সোমবার, মার্চ ১৭, ২০২৫

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

মণিরামপুরের ঋষি পল্লিতে তৈরি টায়ার-টিউবের শিল্পপণ্য বিদেশে রপ্তানির সম্ভাবনা

ঋষি পল্লির দেড়শ পরিবারের নিপুণহাতে তৈরিকৃত পুরাতন টায়ার-টিউবজাত শিল্পপণ্য অপার সম্ভাবনাময় গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক শিল্পখাত হিসেবে দুয়ারে কড়া নাড়ছে। দেশের মধ্যে একমাত্র যশোরের মণিরামপুরের বালিয়াডাঙ্গা খানপুর ঋষি পল্লিতে পুরাতন টায়ার-টিউব থেকে রিংপাতা, গ্যাসকেট, পাওয়ার টিলারের পর্দা, ডিস্ক, কফলিনসহ দেড়শ প্রকারের শিল্পপণ্য তৈরি হচ্ছে।

এ পেশায় জড়িত কারিগরদের সরকারিভাবে অর্থনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা দিলে এসব শিল্পপণ্য দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশে রপ্তানির নতুন দ্বার উন্মোচিত হতে পারে। তাদের হাতের তৈরিকৃত এসব শিল্পপণ্য দেশের চাহিদা মেটায় আমদানি নির্ভরতা কমে গিয়ে শুন্যের কোঠায় ঠেকেছে।

চীন ব্যবসায়ীরা এ কারখানায় মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে ব্যর্থ হওয়ায় কারখানা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়।

সম্প্রতি বিআরডিবি (বাংলাদেশ পল্লি উন্নয়ন বোর্ড) এই ঋষি পল্লি’র কারিগরদের স্বল্প সুদে ঋণ দিয়ে পৃষ্টপোষকতায় এগিয়ে এসেছে। ইতোমধ্যে এই ঋষি পল্লিকে ‘জীবিকায়ন শিল্পপল্লি’ হিসেবে ঘোষণা করেছে বিআরডিবি। গত ১ এপ্রিল-২২ এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঋষি পল্লিকে ‘জীবিকায়ন শিল্পপল্লি’ হিসেবে উদ্বোধন করেন। এ অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ উপস্থিত ছিলেন।

সরেজমিন ঋষি পল্লিতে গেলে পুরাতন টায়ার-টিউবজাত শিল্পপণ্য উৎপাদনের চিত্র চোখে পড়ে। গৃহকর্তা, গৃহিণী, ছেলেসহ পরিবারের প্রায় সবাই এসব পণ্য তৈরিতে কাজ করতে দেখা যায়।

কথা হয় কারিগর নিশিকান্ত দাসের সঙ্গে। তিনি জানান- বংশপরম্পরায় বাপ-ঠাকুরদারা টায়ার-টিউব থেকে এক ধরনের স্যান্ডেল তৈরি করতেন। এরপর ৮০’র দশকের শুরুতে ভারত থেকে আসা কিলোস্কার ডিজেল মেশিন, হারিকেন,ল্যাম্প ও রাইস মিলের পলতে/পর্দার (সুতার তৈরি) ধারণা থেকেই পুরাতন টায়ার-টিউব থেকে এসব পণ্য তৈরি শুরু হয়।

তিনি আরও জানান- পুরাতন টায়ার-টিউব কিনতে মোটা অংকের অর্থ বিনিয়োগ করতে হয়। যার সিংহভাগই বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে ঋণ নিয়ে কিনতে হয়। এতে লভ্যাংশের বিরাট অংশ চলে যায় এনজিওর কিস্তি দিয়ে। এতে করে তাদের যে তিমিরে সেই তিমিরেই থাকতে হচ্ছে। সরকার ব্যাপকভাবে অর্থনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা দিলে একদিকে এ পেশায় জড়িতদের ভাগ্য উন্নয়ন ঘটতো। অপরদিকে তৈরিকৃত এসব শিল্পপণ্য দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানির নতুন দ্বার উন্মোচিত হতো।

কারিগর লিপিকা দাস জানান- তার বিয়ের পর থকে তিনি এ পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন। নিশিকান্ত দাসের ছেলে প্রান্ত দাস সরকারি পলিটেকনিক কলেজ থেকে সিভিল-এ ডিগ্রি নিয়ে পরে বিএসসি করেছেন। ছেলে প্রান্ত দাস চাকরির পিছে না দৌড়িয়ে বাপের সঙ্গে এসব পণ্য তৈরিতে সহযোগিতা করে চলেছেন।

প্রান্ত দাস জানান- বিশেষ কায়দায় তৈরিকৃত বাটাল, বেয়ারিং দিয়ে নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় সূক্ষ্মভাবে টায়ার-টিউব থেকে এসব পণ্য তৈরি করা হয়। একটি পুরাতন টায়ার-টিউব কেনাসহ মজুরি খরচ পড়ে সাড়ে ৯শ টাকা। আর একটা টায়ার-টিউব থেকে তৈরিকৃত শিল্পপণ্য ১২শ টাকায় বিক্রি হয়। প্রতিদিন একজন কারিগর গড়ে ৪টি টায়ার-টিউবের কাজ করতে পারেন। রিংপাতা হচ্ছে সবচেয়ে চাহিদা সম্পন্ন শিল্পপণ্য। এটি ঢাকা ওয়াসায় (ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ) ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

নিশিকান্ত দাস আরও বলেন- ১৯৯৬ সালে এসব শিল্পপণ্য তৈরির জন্য চট্টগ্রামে চীনা ব্যবসায়ীরা কারখানা স্থাপন করে। কিন্তু ওই কারখানায় এখানকার মতো নিখুঁত শিল্পপণ্য তৈরি হচ্ছিলো না। যে কারণে একাধিকার কারখানার চীনা ব্যবসায়ীরা তাদেরকে মোটা অংকের মাসিক বেতনে চাকরির টোপ দেয়। কিন্তু পল্লির কেউ তাতে সাড়া দেয়নি বিধায় মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে ব্যর্থ হওয়ায় চীনা কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়।

কারিগর শক্তি কুমার দাস বলেন- পল্লির লোকজন বংশপরম্পরায় দরিদ্র। এ শিল্পপণ্য তৈরিতে ব্যাপক বিনিয়োগের দরকার। এজন্য বাধ্য হয়ে বিভিন্ন এনজিও/সমিতি থেকে চড়া সুদে লোন নিয়ে ব্যবসায় বিনিয়োগ করা হয়। কিন্তু লভ্যাংশের সিংহভাগ চলে যায় এনজিও/সমিতির কিস্তি দিয়ে।

উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (বিআরডিবি) আব্দুস সবুর জানান- তিনি গত পাঁচ বছর ধরে এই পল্লিতে সীমিত আকারে ঋণ দিয়ে আসছিলেন। তাদের তৈরিকৃত এসব পণ্য বাজারে চাহিদা থাকায় তাদের স্বল্প সুদে আরও বেশি ঋণ দিয়ে পণ্য তৈরিতে সহায়তার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি স্থানীয় এমপি প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যকেও অবহিত করেন। এরপর একে একে বিআরডিবির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সরেজমিন পল্লি পরিদর্শন করেন। গত ১ এপ্রিল এই ঋষি পল্লিকে ‘জীবিকায়ন শিল্পপল্লি’ হিসেবে উদ্বোধন করেন প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান বলেন- তিনিও নিজে পল্লির কারিগরদের সঙ্গে কথা বলেছেন। চাহিদা সম্পন্ন এসব শিল্পপণ্য ক্রমান্বয়ে দেশের অর্থনীতির নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

একই রকম সংবাদ সমূহ

মনিরামপুরে বালতির পানিতে পড়ে শিশুর মৃত্যু

হেলাল উদ্দিন, মনিরামপুর (যশোর): যশোরের মনিরামপুরে বালতির পানিতে পড়ে আরশি খাতুন নামেরবিস্তারিত পড়ুন

মনিরামপুরের খেদাপাড়ায় তেলের ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড, ব্যবস্থাপক দগ্ধ

হেলাল উদ্দিন, মনিরামপুর (যশোর): যশোরের মনিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া বাজারের তেলের ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডেরবিস্তারিত পড়ুন

রাজগঞ্জে কলেজ শিক্ষক আলমের ইন্তেকাল, শোক প্রকাশ

হেলাল উদ্দিন : যশোরের মনিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া সুবজপল্লী মহাবিদ্যালয়ের ইংরেজী প্রভাষক শাহবিস্তারিত পড়ুন

  • মনিরামপুরে গোয়ালের তালা ভেঙ্গে বিধবা নারীর ৬ গরু চুরি
  • যশোরের রাজগঞ্জে বোতল সয়াবিন তেল খুলে অতিরিক্ত দামে বিক্রি!
  • যশোর-খোরদো রোডে বাস চলাচল বন্ধ; ভোগান্তিতে যাত্রীরা
  • মনিরামপুরে রমজানকে স্বাগত জানিয়ে ভ্রাম্যমান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
  • কলারোয়ায় এই প্রথম অনুষ্ঠিত হলো ডে-নাইট ভলিবল টুর্নামেন্টে
  • যশোরের রাজগঞ্জে রাস্তার পাশের মৃত কৃষ্ণচুড়া গাছ যেনো মরণ ফাঁদ
  • মনিরামপুরের রাজগঞ্জ হাইস্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা
  • মনিরামপুরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ
  • মনিরামপুরে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত প্রায় ১২ শ’ বিঘা ফসলি জমি
  • যশোরের রাজগঞ্জ হাইস্কুলের শিক্ষক সাগরের ই*ন্তে*কা*ল, শোক প্রকাশ
  • যশোরের রাজগঞ্জে ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীরের ই*ন্তে*কা*ল
  • মনিরামপুরে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মানাসিক ভারসাম্যহীন নারীর মৃত্যু