মেঘ আর জোয়ার দেখলেই আঁতকে উঠে মেঘনা ও ভূলুয়া পাড়ের মানুষ
লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগরের বাসিন্দারা আকাশে মেঘ আর মেঘনার জোয়ার দেখলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে টানা ভারি বর্ষণ ও অরক্ষিত মেঘনা নদীর জোয়ারের পানিতে হাজার হাজার পরিবার এখন দিশেহারা। তারা এখন আকাশে মেঘ দেখলেই আঁতকে উঠে।
শনিবার (২৪ আগষ্ট) সারা দিন রামগতি ও কমলনগরে ভারি বৃষ্টি পাত হয়নি। রোদ উজ্জ্বল ছিল দিনের বেশিরভাগ সময়। মেঘনা নদীর জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকেনি। যে কারণে মেঘনাপাড়ের বাসিন্দারা কিছুটা স্বস্তিতে থাকলেও তাদের আতঙ্ক কাটেনি।
এদিকে, ভূলুয়া নদীর পূর্ব পাড়ে চর কাদিরা ইউনিয়নের বাসিন্দারা পানিতে ডুবে আছে। আগের মত অপরিবর্তিত রয়েছে অবস্থা সেখানকার অবস্থা।
খবর নিয়ে জানা গেছে, কমলনগরে চর কাদিরা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ জনপদ পানিতে তলিয়ে আছে। বাড়িতে বুক সমান পানি। বসতঘরে পানি ঢুকে পড়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব দেখা দিয়েছে। সব ডুবে থাকায় রান্না করা যাচ্ছে না। খাদ্যের অভাবে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে চরম দুঃখে-কষ্টে ও দুর্ভোগে আছেন চরাঞ্চলের বাসিন্দারা।
তবে, পানিবন্দি এসব মানুষের পাশে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি নিয়ে দাঁড়িছেন উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
এদিকে দুপুরে কমলনগরে এবং বিকালে রামগতিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী পানিবন্দি মানুষের মাঝে ত্রাণ সমাগ্রী বিতরণ করেন। তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সহ সম্পাদক, লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি ও কমলনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজান।
উপকূলীয় এলাকার লোকজন বলছেন, তারা জোয়ার আতঙ্কে ভুগছেন। মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ না থাকায় জোয়ার এলেই লোকালয়ে পানি ঢুকে ডুবিয়ে দেয় বাড়ি-ঘর। রাতে নির্ঘুম রাত কাটে এ জনপদের লাখো মানুষের। গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ভারি বৃষ্টির কারণে জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে শত শত ঘের ও হাজার হাজার পুকুরের মাছ। ফসলের মাঠ ডুবে, আমনের বীজতলার ধানের চারা নষ্ট হয়ে কৃষেকর সর্বনাশ হয়ে গেছে। গবাদিপশুর জন্য নেই নিরাপদ আশ্রয়, নেই খাদ্য। এমন বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে মেঘনা উপকূলের বসতিরা। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত নদীর রক্ষা বাঁধ বাস্তবায়নের দাবি করছেন।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ জামান খান বলেন, মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ চলমান। নদীর তীর রক্ষায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং হয়েছে। এখন বর্ষার কারণে কাজ করা যাচ্ছে না।
লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুরাইয়া জাহান বলেন, পানিবন্দি পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)