মুক্তিপণ নয়, আন্তর্জাতিক চাপেই নাবিকরা মুক্ত : নৌপ্রতিমন্ত্রী
সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তিপণ দিয়ে ২৩ নাবিকের মুক্তির কথা জানা গেলেও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী দাবি করছেন, আন্তর্জাতিক চাপে আলোচনার মাধ্যমে কোনো ধরনের পণ ছাড়াই মুক্ত হয়েছেন নাবিকরা।
রোববার (১৪ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজের বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের প্রথম বিবেচনা ছিল নাবিকদের সুস্থভাবে ফিরিয়ে আনা। এটা আমাদের সাফল্য। এর আগে এত অল্প সময়ে উদ্ধারের কোনো নজির নেই।’
পয়লা বৈশাখের দিনে নাবিকদের উদ্ধার হওয়া আনন্দের উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে এমন একটা সংবাদ আমাদের উৎসবকে আরও রাঙিয়েছে।’
মুক্তিপণের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘টাকা দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে আনা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। যেগুলো শোনা যাচ্ছে এগুলো ঠিক না। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ওপর চাপ ছিল। তারা আন্তরিকতার সাথে তৎপরতা করেছে। আন্তর্জাতিক চাপেই আলোচনার মাধ্যমে মুক্তিপণ ছাড়াই মুক্ত হয়েছে নাবিকরা।’
বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ৩০ মিনিটে নাবিকদের উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
৩১ দিন পর জলদস্যুদের হাতে জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া নাবিকদের দেশে ফিরতে ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। এসময় শিপিং করপোরেশনের মহাপরিচালক জানান, জাহাজ আরব আমিরাতে কয়লা খালাস করবে। এতে ছয় দিন সময় লাগবে।
এদিকে প্রতিমন্ত্রী টাকা লেনদেনের কথা অস্বীকার করলেও সোমালিয়ার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম পান্টল্যান্ড মিররের খবরে বলা হয়েছে, লেনদেন হওয়া মুক্তিপণের পরিমাণ পাঁচ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৫৫ কোটি টাকা।
১৪ বছর আগে একই মালিকের এমভি জাহান মনি নামের আরেকটি জাহাজ জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল। তখনও তারা মুক্তিপণের অংক গোপন রাখে। এটি একটি কৌশল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এমভি আব্দুল্লাহর মুক্তিপণের অর্থ দস্যুদের হাতে কীভাবে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, তা নাবিকেরা জাহাজের ডেকে থেকে প্রত্যক্ষ করেছেন। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এমনই একজন নাবিক তার পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছেন, ছোট উড়োজাহাজ থেকে জাহাজের পাশে ডলারভর্তি ব্যাগ ফেলা হয়। জাহাজের পাশে আগে থেকেই স্পিডবোটে করে অপেক্ষায় ছিল দস্যুরা। ডলারভর্তি ব্যাগ পানি থেকে সংগ্রহ করে দস্যুরা। এরপর প্রায় আট ঘণ্টা পর গভীর রাতে দস্যুরা জাহাজটি ছেড়ে যায়।
ওই নাবিক জানান, ডলারভর্তি ব্যাগ পানিতে ফেলার আগে নাবিকদের জাহাজের ডেকে নিয়ে এসে এক লাইনে দাঁড় করায় দস্যুরা। এ সময় পেছন থেকে নাবিকদের দিকে অস্ত্র তাক করে ছিল দস্যুরা। উড়োজাহাজ থেকে নাবিকদের প্রতি ইশারায় হাত তোলার ইঙ্গিত দেওয়া হয়। এরপর সব নাবিক হাত তোলেন। অর্থাৎ সব নাবিক জীবিত আছেন, এমন নিশ্চয়তা পাওয়ার পরই উড়োজাহাজ থেকে ডলার ফেলা হয়।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)