আবারও বেড়েছে চাল-তেল-ডালের দাম


কিছুটা কমার পর আবারও বেড়েছে চালের দাম। সেই সঙ্গে বেড়েছে ভোজ্যতেল ও মসুর ডালের দাম। পাশাপাশি পেঁয়াজ, আলু, জিরা, লবঙ্গের দামও বেড়েছে গত এক সপ্তাহে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বংলাদেশ’র (টিসিবি) প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
রাজধানীর শাহজাহানপুর, মালিবাগ বাজার, কারওয়ানবাজার, বাদামতলী বাজার, সূত্রাপুর বাজার, শ্যাম বাজার, কচুক্ষেত বাজার, মৌলভী বাজার, মহাখালী বাজার, উত্তরা আজমপুর বাজার, রহমতগঞ্জ বাজার, রামপুরা এবং মীরপুর-১ নম্বর বাজারের পণ্যের দামের তথ্য নিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে টিসিবি।
প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে চিকন (সরু), মাঝারি ও মোটা সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহে চিকন চালের দাম ৪ দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়ে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬৪ টাকা। মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের দাম ৬ শতাংশ বেড়ে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৬ টাকা। আর মোটা স্বর্ণা ও চায়না ইরি চালের দাম এক সপ্তাহে ২ দশমিক ২০ শতাংশ বেড়ে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা।
এখন চালের দাম বাড়লেও গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে সব ধরনের চালের দাম কিছুটা কমে। গত ২১ মে তৈরি করা টিসিবির প্রতিবেদনে বলা হয়, মাসের ব্যবধানে মিনিকেট ও নাজির চালের দাম ৪ দশমিক ৮০ শতাংশ কমে কেজি ৫৫ থেকে ৬৪ টাকা বিক্রি হচ্ছে। মোটা চালের দাম ৬ দশমিক ১২ শতাংশ কমে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা। আর মাঝারি মানের চালের দাম ১০ দশমিক ৭১ শতাংশ কমে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫২ টাকা।
অর্থাৎ কিছুটা কমার পর সপ্তাহ না ঘুরতেই চালের দাম আবার বেড়ে গেলে। অথচ এখন চালের ভরা মৌসুম। অবশ্য ভরা মৌসুমে চালের দাম বৃদ্ধি অনেক আগে থেকেই মানুষকে ভোগাচ্ছে। চালের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার নানা ছাড় দিলেও তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না।
চালের দাম অস্বাভাবিক বাড়তে থাকায় গত জানুয়ারিতে প্রথমে চাল আমদানির শুল্ক ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করে সরকার। পরবর্তীতে তা আরও কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।
বাসমতি ও অটোমেটিক চাল বাদে সব ধরনের চাল আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে গত ১৭ জানুয়ারি সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে সই করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
সরকার যখন চাল আমদানির শুল্ক কমানের ঘোষণা দেয়, সেসময় রাজধানীর বাজারগুলোতে খুচরা পর্যায়ে নাজারি ও মিনিকেট চালের কেজি বিক্রি হচ্ছিল ৬০ থেকে ৬৪ টাকা। মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের কেজি ছিল ৫৪ থেকে ৫৮ টাকা। আর মোটা চাল ছিল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। অর্থাৎ সরকারি ছাড় ও নতুন চাল ওঠার পরও চালের দাম কমানো সম্ভাব হয়নি।
এদিকে চালের পাশাপাশি গত এক সপ্তাহে সব ধরনের সয়াবিন তেল ও পাম অয়েলের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছে টিসিবি। প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, বোতলের ৫ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১ দশমিক ১৫ শতাংশ বেড়ে ৬৪০ থেকে ৬৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বোতলের এক লিটার সয়াবিন তেল ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেড়ে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর লুজ (খোলা) সয়বিন তেলের দাম ২ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২৪ থেকে ১২৬ টাকা।
অপরদিকে লুজ পাম অয়েলের দাম ৩ দশমিক ২৩ শতাংশ বেড়ে লিটার বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৪ টাকা। আর সুপার পাম অয়েলের দাম ৩ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১৪ থেকে ১১৮ টাকা। অবশ্য টিসিবি সয়াবিন ও পাম তেলের যে দাম উল্লেখ করেছে, খুচরা পর্যায়ে তার থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের তেল। খুচরা বাজারে বোতলের এক লিটার সয়াবিন তেল ১৫০ টাকার নিচে মিলছে না। এমনকি খোলা সয়াবিন তেল কিনতেও কেজিতে ১৪৫ টাকার ওপরে গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে মাঝারি ও বড় দানা মশুর ডালের দাম বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে আলুর দাম। বড় দানার মশুর ডালের দাম ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি দানার মশুর ডালের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। এতে মাঝারি দানার প্রতি কেজি মশুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯৫ টাকা। আর আলুর দাম ১৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়ে কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৯ থেকে ২৫ টাকা।
টিসিবি আরও জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ, আমদানি করা পেঁয়াজ ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ, আমদানি করা আদা ২ দশমিক ৩৩ শতাংশ, জিরা ২ দশমিক ৭৮ শতাংশ, লবঙ্গ ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ, এলাচ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং বয়লার মুরগির ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ দাম বেড়েছে।
অপরদিকে গত এক সপ্তাহে তেজপাতা, দেশি আদা ও প্যাকেট ময়দার দাম কমেছে বলে জানিয়েছে টিসিবি। প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, এক সপ্তাহে প্যাকেট ময়দার দাম কমেছে ১ দশমিক ১৫ শতাংশ। আর দেশি আদার ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং তেজপাতার ১ দশমিক ৯২ শতাংশ দাম কমেছে।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
