কেশবপুরে এবিজিকে ফাযিল মাদ্রাসার নিরাপত্তা কর্মী আলামিন নিয়োগ পেলেও যোগদানে বাঁঁধা


সোহেল পারভেজ, কেশবপুর : যশোরের কেশবপুরে নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। নিয়োগপত্র থাকলেও কর্মস্থলে যোগদানে বাঁধা। ওই পদে বেতন ভাতা চালু হলেও তুলতে পারছোন না টাকা। ঘটোনাটি ঘটেছে উপজেলার এ বি জি কে ফাযিল মাদ্রাসার সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত নিরাপত্তা কর্মী আলামিন এর সঙ্গে। বৈধভাবে নিয়োগ পেলেও কর্মস্থলে যোগদিতে পারছেন না তিন। বেতন ভাতাও চালু হয়েছে যার ইনডেক্স নং ০০৬২৪১৪ ইস্যু তারিখ ২৫/০৩/২০২৫। ন্যায় বিচারের আশায় ঘুরছেন দারে দারে। ততকালীন সরকারের আমলে সৃষ্টপদে নিরাপত্তা কর্মী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন মাদ্রাসা কতৃপক্ষ ও পরিচালনা পরিষদ। পত্রিকায় প্রকাশিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় ২৪ এপ্রিল ২০২৪। যা দৈনিক আজকালের খবর ও দৈনিক প্রভাতফেরী পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিটি ২৫ এপ্রিল প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আবেদনকারীদের ১০ জুন চিঠির মাধ্যমে ১২ মে যাচাই বাছাই দিন তারিখ জানায় কতৃপক্ষ। নির্ধারিত তারিখ যাচাই বাছাই করা হয়। নিয়োগ কমিটি গঠণ করা হয় ২৫ জুন। ১৩ জুলাই নিয়োগ বোর্ড হয়। কৃতকার্য আলামিন গোলদার কে নিয়োগ পত্র দেয়া হয় ১৪ জুলাই। কর্মস্থলে আলামিন গোলদার যোগদান করেন ২৫ জুলাই ২০২৪। সেই সময় বাংলাদেশের ছিল এক সংকটময় মুহুর্ত। সরকার হটাও আন্দোলন সংগ্রাম। কোটা আন্দোলন থেকে শুরু শেষ মুহুর্তে একদফা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একদফা দাবীর মুখে ৫ আগস্ট ২০২৪ স্বৈরাচার সরকারের দেশ ত্যাগের পর নেমে আসে বাংলার আকাশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ। কিছুদিন পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেন। এর মধ্যে মাদ্রাসা কতৃপক্ষ আলামিন এর সউ্গে বিভিন্ন তালবাহানা করতে থাকে। দীর্ঘদিন পর ৬ এপ্রিল ২০২৫ রোববার সকালে কর্মস্থল এ বি জি কে ফাযিল মাদ্রাসায় আসলে তোপের মুখে পড়ে আলামিন।
গত রোববার সরেজমিন জানা গেছে, গত ২৫/০৪/২৪ এ বি জি কে ফাযিল মাদ্রাসার দৈনিক আজকালের খবর ও দৈনিক প্রভাতফেরী পত্রিকায় একটি পুনঃ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরে কেশবপুর উপজেলার ৯নং গৌরীঘোনা ইউনিয়নের আগরহাটী গ্রামের হত দরিদ্র আজহারুল গোলদার এর ছেলে আলামিন গোলদার সরকারি বিধি মোতাবেক উল্লেখিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী একটি আবেদন করেন। আবেদন মণ্জুর হলে গত ১২ /০৫/২৪ তরিখ মাদ্রাসার অফিস কক্ষে নিরাপত্তা কর্মী পদে নিয়োগ বাছাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। উক্ত পরীক্ষায় ৫ জন প্রার্থী করেন। ১৩/০৭/২৪ ইং তারিখ ওই পদে বাছাই পরীক্ষার ফলাফল বিবরণী”ছক” অনুযায়ী তারা হলেন,০১। জি এম রাকিবুল ইসলাম (লিখিত ১৫, মৌখিক ০৮) মোট প্রাপ্ত নম্বর ২৩ , ০২। মোঃ আলামিন গোলদার (লিখিত ১৮, মৌখিক ০৮, মোট প্রাপ্ত নম্বর ২৬, ০৩। মোঃ আব্দুল্লা আল মামুন (লিখিত ১৩, মৌখিক ০৭) মোট প্রাপ্ত নম্বর ২০, ০৪। মামুনুর রশীদ অনুপস্থিত, ০৫। জি এম মারুফ হোসেন ( লিখিত ১৪, মৌখিক ০৭) মোট প্রাপ্ত নম্বর ২১। পদের সংখ্যা ১, পূর্ণমান ৩০ সময় ৩০ মিনিট। যা প্রতিষ্ঠান সভাপতি আব্দুল মান্নান মুন্না, ডিজি’র প্রতিনিধি (মাশিঅ) বেনজীর আহমেদ, একজন শিক্ষক প্রতিনিধি, প্রতিষ্ঠান অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ রহমাতুল্যাহ সাক্ষরিত কপি ছকে বর্ণীত ০২ নং ক্রমিকে মোঃ আলামিন গোলদার কে সর্বোচ্চ ২৬ নম্বর পেয়ে মেধার ভিত্তিত্বে প্রথম স্থান অধিকার করায় নিরাপত্তা কর্মী পদে নিয়োগের জন্য ১৩ জুলাই ২০২৪ সুপারিশ করাহয়। প্রতিষ্ঠানের রেজুলেশনে কার্যনির্বাহী পরিষদের সভার সিদ্ধান্তক্রমে উপস্থিত গণ সাক্ষর করেন। সুপারিশের প্রেক্ষিতে ১৪ জুলাই নিয়োগ পত্র দেওয়া হয়। নিয়োগ পত্ত প্রাপ্ত হয়ে ২৫ জুলাই ২০২৪ তারিখ বৃহস্পতিবার সাকালে প্রতিষ্ঠানে যোগদান কারেন।
অনুসন্ধানে একাধিক সূত্রে ও কাগজ পত্রে সৃষ্টপদে নিরাপত্তা কর্মী আলামিনের চাকুরী হওয়ার নেপত্যে প্রতিষ্ঠান প্রধান অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) রহমাতুল্যাহ ও সভাপতি আব্দুল মান্নান মুন্না এবং অফিস সহাকারী কাম কম্পিউটার সেলিম আখতার এর সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মেলে। এ বি জি কে ফাযিল মাদ্রাসার শিক্ষক ও কর্মচারীদের মার্চ মাস ২০২৫ বেতন ভাতা সিটে মোট ৩১ জনে নাম রয়েছে। ক্রমিক নং ৩১ মোঃ আলামিন গোলদার নিরাপত্তা কর্মী। কোড নং ২০ সূচক সংখ্যা ০০৬২৪১৪ যোগদান ২৫/০৭/২০২৪ টি-৩২৯৭ প্রমাণ মেলে।
সদ্য যোগদান নিরাপত্তা কর্মী আলামিন বলেন, আমি সরকারি নিয়োমবিধি মেনে আবেদনের প্রেক্ষিতে যাচাই বাছাই পরিক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্ত হয়ে নিয়োগ পেয়েছি। যোগদানের চিঠিও পেয়েছি। যোগদান হওয়ার পর বেতন ভাতাও চালু হয়েছে কিন্তু সুবিধাবাদী সুযোগসন্ধানী একটি মহল আমাকে বাঁঁধাগ্রস্ত করছে। আমি সাধারণ জনগণ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সাবেক সভাপতি আব্দুল মান্নান মুন্না বলেন, সরকারি বিধিনিষেধ মেনে আলামিন গোলদার কে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে নিয়োগে টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না বলে জানান।
এবিষয়ে উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি গাজী বাবুর আলী বলেন, স্বৈরাচার সরকারের আমলে নিরাপত্তা কর্মী পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অবৈধ ভাবে মোটা অংকের টাকার বিনিময় নিয়োগ বোর্ড করে চাকুরী দেয়া হয়েছে। তবে আলামিন ছেলেটি খুব ভালো ও গরীব মানুষ। তার প্রতি আমার কোন ক্ষোভ নেই। দায়ী জারা টাকা নিয়েছে। কাগজপত্র বৈধ থাকলে নিয়োগ হবে এবং চাকরীতে যোগদানে কোন বাঁঁধা নেই সেটা আইনসংগত। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) রহমাতুল্যাহ বলেন, যখন নিয়োগ দেয়া হয়েছে তখন ক্ষমতাসিনরা সবকিছু করেছেন। আমি মাত্র অফিসিয়ালি সাক্ষর করেছি। তবে বর্তমান সভাপতি এডিসি স্যার। তিনি অবগত আছেন। আমি এর চেয়ে বেশী কিছু বলতে পারবো না। তবে বৈধ কাগজ পত্র থাকলে যোগদানে কোন বাঁঁধা নেই। আমি আইনের উদ্ধে নই। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
