১২ বছরের শিশুর বলাৎকারের অভিযোগে আ.লীগ কর্মীর ৬ হাজার টাকা জরিমানা!
বরিশালের মুলাদী উপজেলার চরকালেখান ইউনিয়নের বড়কান্দি গ্রামে ১২ বছরের এক শিশুকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি সালিশি বৈঠকে এ ঘটনা ধামা চাপা দেয়ার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ করেছে শিশুটির পরিবার। পাশাপাশি পরিবারটিকে আইনের আশ্রয় নিতে বাধা দেয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
অভিযুক্ত জলিল হাওলাদার ওই গ্রামের মৃত আব্দুর রহিম হাওলাদারের ছেলে। তিনি আওয়ামী লীগ কর্মী ও তার এক ছেলে ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
শিশুটির মা জানান, জলিল হাওলাদার আমাদের প্রতিবেশী। বুধবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে জলিল হাওলাদার কলাগাছের পাতা কাটার জন্য তার ছেলেকে ডেকে নেন। বাগানে নিয়ে তার ছেলেকে মুখ চেপে জোরপূর্বক বলাৎকার করেন জলিল হাওলাদার। ছেলের চিৎকারে তার দাদি সেখানে গেলে জলিল হাওলাদার পালিয়ে যান। স্থানীয়রা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানালে মুলাদী থানার এএসআই বাদল হোসেন তার ছেলেকে উদ্ধার করে বুধবার সন্ধ্যায় মুলাদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক তার ছেলেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
তিনি বলেন, ‘এসময় গ্রামের কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি সালিশি বৈঠক করে জলিল হাওলাদারকে শাস্তি দেয়ার কথা বলেন এবং আমার ছেলেকে বরিশাল মেডিকেলে না নিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা করানো কথা বলেন। তারা এ নিয়ে থানায় অভিযোগ দিতে নিষেধ করেন। তারা বলেন, বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে সমস্যা হতে পারে। ক্ষতির আশঙ্কা আছে। এজন্য সালিশে যে সিদ্ধান্ত দেয়া হবে, তা যেন মেনে নেই। এতে পরবর্তীতে আর সমস্যা হবে না।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে তার বাড়িতে সালিশ বসে। সেখানে জলিল হাওলাদার, তার ছেলে ছাত্রলীগ নেতা মো. ফেরদৌস ছাড়াও দিদার তালুকদার, সবুজ মেম্বার, মালেক মেম্বার, মামুন সরদার ও নাসির সরদারসহ গ্রামের কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। সালিশে জলিল হাওলাদারকে আমাদের কাছে ক্ষমা চাওয়ানো হয়। এরপর তাকে ছয় হাজার টাকা জরিমানা করেন তারা। সেই ছয় হাজার টাকা আমাদের দেয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘জলিল হাওলাদার নৌকার দল করেন। তার ছেলে মো. ফেরদৌস ছাত্রলীগ দল করেন। গ্রামে তাদের প্রভাব আছে। তাদের টাকা আছে। আমরা গরিব। সালিশের বিচার মেনে নেয়া ছাড়া আমাদের কোনো উপায় ছিল না। গ্রামে তাদের শত্রু হয়ে থাকা যাবে না। তাই বাধ্য হয়েই সালিশদারদের বিচার মাথা পেতে মেনে নিতে হয়েছে।’
এ বিষয় জানতে মুলাদী থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) বাদল হোসেনের মুঠোফোনে কল করা হলে তার শিশু সন্তান ফোন ধরে। বাদল হোসেনকে চাওয়া হলে সে জানায়, তার বাবা খাবার খাচ্ছেন। পরবর্তীতে আবার ফোন দেয়া হলে সে বলে বাবা ফোন রেখে থানায় চলে গেছেন।
অভিযুক্ত জলিল হাওলাদারের মুঠোফোনে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে মুলাদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মাকসুদুর রহমান জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত কোনো অভিযোগ থানায় দেয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)