কলারোয়ায় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বাদী মহিতুল ইসলামের ৪র্থ মৃত্যু বার্ষিকীতে দোয়ানুষ্ঠান


জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার বাদী এএফএম মহিতুল ইসলামের ৪র্থ মৃত্যু বার্ষিকী কলারোয়ায় পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) প্রয়াতের বোনের বাড়ি কলারোয়া পৌর সদরের ঝিকরা জামে মসজিদে এ উপলক্ষে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন তার ভাগ্নেরা।
এশার নামাজের পর আয়োজিত দোয়ানুষ্ঠানপূর্ব আলোচনায় এএফএম মহিতুল ইসলামের
কর্মময় জীবদ্দশার নানান বিষয়ে বক্তব্য রাখেন বক্তারা।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রয়াতের ভাগ্নে সাবেক পৌর কমিশনার মাগফুর রহমান রাজু, শ্রমিকলীগ নেতা মজনুর রহমান, মাহফুজুর রহমান সাবু, তাওফিকুর রহমান সনজু, মুসল্লি হাফেজ আব্দুল আলিম, আমীর হোসেন, আনারুল ইসলাম, রেজাউল ইসলাম, আকিব, সৈকত প্রমুখ।
বঙ্গবন্ধু ও মহিতুল ইসলামের মাগফিরাত কামনায় দোয়া পরিচালনা করেন মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাহবুবুর রহমান।
উল্লেখ্য, এএফএম মহিতুল ইসলাম রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৬ সালের ২৫ আগস্ট মারা যান। তার পৈতৃক নিবাস যশোরের মণিরামপুরের কাশিমপুরে তাকে সমাহিত করা হয়।
জীবদ্দশায় প্রতি বছর একাধিকবার তিঁনি কলারোয়ায় বোনের বাড়ি কলারোয়ার ঝিকরায় আসতেন।
সূত্রে জানা যায়, এএফএম মহিতুল ইসলাম একজন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কর্মী এবং বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার সাক্ষী হয়েছিলেন এবং এ ব্যাপারে থানায় পুলিশ কেস করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ড মামলার বাদী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
মুহিতুল ইসলাম বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। তিনি মুজিব বাহিনীর সদস্য ছিলেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে অস্ত্র সমর্পণ করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সরকার অফিস শাখার সহকারী হিসাবে যোগদান করেন। মুখ্যসচিবের কার্যালয় থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে ফাইল বহন করার সময় রাষ্ট্রপতি তাকে পছন্দ করেছিলেন। তাকে রাষ্ট্রপতিদের ব্যক্তিগত সহকারী হিসাবে বদলি করা হয়েছিল।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে একদল বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা হত্যা করেছিলেন। তিনি তখন তাঁর বাসভবনে রাষ্ট্রপতির সহকারী এবং সংবর্ধনাবিদ ছিলেন। তিনি হত্যার সাক্ষী ছিলেন। ১৯৭৬ সালের অক্টোবরে তিনি লালবাগ থানায় মামলা দায়েরের চেষ্টা করেন। খুনিরা তখনও ক্ষমতায় থাকায় দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে লাঞ্ছিত করেছিলেন। আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় থাকাকালীন ২ অক্টোবর তিনি মামলা করতে সক্ষম হন। এই মামলায় রায়টি ২০০৯ সালের নভেম্বরে প্রকাশ হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ইনডেমনিটি আইনটি বাতিল করে দেয়। কারণ এ আইনটি ঘাতকদের বিচারের হাত থেকে রক্ষা করেছিল। দণ্ডিত দোষীদের পরবর্তীতে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।
সূত্রে আরো জানা যায়, ১৯৭৫ সালে হত্যার চেষ্টায় মুহিতুল ইসলাম আহত হয়েছিলেন। তিনি হাসপাতাল থেকে তার গ্রামের বাড়ি যশোর পালিয়ে যান। তবে সেনাবাহিনী তাকে ধরে নিয়ে যায়। তাকে সেনা হেফাজতে নির্যাতন করা হয়েছিল। শেখ মুজিবের এপিএস শাহরিয়ার জেডআর ইকবাল ইসলামকে হেফাজত থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করেছিলেন। তিনি সরকারী চাকরি অব্যাহত রেখেছিলেন এবং ত্রাণ অধিদপ্তরের পরিচালক হয়েছিলেন। ২০০২ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর তাকে তার অফিস থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ আবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর তিনি বিশেষ মর্যাদা লাভ করেন।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
