বাংলাদেশের যাত্রাকে ছোটখাটো অভিঘাত বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না: শেখ হাসিনা
গড় দেড় দশকে উন্নয়ন-সম্ভাবনার হাতছানি দেওয়া দুরন্ত গতির বাংলাদেশের যাত্রাকে ছোটখাটো অভিঘাত বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন ‘আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। সম্ভাবনার হাতছানি দেওয়া দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলা দুরন্ত বাংলাদেশ। ছোটখাটো অভিঘাত আজ আমাদের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।’
বুধবার সকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বুধবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহার ঘোষণার সময় একথা বলেন তিনি।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে টিকে থাকার উপযোগী করে স্মার্ট বাংলাদেশ থিম নিয়ে ‘উন্নয়ন দৃশ্যমান বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’ শ্লোগানের ইশতেহার ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ প্রধান।
ইশতেহারর ঘোষণায় শেখ হাসিনা ‘স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সমাজ’ এই চার স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য প্রযুক্তি সক্ষমতা একান্ত প্রয়োজন। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে কাজ করছি।
‘আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ।’
দেশের মানুষের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিতে আওয়ামী লীগ সব সময় তৎপর রয়েছে বলে উল্লেখ করেন দলীয় প্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় নির্বাচনের মাধ্যমে একটি কার্যকর সংসদই পারে কেবল জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে।
‘আমরা নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলে রাষ্ট্র পরিচালনার সব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সুশাসন ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা আরও সুদৃঢ় করবো।’
এ সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কথা পুনরুল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে সমাজ থেকে দুর্নীতির মূলোৎপাটন করতে কাজ করে যাচ্ছে।
নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা সুশাসন ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা আরো সুসংহত করা হবে বলে নির্বাচনী ইশতেহারে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকায় ভোট চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যা কর্তব্য হিসাবে গ্রহণ করেছি, সেখান থেকে কেউ আমাকে সরাতে পারবে না। আপনারা আমাদের ভোট দিবেন, আমরা উন্নয়ন সমৃদ্ধি দিবো।
তিনি বলেন, সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে শতভাগ সফল হয়েছি তেমন দাবি করবো না। আওয়ামী লীগ কথামালার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। আমরা যা বলি বাস্তবায়ন করি।
রাষ্ট্রপরিচালনায় ভুল ত্রুটি হলে তা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ১৫ বছর দেশ পরিকল্পনায় যে ত্রুটি বিচ্যুতি তার দায়ভার আমাদের।
আগামীতে ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার অঙ্গীকারও করেন সরকারপ্রধান।
আগামী ৭ জানুয়ারির ভোটে নির্বাচিত সরকারের জন্য অর্থনীতির এই ক্রান্তিকাল বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘একমাত্র আওয়ামী লীগই পারবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে।’
টানা তিন মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনা করা আওয়ামী লীগ প্রায় ১২ কোটি ভোটারকে সামনে রেখে এ ইশতেহার প্রণয়ন করেছে।
চার স্তম্ভে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় আওয়ামী লীগেরচার স্তম্ভে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় আওয়ামী লীগের
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য, দুর্নীতি রোধ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি রয়েছে এবারের ইশতেহারে। বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছ ১১টি বিষয়ে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের রূপরেখা সম্বলিত ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারের স্লোগান ছিল ‘দিন বদলের সনদ’। এরপর ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে ছিল ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’।
২০১৮ সালে একাদশ নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলটির ইশতেহারে স্লোগান ছিলো, ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’।
আওয়ামী লীগ প্রেসিডেন্ট সদস্য আব্দুর রাজ্জাককে আহ্বায়ক করে গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে কাজ শুরু করেছে ২৫ সদস্যের ইশতেহার প্রণয়ন কমিটি। কমিটির তৈরি খসড়া থেকে প্রধান শেখ হাসিনার নির্দেশনায় তৈরি হয়েছে- চূড়ান্ত ইশতেহার।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)