মণিরামপুরে কলেজ ছাত্র একরামুল হত্যায় আটক দু’ভাইয়ের স্বীকারোক্তি


যশোরের মণিরামপুরে কলেজ ছাত্র একরামুল ইসলাম হত্যার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন আটক দু’ ভাই।
শুক্রবার (০১ এপ্রিল-২০২২) তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহাদী হাসান তাদের জবানবন্দি গ্রহণ শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আসামিরা হলেন- মণিরামপুর উপজেলার ভরতপুর গ্রামের হোসেন মোড়লের ছেলে আমিনুর রহমান ও কামরুল ইসলাম।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এসআই সৈয়দ রবিউল ইসলাম পলাশ জানান- আটক কামরুলের স্ত্রী হীরা খাতুনের সাথে কলেজ ছাত্র একরামুলের পরকীয়া ছিলো। কামরুল কুয়েত প্রবাসী। পাঁচ মাস আগে তিনি দেশে ফিরে এসেছেন। বাড়িতে আসার পর তিনি স্ত্রীর পরকীয়ার কথা জানতে পারেন। কামরুলের ভাই আমিনুরও ভাবির সাথে একরামুলের পরকীয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি পরিবারের মানসম্মান রক্ষার্থে গোপনে একরামুলের সাথে দেখা করে এ পথ থেকে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তখন একরামুল উল্টো আমিনুরকে হুমকি দেন। তাদের সম্পর্কের ধারণকৃত ভিডিও তার মোবাইল ফোনে আছে বলেও দাবি করেন। এ নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য আমিনুরকে নিষেধ করেন একরামুল। ফলে, কোনো উপায় না পেয়ে একরামুলের কাছ থেকে মোবাইল ফোন সেট নিয়ে ওই আপত্তিকর ভিডিও ডিলিট করে দেয়ার পরিকল্পনা করেন আমিনুর। ঘটনার দিন গত ২৮ মার্চ সন্ধ্যায় আমিনুর তার ভাইপো মেহেদীর কাছ থেকে জানতে পারেন, একরামুল নোয়ালী গ্রামের কাড়াখালি ব্রিজের ওপর অবস্থান করছেন। এ খবর পেয়ে তিনি গোপনে সেখানে গিয়ে তাকে দেখতে পান। এরপর বাড়ি ফিরে আসেন এবং একটি বৈদ্যুতিক তার নিয়ে ফের সেখানে যান। কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই পেছন থেকে গলায় বৈদ্যুতিক তার পেঁচিয়ে একরামুলের কাছে থাকা মোবাইল ফোনসেট দিতে বলেন আমিনুর।
বৈদ্যুতিক তার গলায় পেঁচানোর কারণে শ্বাসরোধে মারা যান একরামুল। তার শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ায় ভয় পেয়ে যান আমিনুর। পরে লাশটি ব্রিজের পাশে রেখে বাড়িতে চলে আসেন তিনি এবং সকল ঘটনা ভাই কামরুলকে জানান। এ কথা শুনে কামরুল ভয় পেয়ে তাকে প্রচণ্ড বকাঝকা করেন। পরে দু’ সহোদর ঘটনাস্থলে যান এবং লাশ বস্তাবন্দি করে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে পাশের মদনপুর গ্রামের জনৈক লিয়াকত আলীর পুকুর পাড়ে মাটিতে পুঁতে রাখেন।
তিনি আরও জানান- ঘটনার সাথে জড়িত দুই ভাই ও তাদের ভাইপো মেহেদীকে গত বৃহস্পতিবার সকালে আটক করা হয়। শুক্রবার তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আমিনুর ও কামরুল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
উল্লেখ্য- নিহত একরামুল ভরতপুর গ্রামের মফিজুর মোল্লার ছেলে। গত ২৮ মার্চ রাতে তিনি নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় একরামুলের মা রেশমা খাতুন ৩০ মার্চ মণিরামপুর থানায় একটি জিডি করেন। এই জিডির সূত্র ধরে পিবিআই কর্মকর্তারা গত বৃহস্পতিবার সকালে বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে আমিনুর, কামরুল ও মেহেদীকে আটক করেন। পরে তাদের স্বীকারোক্তিতে মদনপুর গ্রামের লিয়াকত আলীর পুকুর পাড়ে মাটিচাপা দিয়ে রাখা একরামুলের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
