গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে কলেজ শিক্ষিকা কারাগারে
১০ বছরের গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের দর্শন বিভাগের প্রভাষক শিউলি মল্লিকাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রোববার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। শনিবার রাতে শিউলিকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি সিরাজগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ডা. নুরুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী।
সদর থানার ওসি বাহাউদ্দিন ফারুকী জানান, ৭ জানুয়ারি নিজ বাসার গৃহকর্মী শিশু মিনতি খাতুন হারিয়ে গেছে বলে একটি জিডি করেন শিউলি মল্লিকা। এরপর ৯ জানুয়ারি শনিবার সন্ধ্যায় শিশু মিনতিকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
থানায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিক্ষিকা শিউলি মল্লিকার অমানবিক নির্যাতনের চিত্র বেরিয়ে আসে। শিশু মিনতি জানায়, প্রতিদিনের নির্মম নির্যাতন সইতে না পেরেই সে ওইদিন বাসা থেকে কৌশলে পালিয়ে যায়। তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্নও রয়েছে।
ওসি আরো জানান, মাত্র ৬ মাস বয়সেই বাবা মক্কা হোসেন ও মা মমতা বেগমকে হারায় মিনতি। এরপর গৃহকর্মী নানি রহিমা খাতুনের কাছে বড় হয়। নানির সংসার ছিল অভাবের। খাবার না পেয়ে ৯ বছর বয়সে শিউলি মল্লিকার সিরাজগঞ্জ শহরের ফজল খান রোডের বাসায় গৃহকর্মীর কাজে যোগ দেয় মিনতি। এর মাসখানেক পর থেকেই মিনতির ওপর অমানবিক নির্যাতন শুরু করেন শিউলি।
৭ জানুয়ারি শিউলির এমন নির্যাতন সইতে না পেরে বাসা থেকে পালিয়ে যায় মিনতি। অসুস্থ শরীর আর কান্নাকাটি দেখে ওইদিন সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট গ্রামের জাহানারা খাতুন নামের এক নারী মিনতিকে উদ্ধার করে চিকিৎসা ও খাবার দেন।
এরপর তিনি মিনতিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। খবর পেয়ে থানায় ছুটে আসেন মিনতির খালু আবুল কাশেম। তিনি মিনতির কাছে থেকে সব শুনে নিজে বাদী হয়ে শিক্ষিকা শিউলি মল্লিকার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। পুলিশ তাৎক্ষণিক শিউলি মল্লিকাকে নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করে।
নির্যাতনের শিকার মিনতি বলে, ওই বাসার শিউলি আপা আমাকে প্রতিদিন নানাভাবে মারধর করেন। হাতের কাছে ঝাড়ু, লাঠি, চামচ ও খুন্তি যা পান তা দিয়েই মারেন। আমি মাইর সইতে না পেরেই বাসা থেকে পালিয়ে যাই। আমি এখন তার হাত থেকে বাঁচতে চাই। আর শিউলি আপার বিচার চাই।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)