কলারোয়ায় আগ্রহ বেড়েছে বর্ষাকালীন টমেটো চাষে


শীতকালের পর বর্ষাকালীন মৌসুমেও সফলতা পাওয়ায় আগাম বর্ষাকালীন টমেটো চাষে আগ্রহ বেড়েছে সাতক্ষীরার কলারোয়ার বিভিন্ন এলাকার চাষীদের।
উপজেলার বাঁটরা, ধানদিয়া, ক্ষেত্রপাড়া সহ অন্যান্য অঞ্চলের চাষীরা ঝুঁকছেন এই বর্ষাকালীন টমেটো চাষে।
কৃষকদের মধ্যে টমেটো চাষের আগ্রহ বাড়ার অন্যতম কারণ হলো অসময়ের টমেটোর দাম ভালো পাওয়া যায়। ফলে তাদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে।
উপজেলার বাঁটরা গ্রামে গত বছরের তুলনায় এবার দ্বিগুন হারে বেড়েছে টমেটো চাষীর সংখ্যা ও বর্ষাকালীন টমোটো ক্ষেত। তবে অন্যান্য চাষের তুলনায় টমেটো চাষে দ্বিগুন লাভ হলেও ব্যয়ও কম নয়। তবুও পিছুপা হচ্ছেন না কৃষকেরা এই টমেটো চাষে।
চাষীরা জানান, ‘বছরের এই সময়টা এলেই শুরু হয়ে যায় আগাম বর্ষাকালীন টমেটো চাষের প্রক্রিয়া। বাঁশ খুঁটি পলিথিন দিয়ে টমেটো গাছের ছাউনি তৈরীর কাজ করা হয়।’
এমনি মনোমুগ্ধকর দৃশ্য চোখে পড়েছে উপজেলার বাঁটরা, ধানদিয়া, খোর্দ্দবাঁটরার মাঠজুড়ে।
দেখা গেছে, ছাউনি তৈরীর কাজ প্রায় শেষ। চারা রোপনের জন্য তৈরী করা হচ্ছে রোপনের স্থান। কোন কোন জমিতে টমেটোর চারা রোপন করা হচ্ছে বা করা হয়েছে।
বাঁটরা গ্রামের চাষীদের এ সাফল্যে অন্যরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন বর্ষাকালীন টমেটো চাষে।
ধানদিয়া গ্রামের টমেটো চাষী সালাউদ্দীন বলেন, ‘তিনি ৩৩ শতক জমিতে বর্ষা মৌসুমের টমেটো বারি-৮ জাত আবাদ করেছেন। তার জমিতে টমেটোর চারা গাছ রোপনের প্রক্রিয়া চলছে।’
তিনি আরো জানান, ‘বর্ষা মৌসুমের টমেটো চাষের ব্যয় অত্যন্ত বেশি হওয়ায় হিমসিম খেতে হচ্ছে। বিঘা প্রতি টমেটো চাষে খরচ পড়ে দেড় থেকে ২ লক্ষ টাকা।’
একই এলাকার আকবর আলী জানান, ‘তিনি ৩৩ শতক জমিতে বারি-৮ জাতের টমেটো চাষ করেছেন।’
ধানদিয়ার এরশাদ আলী জানান, ‘তিনিও ৩৩ শতক জমিতে বারি-৮ জাতের টমেটোর আবাদ করেছেন।’
টমেটো চাষে বড় সমস্যা কী জানতে চাইলে আরেক চাষী আব্দুল আলীম জানান, ‘টমেটো গাছের গোড়া পঁচা রোগ ও প্রচণ্ড রোদে তুলশি পড়ে গাছ মারা যেতে পারে।’
তিনি আরো জানান, ‘সরকারি ভাবে আর্থিক সাহায্য পেলে চাষের পরিমান বাড়াবে।’
তবে অভিযোগের সুরে আব্দুল আলীমসহ কয়েকজন চাষী জানান, ‘এই সময়ের টমেটো চাষের বিষয়ে কৃষি অফিস থেকে তারা তেমন পরামর্শ পাননি এবং ইউনিয়ন ব্লক সুপারভাইজার মাঠে আসেন না। কৃষকদের পরামর্শও পাই না তার কাছ থেকে।’
কৃষক পর্যায়ে কলারোয়ার বিভিন্ন এলাকার টমেটো চাষীদের দাবি- সরকারি ভাবে আর্থিক সাহায্য পেলে তারা সঠিক সময়ে আবাদ করতে পারবেন। এতে টমেটো চাষের পরিমান বাড়বে।
অনেক চাষীরা বিভিন্ন এনজিও সংস্থা থেকে চড়া সুদে ঝণ নিয়ে টমেটো চাষ করছেন বলে সরকারি ভর্তুকি বা কৃষি ঋণের দাবিও করছেন।
উপজেলার কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম জানান, ‘কলারোয়ার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের মধ্যে বর্ষা মৌসুমের টমেটো চাষের আগ্রহ বেড়েছে অনেক গুন। এলাকার মাটি টমেটো চাষের উপযোগী ও লাভজনক হওয়ায় কৃষকদের টমেটো চাষে উদ্বুদ্ধ করণের কাজ প্রতিনিয়ত করছে কৃষি অফিস। চলতি মৌসুমে কলারোয়ায় ৫০ হেক্টর জমিতে বারি-৪ ও বারি-৮ জাতের টমেটোর আবাদ হচ্ছে। এবছর লক্ষমাত্রা ছাড়িয়েছে টমেটো চাষের।’
তিনি আরো বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমের জন্য উদ্ভাবিত বারি-৪ ও বারি-৮ জাতের টমেটো চাষ করতে পরামর্শ দিয়েছেন তারা। সাদা পলিথিনের ছাউনি দিয়ে বর্ষা মৌসুমে টমেটো চাষ খুবই সহজ।’
টমেটো চাষিদের প্রয়োজনীয় সকল ধরণের সহযোগিতা দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘সরকারি ভাবে প্রান্তিক টমেটো চাষীদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগীতা করছে কৃষি অফিস।’
এ বিষয়ে একটি ভিডিও প্রতিবেদন দেখতে এখানে ক্লিক করুন

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
