কলারোয়ার ছলিমপুর কলেজে গাছ বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগে তদন্ত
কলারোয়া উপজেলার ছলিমপুর হাজী নাছির উদ্দীন কলেজ ক্যাম্পাসের গাছ বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে এলাকার কয়েকজন নাগরিক বাদী হয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, কলারোয়া উপজেলা নিবার্হী অফিসার, শিক্ষা অফিসার ও বন বিভাগের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগের আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- হাজী নাছির উদ্দীন কলেজ চত্বরে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির গাছ যার বাজার মূল্য তিন থেকে চার লক্ষ টাকা। কিন্তু অত্র কলেজ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনৈতিকভাবে গাছ কর্তন ও সরকারি পরিপত্র উপেক্ষা করে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে টেন্ডার ব্যতীত বিক্রয় করেছেন। সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির মোট ১৪টি গাছ কর্তন করা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য তিন থেকে চার লক্ষ টাকা হলেও মাত্র ৬০ হাজার টাকায় পাঁচটি শিশুগাছ, দুইটি শীল কড়ায়, তিনটি লম্বু গাছ, তিনটি আম গাছ ও একটি বাবলা গাছ বিক্রয় করেছেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা তথ্য ও প্রযুক্তি দপ্তরের সহকারী প্রোগ্রামার মোতাহার হোসেনকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
তিনি জানান, ‘অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে।’
স্থানীয় রায়টা গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে গাছ-কাট ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক এই গাছ গুলি কিনেছেন বলে জানা গেছে।
তবে গাছ ক্রেতা আব্দুল খালেক জানান- আমি যখন গাছ কিনেছি তখন ওই কলেজের ম্যানেজিং কমিটির লোকজনসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় চেয়ারম্যান মাহাবুবর রহমান মফে ক্রয় কমিটির সভাপতি হিসাবেও উপস্থিত ছিলেন।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম বলেন- ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পান পরবর্তী গাছগুলি আমার কলেজের ক্যাম্পাসের বিল্ডিং এর উপরে বিক্ষিপ্তভাবে পড়েছিলো। তাই আমি তড়িঘড়ি করে এই গাছগুলি একজন ব্যবসায়ী দিয়ে কেটে অপসারণ করে ফেলি।’
নিলাম ব্যাতিত গাছ বিক্রির কথা স্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আরো বলেন- ‘প্রতিষ্ঠানের গাছ বিক্রির নিয়ম আমার সঠিক জানা নেই বলে আমি শুধুমাত্র কলেজ গভর্নিং বডির অনুমতি নিয়ে একটি ক্রয় কমিটি তৈরী করে তাদের উপস্থিতিতে এই গাছ বিক্রি করেছিলাম। পরবর্তীতে আমি ভুল বুঝতে পেরে উপজেলা তদন্তকারী কর্মকর্তা বরাবর নিয়ম নীতি জানা না থাকার কারণে সরকারি ট্যাক্স দেওয়া হয়নি। কিন্তু সেটা দেয়া প্রক্রিয়াধীন আছে।’
তিনি তদন্ত কর্মকর্তার নিকট লিখিত পত্রে জানান- ‘আমার এ অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির কারণে বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য আপনার সুদৃষ্টি কামনা করছি।’
ভবিষ্যতে আর কখনই এমনটি হবে না বলে অত্র চিঠিতে উল্লেখ করেছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল আলিম।
তিনি আরো বলেন- ‘অভিযোগে ১৪টি গাছের কথা উল্লেখ থাকলেও তা সত্য নয়। প্রকৃত পক্ষে ঘুর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত ও উপড়ে যাওয়া গাছের সংখ্যা ছিলো ১০টি। তিন দিন মাইকিং করা হয়েছিলো। ১০জন গাছ দরদাতার সাথে কথা বলে তাদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে অত্র কলেজের গভর্ণিং বডির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্রয় কমিটি ৬০ হাজার টাকায় তা বিক্রি করেন। সেই টাকা গুলো স্থানীয় খোরদো কৃষি ব্যাংকের কলেজ ফান্ডের একাউন্টে জমা আছে।’
এদিকে, গাছ বিক্রয়ের বিষয়ে দেয়াড়ার ২নং ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ তদন্তকারী কর্মকর্তা বরাবর তার আগের দেয়া অভিযোগ প্রত্যাহার করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী জেরিন কান্তা বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি তদন্ত পর্যায়ে আছে।’
ছবিতে..
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)