ডাক্তার সংকটে কলারোয়া হাসপাতাল, চিকিৎসাসেবা ব্যাহত
মোস্তফা হোসেন বাবলু: সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা হাসপাতালে ডাক্তার সংকটে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলার সাড়ে ৩ লক্ষ লোকের একমাত্র চিকিৎসা সেবার কেন্দ্র হল এই হাসপাতাল। তবে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ৩৩ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও বর্তমানে মাত্র ৫ জন ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা সেবা চলছে। এতে রোগীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। মাসের পর মাস এমন বেহাল অবস্থা চললেও সমাধানের আলো দেখা যাচ্ছে না এই হাসপাতালে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা হাসপাতাল ও ইউনিয়নের ক্লিনিকের সহকারী সার্জন, মেডিক্যাল অফিসার, ডেন্টাল সার্জন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, গাইনি ও শিশু চিকিৎসক, ১২টি ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিক্যাল অফিসারসহ অন্যান্য বিভাগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট পদ রয়েছে ৩৩ টি।
এদের মধ্যে ইউনিয়ন বর্তমানে ০৮ জন কর্মরত আছেন। এদের মধ্যে ৫ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৮ জন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এদের একজন উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা (টিএইচও), দুজন মেডিক্যাল অফিসার ও একজন বিডিএস ডেন্টাল সার্জন। তবে টিএইচও’কে সর্বদা প্রশাসনিক ও দাফতরিক বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। আর শুধুমাত্র দাঁতের চিকিৎসায় নিয়োজিত থাকেন ডেন্টাল সার্জন। ফলে মাত্র ৫ জন মেডিক্যাল অফিসার দিয়েই সামগ্রিক চিকিৎসাসেবা করাতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
হাসপাতাল সূত্র আরও জানায়,৫ জনের মধ্যে ২ জন চিকিৎসক হলেন আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. শফিকুল ইসলাম ও ১জন টিএইচও ডাক্তার মাহবুবুর রহমান সান্টু।
আর ৩ জন চিকিৎসক নিয়মিত আউটডোর চিকিৎসা, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের চিকিৎসা, জরুরি বিভাগসহ সামগ্রিক চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।মাঝে মধ্যে আউটডোরে রোগীর সংখ্যা অতিরিক্ত হলে দু’জন ডাক্তারের পাশাপাশি টিএইচও’কেও আউটডোরে চিকিৎসাসেবা দিতে দেখা যায়। তাদের (ডাক্তার) বিশেষ কারণে ছুটিতে থাকলে রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সবমিলিয়ে এই সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার নিয়োগ জরুরি হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা.শফিকুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসক সংকটে রোগীরা যেমন বিড়ম্বনায় পড়ছেন ঠিক তেমনি নিজেরাও ভোগান্তি পড়ছি। এখানে ডাক্তার পদায়নের বিকল্প নেই।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডাক্তার মাহবুবর রহমান বলেন, ‘ডাক্তার ছাড়া আমরা চলতে পারছি না। জরুরি ভিত্তিতে এখানে ডাক্তার প্রয়োজন।’
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা নিয়ামত আলী, মোজাম্মেল হক,হাসিনা বানুসহ অনেকে জানান- সরকারি হাসপাতালে এসেছেন বড় ডাক্তার দেখাবেন বলে। কিন্তু ডাক্তার সংকট চরমে। হাসপাতাল ছাড়া বর্তমানে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ার অন্যতম উপযুক্ত জায়গা হলো ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো।
সাধারণ রোগীরা জানান, হাসপাতালে ওয়ার্ড বয়, নার্স দিয়ে চলছে কাটা-ছেঁড়া ব্যান্ডেজের কাজ। সিজারসহ অন্যান্য অপারেশন বন্ধ রয়েছে। এক্সরে, প্যাথলজি চলছে ধুকে ধুকে।মাসের পর মাস এই সংকট থাকলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। বিষয়টি নিরসনে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দায়িত্ববান হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে সচেতন মহল।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)