মঙ্গলবার, মে ২১, ২০২৪

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

২৩ বছর পর জেল থেকে বেরিয়ে দেখেন পরিবারের কেউই বেঁচে নেই

শিশু ধর্ষণের এক মামলায় রেখা খাতুন (৪৪) গ্রেফতার হন ২০০০ সালের ৫ নভেম্বর। ধর্ষণে জড়িত দুই আসামিকে সহযোগিতা করার অপরাধে তাকে মামলার ৩ নম্বর আসামি করা হয়েছিল। ২০০৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রেখা খাতুনসহ তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।

২৩ বছর সাজা ভোগের পর রেখার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মেয়াদ ২০২৩ সালের ৩ ডিসেম্বর শেষ হয়। এরপরও জরিমানার এক লাখ টাকা পরিশোধ করতে না পারায় তাকে আরও তিন বছর কারাগারে আটক থাকতে হতো। সেই হিসাবে তাকে ২০২৬ সালের ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত লালমনিরহাট জেলা কারাগারে থাকতে হতো।

বিষয়টি জানতে পেরে রেখা খাতুনের মুক্তির জন্য এগিয়ে আসেন লালমনিরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মতিয়ার রহমান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ ও পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম স্বপন। তারা সম্মিলিতভাবে জরিমানার টাকা গত ৮ এপ্রিল ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করে দেন। এর ফলে ঈদের দুই দিন আগে ৯ এপ্রিল সকালে রেখা খাতুনকে লালমনিরহাট জেলা কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।

বের হয়ে জানতে পারেন বাবা, মা, দুই বোন, এক ভাইয়ের কেউই আর বেঁচে নেই। শুধু তাই নয়, স্বামী কোরবান আলী দ্বিতীয় বিয়ে করে নিরুদ্দেশ, বাবার ভিটেমাটিও বিলীন হয়েছে ধরলা নদীর গর্ভে।

রেখা খাতুনের বাবার বাড়ি ছিল লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ি ইউনিয়নের কলাখাওয়া ঘাট গ্রামে।

লালমনিরহাট জেলা কারাগারের জেল সুপার ওমর ফারুক জানান, রেখা খাতুন (৪৪) একজন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তিনি ২৩ বছর ৪মাস ৫দিন লালমনিরহাট জেলে কাটিয়েছেন। একটি ধর্ষণের ঘটনায় সহযোগিতা করার অপরাধে তিনি ২৩ বছর আগে গ্রেফতার হয়ে লালমনিরহাট জেলা কারাগারে যান। এরপর ওই মামলায় রেখা খাতুনসহ তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। সেই সঙ্গে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়। তবে রেখা খাতুন জরিমানার অর্থ পরিশোধ করতে না পারায় তার আরও তিন বছর কারাভোগ করতে হতো। তিনি মুক্তি পাবার আগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বাইরে অতিরিক্ত আরও চার মাস ছয় দিন কারাভোগ করেছেন। কারাগারে রেখা খাতুনকে হস্তশিল্পের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তিনি হস্তশিল্পের কাজ করে উপার্জন করতে পারবেন।

রেখার কারামুক্তির সময় উপস্থিত ছিলেন মেয়র রেজাউল করিম, লালমনিরহাট জেলা কারাগারের বেসরকারি পরিদর্শক দলের অন্যতম সদস্য ও নারী অধিকার সংগঠক ফেরদৌসী বেগম, কারাবন্দী নারী কয়েদিদের হাতে-কলমে কাজের প্রশিক্ষক ও স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা ‘বকুল ফুল’র নির্বাহী পরিচালক রশিদা বেগম প্রমুখ।

নিজের জীবন সম্পর্কে বলতে গিয়ে রেখা জানান, দারিদ্র্যের কারণে ১৩-১৪ বছর বয়সে রেখা খাতুনের বিয়ে হয়। তার স্বামী কোরবান আলী তখন ৩৪ বছরের যুবক। পেশায় দিনমজুর ছিলেন কোরবান। বিয়ের পরও দুই-তিন বছর বাবার বাড়িতে তারপর ১৯৯৮ সাল থেকে স্বামীর বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। রেখা ও তার স্বামী কোরবান আলী লালমনিরহাট শহরের খোচাবাড়ি এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।

তিনি আরও জানান, ১৫ বছর আগে রেখার বাবা ফজলু রহমান মারা যান। আর মা নূরনাহার বেগম মারা যান ১২ বছর আগে। তাদের কবরও গ্রামের বাড়িতে হয়নি। পাশের জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের কবির মামুদ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। ওই গ্রামে রেখার ছোট বোন টুম্পা বেগমের বিয়ে হয়েছে। কারামুক্তির পর টুম্পার শ্বশুরবাড়িতেই রেখা আপাতত আশ্রয় নিয়েছেন।

কারাগারের আগের ও পরের জীবন সম্পর্কে বলতে গিয়ে রেখা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি জেলে থাকার সময় আমার মা, বাবা, দুই বোন আর এক ভাইসহ আমার ২৫ আত্মীয় মারা গেছেন। আমি জেলে যাওয়ার পর আমার স্বামী কোরবান আলী দ্বিতীয় বিয়ে করে এখন কোথায় আছে, কেউ বলতে পারে না।’

রেখা আরও বলেন, ‘আমার বাবার বাড়িটা ধরলা নদীতে গেছে। স্বামীর অবর্তমানে বাবার বাড়িতে জীবনের বাকি দিনগুলোতে আশ্রয় নেওয়ার স্বপ্নটাও ভেঙে গেছে।’

২০০০ সালের ৫ নভেম্বর শিশু ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার হন রেখা। ধর্ষণে জড়িত দুই আসামিকে সহযোগিতা করার অপরাধে তাকে মামলার ৩ নম্বর আসামি করা হয়েছিল। ২০০৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রেখা খাতুনসহ তিন আসামি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দণ্ডিত হন। তবে রেখা খাতুন দাবি করেন, ‘শিশু ধর্ষণের ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানতাম না। এ মামলার অপর দুই আসামিকে আমি চিনি না। পরে জানতে পারি, তারা আমার স্বামীকে চেনেন।’

দণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি লালমনিরহাট শহরের নর্থ বেঙ্গল মোড় এলাকার দুলাল হোসেনের ছেলে আলমগীর হোসেন ও লালমনিরহাট শহরের কুড়াটারি গ্রামের ভোলা মিয়ার ছেলে ফরিদ হোসেন। রায় ঘোষণার সময় ফরিদ হোসেন পলাতক ছিলেন। পরে গ্রেফতার হন। ওই দুই আসামি চার-পাঁচ বছর জেল খেটে উচ্চ আদালত থেকে জামিন লাভ করেন। এর মধ্যে আলমগীর হোসেন দাম্পত্য কলহের জের ধরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ফরিদ হোসেন লালমনিরহাট শহরের একটি হোটেলে বাবুর্চির কাজ করেন।

নারী অধিকার সংগঠক ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘আমি রেখা খাতুনের পুরো জীবনের গল্প শুনেছি। কারাগারে থাকাকালে তার আচরণ ভালো ছিল। বিষয়টি পর্যালোচনা করে তাকে কারাগার থেকে মুক্ত করার ব্যবস্থা করেছি।’

ফেরদৌসী বেগম জানান, রেখার জরিমানা ১ লাখ টাকা হলেও তিনি অতিরিক্ত চার মাস ছয় দিন কারাগারে সাজা ভোগ করায় জরিমানা থেকে ১০ হাজার টাকা মওকুফ হয়ে যায়। এর বাইরে রেখা কারাগারে অবস্থানকালের শ্রমের বিপরীতে উপার্জন করেন ১৫ হাজার টাকা। ওই টাকা সমন্বয় হয়ে পরিশোধ করতে হতো ৭৫ হাজার টাকা। সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক ও পৌরসভার মেয়র সম্মিলিতভাবে ওই টাকা দিয়েছেন। ৯ এপ্রিল সকালে রেখা খাতুনকে লালমনিরহাট জেলা কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

লালমনিরহাট-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মতিয়ার রহমান জানান, তিনি রেখা খাতুনের বিষয়ে বিস্তারিত শুনেছেন। রেখা খাতুনের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলবেন।

একই রকম সংবাদ সমূহ

অভিনয়ের হাতেখড়ি নাট্যকার মানস পালের মেয়ে অরিত্রী পালের

আগামী ঈদের জন্য নির্মিত হলো টেলিফিল্ম ‘খেয়ালি বাতাস’। এটি রচনা করেছেন মানসবিস্তারিত পড়ুন

সাতক্ষীরার আশাশুনি থানার ওসি বিশ্বজিৎ অধিকারীকে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি

সাতক্ষীরার আশাশুনি থানার ওসি বিশ্বজিৎ অধিকারীকে নিজ থানার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েবিস্তারিত পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক

হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদোল্লাহিয়ানসহবিস্তারিত পড়ুন

  • জেনারেল (অব.) আজিজের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি আগেই জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
  • নিষেধাজ্ঞার ঘটনা সরকারকেও কিছুটা হেয় করে : জেনারেল (অব.) আজিজ
  • বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
  • রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পেয়ে যেভাবে দেশ ছেড়েছিলেন আজিজ আহমেদের ভাই জোসেফ
  • ‘ভোট চাহিয়া লজ্জা দিবেন না’
  • বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক শান্তি পদক ঘোষণা, পুরস্কার কোটি টাকা
  • কলকাতায় যেভাবে নিখোঁজ ঝিনাইদহের সংসদ সদস্য আনোয়ার
  • সাতক্ষীরা “নারী ও কিশোরীদের স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা” প্রকল্পের প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
  • দেবহাটায় সিভিএ গ্রুপের দক্ষতা বৃদ্ধি বিষয়ক প্রশিক্ষণ
  • দেবহাটা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ গ্রহণের প্রস্তুতি, কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে সামগ্রী
  • কালিগঞ্জে উন্নয়ন কার্যক্রমের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তিকরণ বিষয়ক মতবিনিময়
  • কলারোয়ায় বোরো ধান-চাল ক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন