ভারতের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাকে স্বীকৃতি দানের দাবিতে এক বৃদ্ধার সংবাদ সম্মেলন
ভারতের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাকে কৌশলে
অমুক্তিযোদ্ধা বানানোর চক্রান্তের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন, কালিগঞ্জ উপজেলার ঠেকরা রহিমপুর গ্রামের মৃত. মীর
ছবিলার রহমান। লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, আমার ৫ ভাইয়ের মধ্যে একমাত্র আমিই ভারতীয় ট্রেনিং প্রাপ্ত প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে ভারতীয় টেটরা ক্যাম্পের তালিকা নং-১৪ এবং উক্ত টেটরা ক্যাম্পের কমান্ডার নুর
মোল্লা সাহেব তেরখাদা থেকে আমাকে ১১১৪ নং সনদপত্র ও প্রদান করেন।
যুদ্ধেরপর জীবিকার তাগিদে দীর্ঘদিন লঞ্চে চাকুরি করতাম। যে কারণে মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্তও হতে পারিনি। ১৯৮৮ সালে আমার যাবতীয় সনদপত্র
হারিয়ে যায়। সর্বশেষ উপজেলা পর্যায়ের মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ে অংশগ্রহণ করায় প্রস্তুতি সম্পন্ন করি। কালিগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাকিম আমার কাছে ৩ লক্ষ টাকা দাবি
করে বলেন টাকা দিলে যাচাই-বাছাই কমিটির প্রতিনিধির সামনে উপস্থিত হওয়ার লাগবে না। সে অনুযায়ী আমি অতিকষ্টে তাদের ১লক্ষ ১১ হাজার টাকা পরিশোধ করি। কিন্তু পুরো ৩ লক্ষ টাকা না দিতে পারলে আ: আব্দুল আমাকে জানায় ৫লক্ষ দেওয়ার অনেক লোক আছে। ১৯৯৬ সালের দিকে যাচাই বাছাইয়ের দিনে কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের অডিটরিয়ামের ভিতরে উপস্থিত থাকলেও আমাকে যাচাই বাছাই বোর্ডের সম্মুখে উপস্থিত হতে দেয় নাই। বিরতীর সময় আমাকে সরিয়ে দিল এবং বলল টাকা দিয়েছো তাহলে এখানে থাকার প্রয়োজন নাই। পরবতর্ীতে খসড়া তালিকা জারী হলে দেখা
যায় আমার নাম “ক” তালিকা থেকে “গ” তালিকায় অন্তভর্ূক্ত করেছেন।
নামের পাশের্ব মন্তব্য কলামে অনুপস্থিত লেখা দেখে আমি বিস্মিত হই। বিষয়টি আ: হাকিমকে জানালে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি, আমি বিষয়টি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রধান সচিব মোমিনুর রহমানকে
জানালে, আঃ হাকিম আমাকে ৯০ হাজার টাকা ফেরত দেন। উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটির প্রতিবেদনে উপস্থিত থাকা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের
প্রতিনিধি আ: হাকিম, মুবিম’র প্রতিনিধি সদস্য আ: বারী, প্রতিনিধি সদস্য আব্দুস সাত্তার জামুকায়, জেলা কমান্ডা এর প্রতিনিধি সদস্য আবুল হোসেন, সদস্য সচিব উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মাঈনউদ্দিন হাসান এবং জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এ কে ফজলুল হক উক্ত প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করে আমাকে ভারতীয় প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বকৃতি দিয়েছেন। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল তালিকার নম্বর ৬৮-উএ১১৪৭৩২৩, এছাড়াও ঢাকাস্থ ভারতীয় তালিকায় আমার নাম লিপিবদ্ধ আছে। আমি খুবই দরিদ্র ব্যক্তি ভিটা জামি বিক্রয় করেও সমিতি থেকে টাকা তুলে এবং পৌত্রের ডি.পি.এস এর অর্থ উত্তোলন করে, উক্ত টাকা
প্রদান করা সত্ত্বেও আমাকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তভর্ূক্ত করে নাই।
অথচ আমারই সহদর বড়ভাই মীর ছফির উদ্দীন মুক্তিযুদ্ধ না করা সত্ত্বেও তার নাম মুক্তিযোদ্ধা গেজেটভূক্ত করা হয়েছে। আমি সমাধানের জন্য সমাজসেবা
অফিসারের নিকট যায় তিনি কাগজপত্র দেখে বলেন আর কি কাগজ আছে দেন, আমি সকল কাগজপত্র দিলে তিনি দেখে বলেন সকল কাগজপত্র সঠিক
আছে, আপনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। সেই মুহুর্তে আঃ হাকিম সমাজসেবা অফিসার সাহেবের হাতে থাকা সকল কাগজপত্র নিয়ে নেন এবং বললেন আর কি কাগজপত্র আছে দেন। আমি নিরুপায় হয়ে হাকিমের সাথে
বাড়িতে দেখা করলে বলেন এই কাগজ আপনি কোথায় পেলেন। আপনি এই কাগজপত্র নিয়ে এখনি জামুকায় চলেযান। পরবতর্ীতে সেই কাগজপত্র নিয়ে
আমি সচিব মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মমিনুর রহমান সাহেবকে দেখালে তিনি আমাকে বললেন ‘জামুকাই যেতে হবে না, জাতীয় কাউন্সিলে যেতে
হবে না জুনের ভিতর আপনাদের একটা ব্যবস্থা করা হবে এবং এই রকম বহু মুক্তিযোদ্ধা বাদ গেছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)