রবিবার, অক্টোবর ১২, ২০২৫

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

ভারতে ‘সস্তা’ রুশ তেলের শীর্ষ উপকারভোগী আম্বানি

ভারতের রুশ তেল আমদানি ঘিরে নতুন করে আন্তর্জাতিক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই আমদানি কেন্দ্র করে নয়াদিল্লির ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক (মোট ৫০ শতাংশ) আরোপ করেছেন। তার অভিযোগ- ভারত রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্রকে ইন্ধন জোগাচ্ছে ও ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করার আহ্বানকে উপেক্ষা করছে।

ট্রাম্প গত ৩০ জুলাই নিজের ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফর্মে লেখেন, ভারত রাশিয়ার সবচেয়ে বড় জ্বালানি ক্রেতা, চীনের পাশাপাশি, যখন সবাই চায় রাশিয়া ইউক্রেনে হত্যাযজ্ঞ থামাক। সবই খারাপ ব্যাপার।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ১৯ আগস্ট সিএনবিসিকে বলেন, ভারতের কিছু ধনী পরিবার রুশ তেল আমদানির মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে।

ফিনল্যান্ডভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ারের (সিআরইএ) অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সস্তায় রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের সবচেয়ে বড় উপকারভোগী হলো ভারতের রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (আরআইএল), যার নেতৃত্বে রয়েছেন এশিয়ার শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানি। ২০২১ সালে আরআইএলের জামনগর শোধনাগারে রুশ তেলের অংশ ছিল মাত্র ৩ শতাংশ। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর তা বেড়ে ২০২৫ সালে গড়ে ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে।

চলতি বছরের প্রথম সাত মাসেই জামনগর শোধনাগার রাশিয়া থেকে ১ কোটি ৮৩ লাখ টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে, যা গত বছরের তুলনায় ৬৪ শতাংশ বেশি। এর বাজারমূল্য দাঁড়িয়েছে ৮৭০ কোটি ডলার। সিআরইএর তথ্যে বলা হয়েছে, এ সময়ের আমদানি ২০২৪ সালের পুরো বছরের তুলনায় মাত্র ১২ শতাংশ কম।

সিআরইএর বিশ্লেষক বৈভব রঘুনন্দন আল জাজিরাকে বলেন, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া রুশ তেলের মূল্যসীমা মূলত রাশিয়ার আয়ের প্রবাহ রোধ করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে মূল্যসীমা ৬০ ডলারে স্থির থাকায় ও কার্যকরভাবে তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় এর প্রভাব ভোঁতা হয়ে গেছে।

এদিকে, রাশিয়া শত শত জাহাজের ‘শ্যাডো ফ্লিট’ ব্যবহার করে বাজারে চোরাপথে তেল সরবরাহ করছে, যার ফলে অনেক দেশ নির্ধারিত সীমার ওপরে দাম দিয়েই তেল কিনেছে। সিআরইএ’র তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুনে রাশিয়ার তেলের ৫৯ শতাংশ এমন জাহাজে পরিবহন করা হয়েছে, যা জানুয়ারিতে ছিল ৮৩ শতাংশ।

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত জামনগর শোধনাগার বিশ্ববাজারে ৮ হাজার ৫৯০ কোটি ডলারের পরিশোধিত তেলজাত পণ্য রপ্তানি করেছে। এর মধ্যে অনুমানিক ৪২ শতাংশ, অর্থাৎ ৩ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের রপ্তানি গেছে রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া দেশগুলোতে। শুধু ইইউতে গেছে ১ হাজার ৭০০ কোটি ইউরোর সমপরিমাণ পণ্য, আর যুক্তরাষ্ট্রে গেছে ৬৩০ কোটি ডলারের তেলজাত দ্রব্য। এর মধ্যে প্রায় ২৩০ কোটি ডলারের পণ্য রুশ অপরিশোধিত তেল থেকে প্রক্রিয়াজাত।

মূল্য অনুযায়ী, জামনগর শোধনাগার থেকে আমদানিকারী দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র চতুর্থ স্থানে রয়েছে। তবে পরিমাণে বিচার করলে যুক্তরাষ্ট্রই সবচেয়ে বড় ক্রেতা। শুধু মূল্যসীমা কার্যকর হওয়ার পর থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ৮৪ লাখ টন তেলজাত পণ্য আমদানি করেছে।

২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র জামনগর থেকে ১৪০ কোটি ডলারের তেলজাত পণ্য আমদানি করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকৃত পণ্যের মধ্যে ৬৪ শতাংশই ব্লেন্ডিং কম্পোনেন্টস, ১৪ শতাংশ পেট্রল ও ১৩ শতাংশ ফুয়েল অয়েল।

রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পর দ্বিতীয় বৃহৎ রুশ তেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হলো নায়ারা এনার্জি, যা মূলত রুশ রাষ্ট্রীয় জ্বালানি প্রতিষ্ঠান রসনেফটসহ কয়েকটি সংস্থার মালিকানাধীন। তাদের ভাদিনার শোধনাগার, যা ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বেসরকারি রিফাইনারি, ২০২৫ সালে গড়ে ৬৬ শতাংশ অপরিশোধিত তেল রাশিয়া থেকে আমদানি করেছে। তবে পরিমাণে তা রিলায়েন্সের আমদানির এক-তৃতীয়াংশ।

সেন্টার ফর এ নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির গবেষক র‍্যাচেল জিম্বা বলেন, শুধু রিলায়েন্সের লাভের জন্য ভারত শুল্কের ভার বহন করছে- এভাবে দেখা ভুল হবে। ভারতের জন্য সস্তা তেল আমদানি একদিকে যেমন বৈদেশিক লেনদেনের ঘাটতি সামলাতে সাহায্য করেছে, অন্যদিকে জোটপন্থা থেকে বেরিয়ে আসার বার্তাও দিয়েছে।

গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক সিদ্ধান্তকে ‘একেবারেই ভাঁওতা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তার মতে, সবচেয়ে বড় রুশ তেল আমদানিকারক চীনের দিকে আঙুল তোলেননি ট্রাম্প, কারণ তিনি চীনকে ভয় পান। ভবিষ্যতে যদি ট্রাম্প ও পুতিন ইউক্রেন ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছান, তবে ভারতকে চাপ দিতে যুক্তরাষ্ট্র অন্য অজুহাত খুঁজে নেবে।

২০২১ থেকে ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত ভারতে রুশ তেল আনার ‘শ্যাডো ট্যাংকার’র সংখ্যা ছিল ৩৬ কোটি ৬ লাখ ৬৩ হাজার ২৫৩টি, আর জি-৭ ট্যাংকার ছিল ৩১ কোটি ৯ লাখ ৪৫ হাজার ১২২টি। অর্থাৎ শ্যাডো ট্যাংকার ১৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেশি কাজ করেছে।

এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ঘোষণা করেছে, আগামী জানুয়ারি থেকে রুশ তেল দিয়ে প্রক্রিয়াজাত পরিশোধিত তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। সিআরইএর রঘুনন্দনের মতে, এটি কঠোরভাবে বাস্তবায়িত হলে বড় প্রভাব ফেলবে। কারণ আরআইএলের জেট ফুয়েল রপ্তানির অর্ধেকের বেশি এখনো ইউরোপীয় ইউনিয়নে যাচ্ছে। বাজার হারালে তাদের রপ্তানি কৌশল পুরোপুরি নতুনভাবে ভাবতে হবে।

তবে একই সঙ্গে রিলায়েন্স গত ডিসেম্বরে রসনেফটের সঙ্গে ১০ বছরের চুক্তি করেছে। নিষেধাজ্ঞার বাস্তবায়ন সে চুক্তিতে কীভাবে প্রভাব ফেলবে, তা এখনো অনিশ্চিত।

সূত্র: আল জাজিরা

একই রকম সংবাদ সমূহ

পাকিস্তানকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার হুঁশিয়ারি ভারতের সেনাপ্রধানের

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ ছড়ানোর অভিযোগ তুলে দেশটিকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেন ভারতের সেনাপ্রধানবিস্তারিত পড়ুন

লাদাখে বিক্ষোভের দুই দিন পর সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচুক গ্রেপ্তার

লাদাখ রাজ্য প্রতিষ্ঠার দাবিতে সোচ্চার সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচুককে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের কর্তৃপক্ষ।বিস্তারিত পড়ুন

‘আপনার বাংলাদেশি বোন দিল্লিতে বসে আছে’, মোদিকে কড়া জবাব ওয়াইসির

ভারতের বিহারে তথাকথিত ‘অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের’ উপস্থিতি নিয়ে ক্ষমতাসীনদের রাজনীতি দেশটিতে বেশবিস্তারিত পড়ুন

  • মোদিকে হটাতে জেন-জিদের বিক্ষোভ চান রাহুল
  • দিল্লিতে সভা : ‘বাংলাদেশের এখনকার পরিস্থিতি মানতে হবে’
  • সহিংসতার অভিযোগে ৫ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে ফেরত পাঠাচ্ছে ভারত
  • ভারী বৃষ্টিতে হেলিকপ্টার রেখে গাড়িতে গন্তব্যে গেলেন মোদী
  • শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশের পর নেপাল, এবার দুশ্চিন্তায় ভারত!
  • ভারত বিরোধিতার কারণে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়েছি : নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী
  • ভারতে ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের
  • বেনাপোল বন্দরে ভারতীয় পন্যবাহী ট্রাক থেকে পিস্ত*লসহ চালক ও হেলপার আটক
  • মোদি যাচ্ছেন না যুক্তরাষ্ট্রে
  • আমরা ভারত ও রাশিয়াকে চীনের কাছে হারিয়ে ফেলেছি: ডোনাল্ড ট্রাম্প
  • ‘মোদি চোর, বিজেপি চোর’, বিধানসভায় তীব্র সমালোচনা মমতার
  • ভারতে পাসপোর্ট ছাড়া বাংলাদেশিদের থাকার নতুন নিয়ম