বুধবার, নভেম্বর ২৭, ২০২৪

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

সাতক্ষীরার বাঁশদহায় সিন্ডিকেটে ‘জন্ম নিবন্ধনে’ ভোগান্তি

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশদহা ইউনিয়নের কৃষক নিলু। ছেলের জন্ম তারিখ ১৯৯৭ সালে আর মেয়ের ২০০১ সালে। তবে জন্ম নিবন্ধনে ছেলে-মেয়ে উভয়ের ই জন্মের সাল লেখা হয়েছে ১৯৯৭। ছেলের জন্মের সাল ঠিক থাকলেও মেয়ের জন্মের সাল ঠিক ছিলনা। এ কারণে মেয়ের জন্মের সাল সংশোধনের জন্য তিনি বাঁশদহা ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টার থেকে আবেদন করে আবেদন ফর্ম জমা দিয়েছিলেন ইউএনও অফিসের নিচ তলায় জমা নেওয়ার দায়িত্বে থাকা পিয়নদের কাছে। তবে তার সেই আবেদন ফর্ম ১ মাসেও নিচ তলা থেকে দ্বিতীয় তলায় ইউএনও মহাদয়ের টেবিলে পৌঁছাইনি। ১ মাস পর ইউএনও অফিসে এসে খোঁজ নিয়েছিলেন নিলু। তবে তার সেই আবেদন ফর্ম আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তখন তিনি আবারও আবেদন করে জমা দেন নিচ তলায় দায়িত্বে থাকা পিওনদের কাছে। আবারও ১৫ দিন পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তার সেই আবেদন ফর্মও হারিয়ে গেছে। এরপর তিনি অন্য একজনের পরামর্শে বাধ্য হয়ে আবারও আবেদন করেন। তবে আবেদন ফরম এবার আর তিনি পিয়নদের কাছে জমা দেননি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর সরাসরি জমা দেন ইউএনও মহাদয়ের কাছে। সাথে সাথে তার কাজটি করে দেন ইউএনও।

নিলু বলেন, জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য আবেদন ফরম নিচে পিয়নদের কাছে জমা দিলে সেটি আর ইউএনও স্যারের কাছে পৌঁছাইনা। ওইখান থেকেই উধাও হয়ে যায়। যারা পিয়নদের টাকা দিতে পারছে তাদের কাজ দিনের দিন হয়ে যাচ্ছে। মেয়ের জন্ম নিবন্ধন ঠিক করতে আমার ৫ দিন যেতে হয়েছে উপজেলায়! আমি গরিব, মূর্খ মানুষ। তেমন একটা কিছু বুঝিনা। ইউনিয়ন পরিষদ হতে আমাকে উপজেলার নিচের তলায় জমা দিতে বলেছিল বলে জমা দিয়েছিলাম। ৫ দিন আমার কাজ কামায় হয়েছে। এছাড়া যাতায়াতেও আমার অনেক খরচ হয়েছে।’ আমার জীবনে এতো ভোগান্তিতে আর পড়িনি। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের কয়েকজন কর্মচারীর কারণে কৃষক নিলুর মতো প্রতিদিন এমন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শত শত মানুষ। জন্ম নিবন্ধন ঠিক করতে না পেরে দিনের পর দিন ইউএনও অফিসে আসছেন আর ফিরে যাচ্ছেন তারা। ফলে সরকারের মহতি উদ্যোগ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের উদ্যোক্তা ও স্থানীয় কিছু দালালের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে একটি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী তাজদিকুর রহমান। আর তাজদিকুর রহমানকে সহায়তা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের পিয়ন আনিস, নরেশ, গৌরাঙ্গ। দিন শেষে যে টাকা ইনকাম হয় তা বাগ বাটোয়ারা হয় ৫ ভাগে। তাজদিকুর রহমান, আনিস, নরেশ, গৌরাঙ্গ ছাড়াও ওই টাকার একটা অংশ চলে যায় সদর উপজেলা নিবাহী অফিসারের কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের পকেটে।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, সদরের কয়েকটি ইউনিয়নের উদ্যোক্তা ও দালালরা আবেদন ফরম সংগ্রহ করেন এবং তাদের কাছ থেকে ২০০, ৫০০ থেকে শুরু করে বিভিন্ন অংকের টাকা নেন। এরপর ওই উদ্যোক্তা ও দালালরা ওই ফরমগুলো জমা দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের ওই ৪ কর্মচারীর কাছে। দ্রুত কাজ করে দেবে এই শর্তে ওই ৪ কর্মচারী ওই উদ্যোক্তা ও দালালদের কাছ থেকে ফর্ম প্রতি ৪০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকা করে নিয়ে থাকেন। যে আবেদন ফর্মগুলোর টাকা পান তাজদিকুর রহমান, আনিস, নরেশ, গৌরাঙ্গ ঠিক সেই ফর্মগুলো তারা ইউএনও মহাদয়ের কাছে জমা দেন। আর ওই আবেদন ফর্ম গুলোর কাজ সম্পন্ন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। আর যারা দালালের মাধ্যমে টাকা দিয়ে কাজ না করে সরাসরি এসে ওই কর্মচারীদের কাছে জমা দেন তাদের ফর্ম উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে পৌঁছায়না। নিচ তলা থেকেই হারিয়ে যায়। ফলে দিনের পর দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে আসছেন আর ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কার্যালয় সংশ্লিষ্ঠ একজন বলেন, ‘আমার নিজের এলাকার এজন জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য আবেদন ফর্ম আমার কাছে দিয়ে গেলে আমি সেটি একজন পিয়নের কাছে দিয়েছিলাম। তবে সেটি দের মাসেও ইউএনও স্যারের কাছে পৌঁছাইনি। পরে আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ইউএনও স্যারের কাছ থেকে আবেদন ফর্মটি ঠিক করে নিয়েছিলাম। আপনি তো অফিস সংশ্লিষ্ঠ তা আপনার দের মাস লাগলো কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হয়তো আমি টাকা দিতে পারিনি এজন্য আমার দেওয়া ফরমটি তারা ইউএনও স্যারের কাছে দেয়নি।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সদরের এক ইউপি উদ্যোক্তা বলেন, ‘টাকা না দিলে ইউএনও অফিসের পিয়নরা কাজ করেননা। ফর্মপ্রতি তাদের ৪০ টাকা থেকে শুরু করে আরো বেশি টাকা দিতে হয়। সরাসরি পিয়নদের কাছে ফর্ম জমা দিয়ে আমার এলাকার অনেকেই ভোগান্তিতে আছেন। তারা দিনের পর দিন আমার এখানে এসে খোঁজ নেন। তবে আমারতো কিছুই করার থাকেনা। আমি তাদের উপজেলায় খোঁজ নিতে বলি।’

এ ব্যাপারে জানার জন্য সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের নম্বরে বারবার যোগাযোগ করলেও নম্বর বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সাতক্ষীরা উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ের অফিস সহকারী তাজদিকুর রহমান বলেন, ‘এখানে কোন টাকা নেওয়া হয়না। ফর্ম জমা দিলে সিরিয়াল অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করা হয়।’ কিছু কিছু আবেদন ফর্ম মাসের পর মাস পড়ে থাকে কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সার্ভারের সমস্যা থাকে এজন্য পড়ে থাকে।’ এরপর অফিসে আসতে বলেই তিনি মোবাইলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, ‘এমন অভিযোগ আমার কাছেও এসেছে। এজন্য আমি প্রতি দিনের আবেদন ফর্ম প্রতি দিন আমার টেবিলে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। আমার নির্দেশনা অমান্য করে জন্ম নিবন্ধনের জন্য যদি কেউ টাকা গ্রহণ করে তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমার দোয়ার সবসময় সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত। আবেদন ফরম নিয়ে সরাসরি আমার সাথে দেখা করার অনুরোধ করছি।

একই রকম সংবাদ সমূহ

দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য আশা সংস্থার ৪৭০ পিচ কম্বল বিতরণ

আবু জাফর সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: অসহায়, দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের জন্যবিস্তারিত পড়ুন

আরা এনজিও এর উদ্যোগে ত্রিমাসিক সভা অনুষ্ঠিত

আবু সাঈদ : অসহায় মানুষের জন্য কাজ করতে চাই দূর্নীতি মুক্ত সমাজবিস্তারিত পড়ুন

  • কালিগঞ্জে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির তিন দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণের উদ্বোধন
  • কলারোয়ায় মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন
  • কলারোয়ার ধানদিয়া চৌরাস্তায় মাদক বিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত
  • পেশাদারিত্বের সাথে মানবসেবা করতে চাই: সাতক্ষীরার এসপি মনিরুল ইসলাম
  • সাতক্ষীরায় পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেলেন ৫৮ জন
  • সাতক্ষীরায় হারানো মোবাইল উদ্ধার করে মালিকদের ফেরত দিল পুলিশ
  • উপকূলীয় নারীদের অভিযোজিত ও টেকসই সবজি চাষের লক্ষ্যে বীজ ও সার বিতরণ
  • সাতক্ষীরায় টাকা ছাড়া ৫৮ জনের পুলিশে চাকরি
  • কলারোয়ায় থানা পুলিশের সাথে সুধীজনদের মতবিনিমেষ সভা
  • সাতক্ষীরার আশাশুনিতে মাটি চাপা পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
  • সাতক্ষীরায় স্বর্ণের বারসহ আটক ১
  • একবার ব্যবহার যোগ্য প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাব বিষয়ক স্কুল সচেতনাতামূলক সভা