কলারোয়ায় আলু, পেঁয়াজ ও রসুন বীজের তীব্র সংকট


সাতক্ষীরার কলারোয়ায় আলু, পেয়াজের ও রসুন বীজের তীব্র সংকট দেখা দেওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা। এ বছর এসব ফসলের ব্যাপক দাম চড়া বেশি, তাই কৃষক চাষে করতে বেশি আগ্রহী। কিন্তু আলু ও পেয়াজ চাষের মৌসুমে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েও হতাশ উপজেলার কৃষকরা।
কারণ উপজেলা দেখা দিয়েছে বীজ আলু, পেয়াজ ও রসুনের চরম সংকট। চড়া দাম দিয়েও মিলছে না বীজ আলু। এ বছর এসব ফসলের বীজের চাহিদার কারণেই বেশি দামে বীজ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। তাই খাবার আলুর মত বীজ আলু বিক্রি হচ্ছে গতবারের তুলনায় বেশি দামে। তাছাড়া উপজেলার কিছুু অসাধু বীজ ডিলার ও বীজ ব্যবসায়ী সিন্ডেকেট করে বীজ সংকেট করে বেশি মূল্যে বীজ বিক্রয় করছে।
এ অবস্থায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে যে বীজ কিনতে যদি এত বেশি খরচা হয় তাহলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। উপজেলা অধিকাংশ আলু, পেয়াজ ও রুসন চাষীরা শঙ্কায় পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে কলারোয়ায় এবার আলুর, পেয়াজের ও রসুনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০০০ হাজার হেক্টর।
ধান কাটার পর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উপজেলা এবার ব্যাপকভাবে আগাম আলু ও পেয়াজ চাষের প্রস্তুতি শুরু করেছেন কৃষকরা। কিন্তু শুরুতে বীজ সংগ্রহে চরম সংকটে পড়েছেন তারা। উপজেলার বিভিন্ন বাজারের বীজ ব্যবসায়ীরা সিন্ডেকেট করে বীজ সংকটসহ বীজের দাম চড়া করেছে।ফলে কৃষকরা প্রতি কেজি কাটিলাল আলুর বীজ কিনছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, প্রতি জুপি সাদা আলুর বীজ ৫৫ টাকা থেকে ৫৫ টাকা দরে, প্রতি কেজি ভাতি পেয়াজের বীজ ৫ হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা ও প্রতি কেজি বীজ রসুন ১০০ টাকা দরে বিক্রয় করছে। বর্তমানে বাজারে সরবরাহ করা ৪০ কেজির প্রতি বস্তা কাটিলাল ও ডায়মন্ড জাতের আলু বীজ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হচ্ছে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকায়।এ ছাড়া পেয়াজের বীজের অগ্রীম টাকা দিয়েও বীজ পাচ্ছেন না কৃষকরা।তাই বাধ্য হয়ে কৃষকরা বিকল্প পথ বেঁছে নিয়ে কাট পেয়াজ চাষ শুরু করেছে। তবে তারও চড়া দাম, প্রতি কেজি কাট পেয়াজ দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা।কৃষকের ধারানা চাহিদা হওয়ার কারণে বাজারে সংকটের অজুহাতে ইচ্ছেমত দাম নিচ্ছেন বীজ ব্যবসায়ীরা।
উপজেলার পৌর সদরের বি,ডি,সি ডিলার মেসার্স মুকুল বীজ ভান্ডার ও মেসার্স সততা বীজ ভান্ডার, মৌসুমী বীজভান্ডার মালিকদের ও এস এম মি কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলায় যে পরিমান বীজের চাহিদা আছে তার ২০% সরকারী বীজ সরবরাহ হয়েছে। বৃষ্টি কম হওয়ায় এবার আগাম আলু পেয়াজ ও রসুন চাষে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে কৃষকরা। ফলে গত মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই বীজের চাহিদা দেখা দিলে এ মাসে বাজারে প্রচুর বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফ অভিযোগ করে জানান, কোম্পানির নির্ধারিত মূল্যে ভাতিপেয়াজের বীজ ব্যবসায়ীর কাছে অগ্রীম টাকা দিয়েও তিনি ভাতি পেয়াজের বীজ সংগ্রহ করতে পারেননি। পরে বেশি দামে তাকে বীজ কিনতে হয়েছে।
কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আঃ মামুন জানান ডিলাররা প্রতি বছর তিনি কৃষকদের কাছে বিপুল পরিমাণ বীজ বিক্রি করেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। কিন্তু আমাদের জেলায় চাহিদা মেটাতে বাহিরের জেলাগুলো থেকে বেশি দাম বীজ সংগ্রহ করে কৃষকদের চাহিদা মেটাচ্ছেন। গত শনিবার থেকে বাজারে কিছু বিএডিসি আলু বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। ভালো মানের কারণে বিএডিসির আলু বীজের যে পরিমাণ চাহিদা, মজুদ না থাকায় তা সরবরাহ করা যায় না। তবে আগামীতে বরাদ্দ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম জানান, যে বরাবরই এই উপজেলায় আলু ,পেয়াজ ও রসুনের আবাদ কম হয়। সে হিসাব অনুযায়ী প্রতিবছর বীজের সম্ভাব্য চাহিদা নির্ধারণ করা হয় কিন্তু হঠাৎ এ সব ফসলের দাম বৃদ্ধি পওয়া বীজের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু বাজারে সেই পরিমান বীজের সরবরাহ নেই। এজন্য বীজের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আগামীতে বীজের বরাদ্দ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
