অর্ধযুগ আগের কথা মনে করিয়ে দিলেন মরিনহো
ঠিক যেন ছয় বছর আগে সেই রাতের মতো।
সেদিন শিরোপাপ্রত্যাশী লিভারপুলকে খেলাতে নামিয়েছিলেন দলটার তৎকালীন কোচ ব্রেন্ডান রজার্স। প্রতিপক্ষ হোসে মরিনহোর চেলসি। ম্যাচটা জিতলে বা ড্র করলে শিরোপাদৌড়ে বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে থাকে লিভারপুল, ম্যানচেস্টার সিটির চেয়ে। ওদিকে ম্যাচের আগে লিভারপুলের চেয়ে পাঁচ পয়েন্ট পিছিয়ে থাকা চেলসি ততদিনে লিগ জয়ের আশা ছেড়ে দিয়েছিল, বাকী তিন ম্যাচে সিটি-লিভারপুলের সঙ্গে ব্যবধান কমানো সম্ভব না ভেবে বরং তিন দিন পর হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের প্রতি মনোনিবেশ করেছিল।
অর্থাৎ ম্যাচটা থেকে চেলসির পাওয়ার কিছুই ছিল না। কিন্তু রজার্সের পাওয়ার ছিল অনেক কিছু। আক্ষরিক অর্থেই দ্বিতীয় সারির এক দল নামিয়েছিলেন মরিনহো। যেসব খেলোয়াড় ম্যাচের পর ম্যাচ বেঞ্চে বসে থাকতেন, সেসব খেলোয়াড়দের এই ম্যাচে বাজিয়ে দেখেছিলেন মরিনহো, মূল খেলোয়াড়দের বিশ্রামে রেখে। শেষমেশ অতি-আত্মবিশ্বাসী রজার্সকে দ্বিতীয় সারির দল দিয়েই হারিয়ে দিয়েছিলেন মরিনহো।
গত রাতেও পরিস্থিতি অনেকটা একই রকম ছিল। কাল পরিক্রমায় লিভারপুল-চেলসি থেকে সরে এসে রজার্স-মরিনহো এখন যথাক্রমে লেস্টার সিটি ও টটেনহাম হটস্পারের ম্যানেজার। ম্যাচের আগে অষ্টম স্থানে থাকা মরিনহোর স্পার্সের লিগ থেকে এই মৌসুমে কিছু পাওয়ার নেই। কিন্তু এমনটা বলা যাবে না রজার্সের লেস্টারের ক্ষেত্রে। তাঁরা আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগে সুযোগ পাওয়ার জন্য চেলসি ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে কাঁধে কাঁধ দিয়ে লড়ছে। কাল মরিনহোকে হারাতে পারলে সে দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে যেত লেস্টার। কিন্তু মরিনহো থাকতে তা হবে কেন?
পোড় খাওয়া এই পর্তুগিজ ম্যানেজার আবারও বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর দলকে সাফল্যের সিঁড়ি হিসেবে কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। নিজেদের মাঠে লেস্টারকে তাই অনায়াসে হারালেন ৩-০ গোলে। জোড়া গোল করেছেন দলটার অধিনায়ক হ্যারি কেইন।
ম্যাচের ছয় মিনিট যেতে না যেতেই স্পষ্ট হয়ে যায়, বিনা যুদ্ধে জায়গা ছেড়ে দিতে আসেনি টটেনহাম। বামপ্রান্ত থেকে বেশ খানিকটা ফাঁকা জায়গায় বল পেয়ে বিপজ্জনকভাবে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে ঢুকে যান দক্ষিণ কোরিয়ার ফরোয়ার্ড হিউং মিন সন। ডান পায়ের জোরালো শটটা লেস্টার রাইটব্যাক জেমস জাস্টিনের গায়ে লেগে দিক পরিবর্তন করে ঢুকে যায় জালে।
এরপর শুধুই ‘কেইন শো’। প্রথমার্ধ শেষ হতে না হতেই আরও দুই গোল করে বসেন এই ইংলিশ স্ট্রাইকার। ৩৭ মিনিটে ব্রাজিল তারকা লুকাস মউরার এক সুযোগসন্ধানী পাস ডি-বক্সে খুঁজে নেয় কেইনকে। গোল করতে ভুল হয়নি ইংলিশ অধিনায়কের। এর ঠিক তিন মিনিট পরেই আবারও মউরা-কেইনের যুগলবন্দী। মউরার কাছ থেকে ডি-বক্সের বাঁ প্রান্তে বল পেয়ে যান কেইন। সেখান থেকে ডান পায়ের কোনাকুনি শটে বল জালে জড়ান কেইন। দ্বিতীয়ার্ধে আর কোনো গোল হয়নি।
ম্যাচ হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগে যাওয়ার দৌড়ে বেশ পিছিয়ে পড়ল লেস্টার। এক ম্যাচ বেশি খেলে তাদের পয়েন্ট এখন পঞ্চম স্থানে থাকা ইউনাইটেডের সমান (৬২)। ইউনাইটেড এই রাউন্ডে নিজেদের ম্যাচ জিতলেই টপকে যাবে লেস্টারকে। আর সে লক্ষ্যে ওয়েস্ট হামকে বেশ সহজ প্রতিপক্ষই বলা যায় ইউনাইটেডের জন্য!
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)