এবার কাশ্মীর হামলাকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলায় ভারতে গ্রেপ্তার বিধায়ক


ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার নেপথ্যে নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মন্তব্য করে গ্রেপ্তার হয়েছেন আসাম রাজ্যের একজন বিধায়ক।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্য থেকে বিরোধী দল অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (এআইইউডিএফ) বিধায়ক আমিনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলওয়ামা হামলা (২০১৯) এবং সদ্য ঘটে যাওয়া পেহেলগাম হামলাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া এক মন্তব্যে আমিনুল ইসলাম এসব অভিযোগ তোলেন।
তার ওই ভিডিও ভাইরাল হলে আসাম পুলিশ তদন্তে নামে এবং বিভ্রান্তিকর ও উসকানিমূলক মন্তব্যের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরে সে মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আসাম পুলিশের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানানো হয়, ধিং আসনের বিধায়ক আমিনুল ইসলামের মন্তব্যে জনমনে বিভ্রান্তি ও উত্তেজনা ছড়াতে পারে- এমন আশঙ্কায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন, আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী হামলার পরে যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে রক্ষার চেষ্টা করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। বিধায়ক আমিনুল ইসলামের বক্তব্য পাকিস্তানপন্থি মনোভাব প্রকাশ করে, তাই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া বিধায়ক আমিনুল ইসলামের দল এআইইউডিএফের প্রধান মাওলানা বদরউদ্দিন আজমল বলেছেন, আমিনুলের মন্তব্য দলের বক্তব্য নয়। তিনি জানান, সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম নেই। যারা সন্ত্রাস ছড়ায় তারা ইসলাম ও মুসলমানদের অপমান করে। আমরা সরকারের পাশে আছি এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একত্রিত।
এছাড়া ভারতের নাগরিক সায়ক ঘোষ চৌধুরীও সামাজিক মাধ্যমে নিজের পোস্টে দাবি করেন, কাশ্মীর হামলার পেছনে সরকারের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের হাত থাকতে পারে। তিনি লেখেন, বর্তমান প্রযুক্তির যুগে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতির পরও কিভাবে জঙ্গিরা প্রবেশ করে হামলা চালাতে পারে, তা প্রশ্নবিদ্ধ।
সায়ক ঘোষের মন্তব্যের পাশাপাশি আরও অনেক ভারতীয় নাগরিকও হামলার ঘটনাকে পরিকল্পিত এবং সরকারের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা বলে উল্লেখ করেছেন। অনেকে দাবি করেছেন, ভারতের ভেতরেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সংঘর্ষ উসকে দেওয়া হতে পারে।
প্রসঙ্গত, কাশ্মীর অঞ্চল নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। উভয় দেশই পুরো কাশ্মীরকে নিজেদের অংশ দাবি করে, তবে তা তারা আংশিকভাবে শাসন করে আসছে।
জম্মু-কাশ্মীরের ‘বৈসরান’ এলাকাটিকে স্থানীয়রা ভালোবেসে বলেন ‘মিনি সুইজারল্যান্ড’। এলাকাটি পেহেলগাম থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার ওপরে অবস্থিত একটি মনোরম উপত্যকা। বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে এই এলাকা ভরে ওঠে দেশি-বিদেশি পর্যটকে।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
