সাতক্ষীরা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে বই বিক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহা: আবদুল গনির বিরুদ্ধে ‘ছন্দ ছড়ায় রাসেল সোনা’ বই বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সদর উপজেলার ২০১ টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের স্বাক্ষরিত অভিযোগ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গত ১৭ অক্টোবর প্রধান শিক্ষকদের মাসিক সমন্বয় সভায় সকল শিক্ষকদের বাধ্যতামূলক এই বই ক্রয় করতে বলেন তিনি।
সূত্রে জানাগেছে, প্রতি প্যাকেটে ০৬ টি করে বই দিয়ে তিনি মূল্য নেন ৩০০০/- টাকা। বইয়ের মূল্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। কিন্তু তিনি ৬ লক্ষ টাকায় তা বিক্রয় করে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন। সংক্ষুব্ধ শিক্ষকরা আরও জানান ১ টি বইয়ের মূল্য ১ শত টাকা। এ হারে এক প্যাকেট বইয়ের মূল্য ৬ শত টাকা, কিন্তু শিক্ষা অফিসার মোহা: আবদুল গনি অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে ৬ শত টাকার বই ৩ হাজার টাকা বিক্রয় করেন। এ অনিয়ম পাকাপোক্ত করতে বইয়ের নির্ধারীত মূল্যের স্থানে টেম্পারিং করে তিনি কৌশলে ৫ শত টাকা লেখেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, দুর্যোগ মন্ত্রণালয় কর্তৃক ‘ছন্দ ছড়ায় রাসেল সোনা’ নামের ছয় পিসের চটি বই প্রকাশ করা হয়েছে। ওই বই সেট প্রত্যেক স্কুলের জন্য কিনতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোন পরিপত্র না থাকলেও প্রধান শিক্ষকদের মাসিক সমন্বয় সভায় সকল শিক্ষকদের বাধ্যতামূলক এই বই ক্রয় করতে বলেন সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহা: আবদুল গনি। বই সেটটির সর্বচ্চ্য বাজার মূল্য ৯শত থেকে এক হাজার হতে পারে। কিন্তু শিক্ষা অফিসার মোহা: আবদুল গনি মাস্টাররোল তৈরি করে ওই বই ৩ হাজার টাকা দরে সদরের ২০১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের মাঝে বিক্রি করেছেন। কিন্তু মাস্টার রোলে টাকার অংকের ঘর ফাঁকা রেখে আমাদের কাছ থেকে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষক আরো জানান, পূর্বে ৩২টি বই ও ৩২ টি ছবি সেট ৬ হাজার টাকায় ক্রয় করেছি। সেখানে মাত্র ৬টি চটি বই উপজেলা শিক্ষা অফিসার মহোদয় আমাদের কাছে জোর করে ৩ হাজার টাকা দরে বিক্রি করেছেন। জোর করে বই বিক্রয়ের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, আমরা চাকরি করি আমাদের কিছু করার নেই, আমরা নিরুপায়। তথ্যদাতা প্রধান শিক্ষক সাংবাদিকদের আরো জানান, আমি শিক্ষা অফিসার মোহা: আবদুল গনি স্যারের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, স্যার ৩হাজার টাকায় ‘ছন্দ ছড়ায় রাসেল সোনা’ বই কিনবো তা আমাদের বাজেট কোথায়? জবাবে শিক্ষা অফিসার প্রধান শিক্ষাককে পরামর্শ দেন আপনারা সিলিপের টাকা থেকে এই বই কিনবেন।
বই বিক্রয়ের বিষয়ে শিক্ষা অফিসার মোহা: আবদুল গনির কাছে জানতে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন (০১৭১২ ৬১৭১৫৪) নাম্বারে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, শিক্ষা অফিসার মোহা: আবদুল গনিকে দূর্নীতি ও অনিয়মের দায়ে গত ১১ সেপ্টম্বর ২৩ তারিখে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বরিশালের হিজলা উপজেলায় শাস্তিমূলক বদলি ও স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়। পরবর্তীতে ১৪ সেপ্টম্বর ২৩ তারিখে পুনরায় একই জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় বদলীর আদেশ প্রদান করেন। পরবর্তীতে প্রভাবশালী এ শিক্ষা কর্মকর্তা ক্ষমতার জোরে বদলী ঠেকিয়ে দেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)