নড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাঃ শশাংক ঘোষের বিরুদ্ধে অপকর্ম ও অনিয়মের অভিযোগ
উজ্জ্বল রায, নড়াইল: নড়াইলের কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ শশাংক ঘোষের বিরুদ্ধে অপকর্ম ও অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ। নড়াইলের কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষের অপকর্ম ও অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় একাধিক ভুক্তভোগী জেলা সিভিল সার্জন বরাবর অভিযোগ দাখিল করেছেন এছাড়াও স্হানীয় সংসদ সদস্য,স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সচিব, খুলনা বিভাগের পরিচালক, নড়াইল জেলা প্রশাসক, কালিয়া পৌরসভার মেয়রের বরাবর অনুলিপি প্রেরণ করেছেন।
উজ্জ্বল রায, নড়াইল থেকে জানান, চলতি মাসের ৪ ও ৬ তারিখে উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিক, ডায়াগনষ্টিক ও ফার্মেসীর মালিকগণ এ অভিযোগ প্রেরণ করেন। এছাড়াও গত ২৮ জানুয়ারী হাসপাতালের এক নারী সহকর্মীকে নিয়ে ব্যক্তিগত কাজে যাওয়ার কারণে শোকজের মুখে পড়েছিলেন তিনি।
শোকজের বিষয় নিয়ে দেশের কয়েকটি গনমাধ্যমে খবর প্রচারিত হলে ঐ সকল গনমাধ্যমের সাংবাদিকদের নামে কালিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ডাঃশশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ।
ডাঃ শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষের পূর্বের কর্মস্থল মাদারীপুরের শিবচরে নারীকেলেঙ্কারী, দূনীর্তি, অর্থ আত্মসাৎ সহ নানাবিধ অকর্মের সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও টিভি প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছিল। নতুন কর্মস্থলে এসেও ডাঃ শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষের অপকর্ম ও অনিয়ম থেমে নেই। তদন্ত সাপেক্ষে তাঁর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সঠিক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন অভিযোগকারীরা। দাবি না মানলে মানববন্ধনের ডাক দিবেন বলে জানান তারা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই কর্মকর্তা যোগদানের পর কালিয়ার প্রতিটি ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে চিকিৎসকদের বিশেষ সম্মানীর নাম করে প্রত্যেকের কাছে চাঁদা দাবি করেন। অনাদায়ে লাইসেন্স বাতিল ও নবায়ন না করার হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চলেছেন।
ডাঃ জ্যোর্তিময় সরকার বলেন, তাকে নিজ কার্যলয়ে ডেকে কোনো ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে রোগী দেখা ও আল্ট্রাসনোগ্রাম না করার হুমকি দিয়ে তার স্ত্রীর মালিকানাধিন লাইফ কেয়ার ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের লাইসেন্স বাতিল ও নবায়ন না করার হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।
“রোগী কল্যান সমিতি”র ঔষধ সহায়তা ইচ্ছাকৃত ভাবে প্রায় ২ মাস যাবত বন্ধ রেখেছেন ডাঃ শশাঙ্ক। যার ফলে উপজেলার কোনো অসহায় ও দুস্থরোগীরা ঔষধ সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ সমাজসেবা অধিদপ্তরে দুস্থ রোগীদের “রোগী কল্যান সমিতি” কার্যক্রমের ঔষধ প্রদানের ভূয়া স্লিপ দেখিয়ে সম্পূর্ন বেআইনি ভাবে চাপ প্রয়োগ করে বিসমিল্লাহ ফার্মেসী থেকে নগদ ১৪,৫০০/= টাকা ব্যাক্তিগত ভাবে গ্রহন করেছেন বলে জানান ফার্মেসী মালিক মনিরুল ইসলাম।
কালিয়া সার্জিক্যাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের পরিচালক মোতালেব হোসেন জানান, চলতি মাসের ৪ তারিখে সকাল সাড়ে ১১ টায় ডাঃ শশাঙ্ক তার নিজ বাসায় ডেকে তাকে মূল্যায়ন বা অপরেশনে কেন ডাকা হয়না? এমন অপবাদ এনে হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিসহ অসম্মান করেন। অতঃপর ওই দিনই তিনি জেলা সিভিল সার্জন বরাবর অভিযোগ দাখিল করেন।
এ ছাড়া ভয় ভীতি দেখিয়ে নিজ স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে কালিয়ার বেশ কয়েকটি ক্লিনিক ও ফার্মেসীতে সরকারী ডাক্তারদের ব্যক্তিগত চেম্বার বন্ধ করে দিয়েছেন ডাঃ শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ। ফলে সরকারী চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ এবং ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিকের ভাবমূর্তি হচ্ছে ক্ষুন্ন বলে জানান ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিকের মালিকেরা।
অভিযোগে জানা গেছে ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিগনের কাছে তিনি তিন লক্ষ টাকা দাবি করেছেন। না দিলে হাসপাতালে প্রবেশ করতে দিবেন না বলে হুমকিও দিয়েছেন।
ডাঃ শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষের সকল অপকর্ম ও দুর্নীতির প্রমানসহ অভিযোগ দাখিল করে সঠিক বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে এ বিষয়ে নড়াইল সিভিল সার্জন ডাঃ সাজেদা বেগম পলিন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন তবে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডাঃ মন্জুর মোর্শেদ কে তার মোবাইলে বার বার কল করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)