মণিরামপুরে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের কর্মবিরতি, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ
বেতনগ্রেড উন্নীতকরণ ও পদোন্নতির দাবিতে যশোরের মণিরামপুরে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছেন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীরা। গতকাল মঙ্গলবার (১ মার্চ-২০২২) থেকে সারাদেশের সাথে একযোগে মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) দফতরে কর্মরত ৯ কর্মচারী এ কর্মবিরতি পালন করছেন। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন দফতর দুটিতে সেবা নিতে আসা দূরদূরান্তের লোকজন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মবিরতি পালন করবেন বলে জানা গেছে।
দুই দফতরের আন্দোলনকারীরা হলেন- অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ইকরাম আলী, অফিস সহকারী প্রবীর কুমার চৌধুরি, সায়রাত সহকারী ফাহিম আল মমিন, সার্টিফিকেট পেশকার ফাতেমা খাতুন, অফিস সুপারেনটেনডেন্ট আব্দুর রউফ, অফিস সহকারী রেজাউল করিম তারু, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক সাইফুল ইসলাম, একাউন্টেন্ট ক্লার্ক শাহিন আলম, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক আবুল কালাম।
আন্দোলনকারীরা বলছেন- আমরা যারা ইউএনও বা এসিল্যাণ্ড দফতরে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারি হিসেবে চাকরিতে যোগ দিয়েছে আজ পর্যন্ত আমাদের পদোন্নতি হয়নি। অথচ আমাদের সাথে যারা এ পদে অন্য দফতরে যোগ দিয়েছেন তারা অনেকে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হয়ে গেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুমতি দিলেও অর্থমন্ত্রণালয় সম্মতি দিচ্ছেন না।
এসিল্যাণ্ড অফিসের আন্দোলনকারী প্রবীর কুমার চৌধুরি বলেন- অফিস সহকারী হিসেবে ১৭ বছর চাকরি করছি। আমাদের সাথে যারা অন্য দফতরে ঢুকেছেন তাদের ৮ বছর পরে পদ পরিবর্তন হয়েছে। এখন অনেকে প্রথম শ্রেণিতে পদোন্নতি পেয়েছেন। আমাদের যেখানে জন্ম, সেখানে মৃত্যু।
তিনি আরও বলেন- আমাদের এ পদ থেকে উন্নীত হয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু তা হচ্ছে না। একই পদে থেকে আমাদের অনেকে অবসরে গেছেন।
একই দফতরের আন্দোলনকারী সায়রাত সহকারী ফাহিম আল মমিন বলেন- যারা এখন নায়েব হয়েছেন তাদের থেকে আমরা এক গ্রেড আগের ১৬ গ্রেডের বেতনে চাকরিতে যোগ দিয়েছি। আমাদের পদোন্নতি হচ্ছে না। কিন্তু সহকারী তহসিলদার বা তহসিলদার হিসেবে যোগ দিয়ে এখন তারা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন। আমাদের পিছনে ফেলে তারা এখন ১১ ও ১২ গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন।
এসিল্যাণ্ড অফিসের সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ইকরাম আলী বলেন- প্রতি বছর আমরা আন্দোলন করি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের পদোন্নতির ব্যাপারে অনুমতি দিয়েছেন। সে অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রস্তাব পাঠিয়েছে। অর্থমন্ত্রণালয় সম্মতি দিচ্ছে না।
সার্টিফিকেট পেশকার ফাতেমা খাতুন বলেন- আমরা অফিসের কোন কাজ করছি না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
এদিকে বুধবার (২ মার্চ-২০২২) দুপুরে মণিরামপুর এসিল্যাণ্ড অফিসে গিয়ে সেবা নিতে আসা লোকজনদের ফিরে যেতে দেখা গেছে।
এ সময় ঢাকুরিয়া প্রতাপকাঠি এলাকার রামপদ বলেন- নামজারির জন্য আইছি। অফিসের কেউ কোনো কাজ করে দিচ্ছেন না। বলছেন, তারা নাকি কিসের আন্দোলন করছেন।
তিনি আরও বলেন- আমার মত বহুমানুষ সকাল থেকে এসে বসে থাকতেছেন। কাজ না হওয়ায় হতাশ হয়ে ও ভোগান্তি পেয়ে সবাইকে ফিরে যেতে হচ্ছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)