পুরাকীর্তি সংরক্ষণ করা হলে এটি সকলেরই নজর কাড়বে। শিক্ষার্থীদেরও আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে এটি পরিণত হবে। সোনাবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান বেনজির হোসেন হেলাল, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধেশ্বর চক্রবতীসহ এলাকার অনেকের মতে, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে ঐতিহাসিক এই স্থাপনা সংস্কার ও সংরক্ষণ করা গেলে এটি হতে পারে সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ পুরাকীর্তিপ্রেমী মানুষের কাছে দর্শনীয় স্থান ও আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র।

একই রকম সংবাদ সমূহ

কলারোয়ার গদখালি যুব উন্নয়ন সংঘের কমিটি গঠন।। সভাপতি রবি, সেক্রেটারি জাকির

কলারোয়ার গদখালি যুব উন্নয়ন সংঘের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ICT কোচিং সেন্টারবিস্তারিত পড়ুন

কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন করেছেন শহীদ জিয়া : সাবেক এমপি হাবিব

কলারোয়া প্রতিনিধি: বিএনপির প্রকাশনা সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিববিস্তারিত পড়ুন

কলারোয়ার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিমল কুমার দাসের পরলোকগমন

শেখ মাহমুদুল হাসান কলারোয়া (সাতক্ষীরা): কলারোয়া পৌরসভার মুরারীকাটি গ্রামের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দাবিস্তারিত পড়ুন

  • কলারোয়া বেত্রবতী হাইস্কুলে পিঠা উৎসব
  • কলারোয়ায় শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন
  • বিএনপি মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চায় : সাবেক এমপি হাবিব
  • কলারোয়ার চন্দনপুর ইউনিয়ন কৃষকদলের কমিটি গঠন
  • কলারোয়ায় তারুণ্যের উৎসবে বিদ্যালয়ে পিঠা উৎসব
  • কলারোয়া পাইলট হাইস্কুলে জমজমাট পিঠা উৎসব, মুখরিত পিঠাপুলির ঘ্রাণে
  • কলারোয়ায় প্রতিপক্ষ ভেবে কিশোরকে বাঁশের আঘাতে জখম
  • কলারোয়া পাবলিক ইন্সটিটিউটে ৪টি নতুন পদ কো-অপ্ট, বার্ষিক বনভোজন ৮ ফেব্রুয়ারি
  • কলারোয়ায় আশরাফ আলীর মৃত্যুতে বড়ালি ও বুঝতলার ৪ মসজিদে দোয়ানুষ্ঠান
  • কলারোয়ায় দুস্থদের হাতে কম্বল তুলে দিলেন সাবেক এমপি হাবিব
  • কলারোয়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের মতবিনিময় সভা
  • কলারোয়ায় ৪৬তম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলার সমাপনী