যেসব শর্তে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হামাস
গাজায় হামলা বন্ধে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য কাজ করছেন যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা। এই চুক্তির প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে হামাস। যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা-সিআইয়ের প্রধান বিল বার্নস। তিনি সোমবারই কাতারের দোহা থেকে জেরুজালেমে পৌঁছেছেন।
ইসরাইল এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হয়নি। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাস যে প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে তাতে ইসরাইলের দাবিগুলো পূরণ হয়নি। তবে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য কায়রোয় মধ্যস্থতাকারীদের একটি দল পাঠানো হবে। ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা রাফায় অভিযান চালানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
হামাসের সম্মতি পাওয়া প্রস্তাবিত ওই চুক্তিতে কী কী শর্ত আছে, সেগুলোও এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে ইসরায়েলভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল এক প্রতিবেদনে চুক্তির শর্তসমূহ তুলে ধরেছে।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্যস্থতাকারীরা সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তিন ধাপে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাব নিয়ে হামাসের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে আসছিলেন। চুক্তির প্রথম ধাপে ৪০ দিনের মধ্যে ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। এই দফায় যারা মুক্তি পাবেন তারা হলেন, নারী, শিশু, প্রবীণ ও অসুস্থ ব্যক্তিরা। বিনিময়ে কয়েক শ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে ইসরাইল।
দ্বিতীয় ধাপে পরবর্তী ৪২ দিনের মধ্যে বাকি সব জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। বিনিময়ে আরও কয়েক শ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে ইসরাইল। পাশাপাশি গাজা থেকে সব ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার করা হবে।
চুক্তির প্রথম ধাপেই গাজা পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু হবে। তাতে গাজার সড়ক, বিদ্যুত, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন এবং যোগাযোগ অবকাঠামো পুনর্গঠনের কাজ করা হবে। আর চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে গাজার ঘর–বাড়ি ও বেসামরিক স্থাপনা পুনর্গঠনের পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা প্রস্তুত করা হবে। অবকাঠামো পুনর্গঠনের কাজ শুরু হবে চুক্তির তৃতীয় ধাপে।
ইসরাইলের প্রতিক্রিয়া
কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে রাজি হয়েছে হামাস। তবে ইসরাইলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা এই চুক্তি করেনি।
এদিকে ইসরাইলের উগ্র ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেনগাভির হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, হামাস ‘গেম’ খেলছে। এর একটিই জবাব, ‘রাফা দখল।’
সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি বলেন, ‘সামরিক চাপ বাড়ানো এবং হামাসের সম্পূর্ণ পরাজয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত রাখা।’
বেনগাভির ইসরাইলি সরকারের সেসব শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন যিনি নেতানিয়াহুর মতোই ‘হামাসকে সম্পূর্ণভাবে পরাজিত না করা পর্যন্ত গাজায় লড়াই চালিয়ে যাওয়ার’ আহ্বান জানিয়ে আসছেন।
যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে ইসরাইলের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো না হলেও, হামাসের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, বল এখন ইসরায়েলের কোর্ট।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, গাজায় বন্দি-জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব বিবেচনা করা হবে, যদিও গাজায় অভিযান অব্যাহত থাকবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, হামাস যে চুক্তিতে সম্মতি জানাচ্ছে, সেটি মিশরের প্রস্তাব এবং এতে এমন কিছু আছে যা ইসরাইল গ্রহণ করবে না।
সূত্র: আল-জাজিরা
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)