কলারোয়ায় গরুর চামড়া ২০০ টাকা, ছাগলের চামড়া কিনছেন না কেউ
কোরবানির পশুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও সাতক্ষীরার সব উপজেলাতে চামড়ার দামে ধস নেমেছে। বিক্রেতা ও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ চামড়া ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে কোরবানির পশুর চামড়ার দামে এই বিপর্যয় হয়েছে।
শনিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কলারোয়া পৌরসভার অধিকাংশ এলাকার চামড়ার অস্থায়ী বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ছোট গরুর চামড়া ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, মাঝারি আকারের প্রতিটি চামড়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকা এবং বড় চামড়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ছাগলের চামড়া কোনও ব্যাপারী কিনতে রাজি হচ্ছেন না। যদিও কেউ বিক্রি করতে পারলেও পাচ্ছেন নাম মাত্র মূল্য ১০ থেকে ৩০ টাকা।
উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের গ্রাম ডাক্তার নজরুল ইসলাম জানান, কুরবানীর উদ্দেশ্যে তারা ০৩ ভাই তিনটি গরু ও ০২টি ছাগল জবেহ করেন গরু তিনটির চামড়া ১৫০ ও ২০০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারলে ও ছাগলের চামড়া অবিক্রিত রয়ে গেছে।
পৌর এলাকার তুলসিডাঙ্গা গ্রামের আনসার আলী অপেক্ষা করছিলেন ভালো দাম পেলে চামড়া বিক্রি করবেন। সেই অপেক্ষা শনিবার দিন পার হয়ে রবিবার আসলে ও বিক্রি না হওয়ায় রাগে ক্ষোভে ছাগলের চামড়া রবিবার মাটিতে পুতে ফেলেছেন।
পৌর এলাকার বাসিন্দা টেলিকম ব্যবসায়ী আবু সাঈদ বলেন, ‘আগে কোরবানি দেওয়ার আগেই চামড়ার দাম বাসায় দিয়ে যেতো। যেন অন্য কাউকে চামড়া না দেই। এবার আমার ১২০০০ টাকা মূল্যের ছাগলের চামড়ার সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ কোনও দাম বলেনি অবশেষে সন্ধ্যায় নিজে চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছে ১০ টাকা মূল্যে বিক্রি করেছি।
আমলাপাড়া বড় মাদরাসার শিক্ষক মো. তারেক হাসান বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৪৫৫ পিস গরুর চামড়া পেয়েছি। এখানে ব্যাপারীরা চামড়া প্রতি ১৫০ টাকা দাম দিতে চাইছে। ছাগলের চামড়া বিনামূল্যেও নিতে রাজি না। বিক্রি না করে এগুলো ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি, চামড়া প্রতি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা দাম পাব।’
শহরের এলাকার চামড়া ব্যবসায়ী ঈসমাইল হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ০১ লাখ থেকে ০২ লাখ টাকা দামের আটটি গরুর চামড়া ২৫০ টাকা প্রতিটি বিক্রি করতে হয়েছে। ছাগলের ০৪টি চামড়া গরুর চামড়ার সঙ্গে বিনামূল্যে দিয়েছি।
পৌর এলাকার মির্জাপুরে বসবাসরত প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম যুগান্তরকে জানান, ব্যাপারীরা সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম কমিয়ে দিয়েছেন। কেউ ২৫০ টাকার ওপরে দাম বলছেন না। বাধ্য হয়ে সকলকে কম দামে চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে, যার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে গরীবেরা।
আড়তদার আবুল কালাম বলেন, ‘গরুর চামড়া যেটা খুব ভালো সেটা তিন শ টাকা দিয়ে কিনছি। অধিকাংশ চামড়া নষ্ট করে ফেলেছে। যার জন্য কম দাম বলা হচ্ছে। এগুলো ঢাকায় নিয়ে গেলে আমরাও ভালো দাম পাব না। ঢাকায় ছাগলের চামড়া নেয় না,তাই আমরাও কিনছি না। কেউ কেউ গরুর চামড়ার সঙ্গে এমনিতেই ছাগলের চামড়া দিয়ে যাচ্ছে। তখন ১০ থেকে ২০ টাকা দেওয়া হচ্ছে। এখানে আমরা যেগুলো কিনছি সেগুলো লবণ ছাড়া। প্রতিটি চামড়ায় পরিবহন খরচ, লবণ খরচ, শ্রমিকের মজুরিসহ আরও ১২০ থেকে ১৫০ টাকা খরচ হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)