শীত শেষ হলেও নড়াইলে এখনো অতিথি পাখির কিচিরমিচির
নড়াইলে শীত শেষ হলেও এখনো অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দে সকাল-সন্ধ্যা মুখরিত। নড়াইলের বাসগ্রম,বগুড়া-গোপালপুর বিলে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অপরিকল্পিতভাবে মৎস্য ঘের খননের কারণে এখানে রয়েছে পাখিদের পর্যাপ্ত খাবার। এ কারণে প্রকৃতির নিয়মে এবার বিলে এখনোও অতিথি পাখি রয়ে গেছে। শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে প্রতি বছরের মতো এবারও এখানে অতিথি পাখির আগমন ঘটে। কিন্তু দিন পঞ্জিকায় শীত ঋতু শেষ হলেও অতিথি পাখি এখনো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিলে। বসন্তের আগমনে প্রকৃতির নতুন রূপকে আরও ফুটিয়ে তুলেছে তারা।নীরব নিস্তব্ধ এই বিল এলাকা এখন নানা রংয়ের পাখির কিচিরমিচির ধ্বনিতে মুখরিত। যেন এক নৈসর্গিক আবহাওয়া। গোধূলি শেষে যখন সূর্য ডুবু ডুবু অবস্থা, তখন মাথার ওপর দিয়ে উড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি। এদের কলকাকলিতে বিশাল জলাশয় প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। উড়ে গিয়ে বসে বিল এলাকার শতশত ঘেরের পাড়ের বিভিন্ন গাছের ডালপালায়। রাতের বেলাও থাকে ওখানেই। এসব পাখি দেখতে সকাল-বিকাল বিল এলাকায় অসংখ্য দর্শনার্থী ভিড় করে। তবে শৌখিন ও পেশাদার শিকারিরা অবাধে এসব পাখি শিকার করেছে। শিকারে ধরা পরা পাখি শহর ও গ্রামের হাটবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে গোপনে বিক্রি করছে তারা। কিন্তু এ নিয়ে প্রশাসনের কোনো নজরদারি নেই।বিল এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অপরিকল্পিতভাবে মৎস্য ঘের খননের ফলে এখানে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এই পানিতে মাছের আনাগোনা রয়েছে। আর এই মাছ খেতে মাঠে নামছে বক, কালকোচ, পানকৌড়ি, শামুকখোল ও বালিহাঁসসহ বিভিন্ন জাতের পাখি। চোরা শিকারিরা বিষটোপ, জাল, বড়শি, এয়ারগান ও বন্দুক দিয়ে এসব পাখি শিকার করছে।
বগুড়া-গোপালপুর বিলে গিয়ে দেখা যায়, হাজারও নাম না জানা-অচেনা অতিথি পাখি। এসব পাখির কিচিরমিচির শব্দে সকাল-সন্ধ্যা মুখরিত থাকে বিল। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই বিলের ঘেরের পাড়ের অসংখ্য গাছের ডালপালায় আশ্রয় নেয় অতিথি পাখিরা। ভোর হলেই আবার খাবারের সন্ধানে বিলের পানিতে ভিড় জমায় তারা।
গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা লিয়াকত শেখ বলেন,‘আমার নিজের প্রায় তিন একর আয়তনের ঘেরের পাড়ের রেইন ট্রি, মেহগনি ও নারকেল গাছে প্রতিদিন বিকালে অসংখ্য পাখি বসে। ভোর বেলা আবার বিলের পানিতে খাবারের সন্ধানে যায়। এটি সত্যিই মনোমুগ্ধকর ও সুন্দর দৃশ্য। মাঝে মাঝে চোরা শিকারীরা পাখি শিকার করে নিয়ে যায়। তবে এ ব্যাপারে প্রশাসনের কোনো নজরদারি নেই।’
জানাতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এবার শীতের স্থায়িত্ব বেড়ে যাওয়ায় হয়তো এখনো পাখিগুলো বিলে অবস্থান করছে। আমাদের দেশে অতিথি পাখির আগমন একটি গর্বের বিষয়। পাখিদের যেন কেউ ক্ষতি না করে সে দিকে লক্ষ্য লাখতে হবে।’
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)