কলারোয়া থেকে অপহরণের ১ মাস ১৪ দিন পর মহাখালী থেকে উদ্ধার সেতু
সাতক্ষীরার কলারোয়া থেকে অপহরণের ১ মাস ১৪ দিন পর পুলিশের সহযোগিতায় ঢাকা মহাখালী থেকে ফাহমিদা আক্তার সেতু (২১) নামের এক নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান মোছাঃ রাবেয়া খাতুন।
তিনি জানান ফাহমিদা আক্তার সেতু তার মেয়ে।
সেতুর পিতার নাম মোঃ মাজহারুল ইসলাম। তাঁরা সাতক্ষীরা থানার বৈকারি ইউনিয়ন খলিল নগরের বাসিন্দা। দুই বছর আগে পরিবারিক ভাবে সেতুর বিয়ে দেন কলারোয়া উপজেলার বামন আলী গ্রামের ছিদ্দিক হোসেনের পুত্র মোঃ সেলিম হোসেন সাথে। ভালোই চলছিলো তাদের সাংসারিক জীবন।গত ১০ মে ২০২২ ইং তারিখে সেতু বাবার বাড়ি বৈকারি খলিল নগর থেকে কলারোয়া বামন আলী গ্রামের উদ্দেশ্যে একা বের হয়। সেতু কলারোয়া পৌঁছালে হঠাৎ করে কার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে সেতুর শ্বশুরবাড়িতে যোগাযোগ করলে তারা বলেন সেতু সে খানে পৌঁছায়নি । চারিদিকে খোঁজ খবর করার পরেও সেতুর কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে তারা কলারোয়া থানা তে একটি নিখোঁজ অভিযোগ করেন সেতুর পরিবার।সেতুর খোঁজাখুঁজি অব্যাহত থাকে। হঠাৎ ১ মাস ১৪ দিন পর গত ২৪/৬/২০২২ তারিখে আনুমানিক রাত ১০:৩০ ঘটিকায় ০১৭৮৭৪২২০৭৮ নম্বর থেকে একটা কল আসে সেতুর বোন জামাই উজ্জ্বল হোসেনের মোবাইল ফোনে। তার নাম আল আমিন। তিনি এক জন পল্লী বিদ্যুত কর্মকর্তা।সেতুর বোন জামাই উজ্জ্বল হোসেন কে জানান সেতু এখন আহত অবস্থায় তার কাছে আছে। আমি ব্যাচেলর মানুষ এখানে তাকে রাখতে পারব না। আপনারা দ্রুত সেতুকে এখান থেকে নিয়ে যান। উজ্জল হোসেন বলেন আমরা সাতক্ষীরাতে থাকি এখান থেকে অনেকটা পথ।এর আশেপাশে আমাদের তেমন কোন আত্মীয় নেই যে আপনার ওখানে যেতে পারে। আমরা কাল সকালে রওনা দিচ্ছি দুপুরের ভিতরে পৌঁছে যাব।আপনি অনুরোধক্রমে সেতু কে নিকটস্থ একটি থানাতে দেন আমরা সেখানে আসবো।
উজ্জলের কথামতো পল্লীবিদ্যুৎ কর্মকর্তা আলামীন তাকে জয়দেবপুর হোতাপাড়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। উজ্জল হোসেন আরো বলেন তাদের আগের করা নিখোঁজ অভিযোগটি কলারোয়া থানার এস আই এনামুলের কাছে ছিলো। সেই সুবাদে তিনি এস এই এনামুল কে ফোন সব খুলে বলেন এসআই এনামুল জয়দেবপুর হোতাপাড়া থানায় কথা বলেন এবং তাদেরকে সেখানে যেতে বলে। তাঁরা সময় নষ্ট না করে পরদিন মা রাবেয়া খাতুন ও বোনজামাই উজ্জল হোসেন জয়দেবপুর হোতাপাড়া থানা থেকে গিয়ে সেতু কে নিয়ে কলারোয়া থানায় আসেন। তাঁর সেতু শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখে তাকে দ্রুত কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। সেতুর সমস্ত শরীরে কাঁটা দাগ, কামড়ানো দাগ, ফোলা রক্ত জমাট বাঁধা আঘাতের দাগ স্পষ্ট। এবং সে এখনো কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে।
এ বিষয়ে সেতু বলেন সে শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার সময় তার সম্পর্কের মামাতো ভাই ফিরোজ তাকে নানান ধরনের কথাবার্তা বলে ভয়-ভীতি দেখিয়ে সেখান থেকে নিয়ে চলে যায় এমনকি বলে তার ছোট ভাইকে মেরে ফেলা হবে যদি সে তার সাথে না যায়। সেতু কে নিয়ে একটি জায়গাতে দীর্ঘদিন আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালায় এবং তাকে বারবার বিয়ে করার জন্য জোর করতে থাকে। বিয়েতে রাজি না হওয়ায় তার কাছে থাকা সমস্ত গহনা টাকা পয়সা কেড়ে নেওয়া হয়। গত ২৪ /০৬/২০২২ ইং তারিখে সেতু কে নিয়ে সে একটি জঙ্গলের দিকে চলে যায়। তাকে এলোপাতাড়ি ভাবে মারতে থাকে এক পর্যায়ে তারা গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলার চেষ্টা করে ফিরোজ।সে ফিরোজের হাতে কামড় দিয়ে সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে রাস্তার উপরে চলে আসে সে রাস্তার উপরেই আল-আমিন নামে একজন বিদ্যুৎ কর্মকর্তার সাথে দেখা হয় এবং সেতু তাকে সবকিছু খুলে বলে। আলামিন তাৎক্ষণিক তার বোন জামাইয়ের কাছে ফোন করে। এবং তার পরিবারের কথা মতো তাকে জয়দেবপুর হোতাপাড়া থানাতে রেখে আসে। পরে তার মা ও বোন জামাই গিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে কলারোয়াতে আসে।সে ফিরোজের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে। কোন ধরনের থানাতে অভিযোগ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সেতুর বোনজামাই উজ্জ্বল বলেন মামলা প্রক্রিয়াধীন। এবিষয়ে বিবাদী সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)