কলারোয়ার মডেল মসজিদ: উদ্বোধন হয়েছে আড়াই বছর আগে, ‘অসম্পন্ন’ এখনো; ছাগল-কুকুরের বিচরণ!
মোস্তফা হোসেন বাবলু: সাতক্ষীরার কলারোয়ায় মডেল মসজিদের উদ্বোধনের প্রায় আড়াই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও নামাজের জন্য প্রস্তুত হয়নি। উপজেলার দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদটি স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের ও সাধারণ মুসাল্লিদের দাবি- গণপূর্ত বিভাগের খামখেয়ালিপনা ও অব্যাহত গাফিলতির কারণে নামাজের জন্য আদৌ চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
সরেজমিনে দেখা যায়, মসজিদটি হয়ে উঠেছে ছেলে মেয়েদের বিনোদন কেন্দ্র। চত্বরজুড়ে চোখে পড়ে অসংখ্য বেওয়ারিশ কুকুর, ছাগল ও গরুর আনাগোনা। কুকুর-ছাগলের অবাধ বিচরণের বিষয়টি স্থানীয় সচেতন ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অবমাননাকর এমন দুরবস্থায় বিষয়টি স্থানীয় জনমনকে ভাবিয়ে তুলেছে।
মসজিদ ভবনের ইলেকট্রিক সাইড ও মসজিদের মেঝের কিছু কাজ বাকি আছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহুরুল ইসলাম জানান, মসজিদটির ভারী কাজগুলো সম্পন্ন হলেও এখনও ২৫ ভাগ কাজ অবশিষ্ট রয়েছে। ফলে ইচ্ছা থাকলেও সম্ভব হয়ে উঠছে না নামাজ আদায়ে।
তিনি আরও জানান, সর্বশেষ খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে বাস্তবায়নকারী গণপূর্ত বিভাগে জানানো হলেও অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করতে গড়িমসি করছে তারা। ইতোমধ্যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স হাসান ট্রেডার্সের মালিক অতিরিক্ত বরাদ্দের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে। আগামি দুই/এক মাসের ভিতরে আবেদনটি পাস হলে তারা পুনরায় কাজ শুরু করবেন। এই কারণে মসজিদটির কার্যক্রম শেষ না করায় নামাজ শুরু করতে বিলম্ব হচ্ছে। তারা আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদটি এখনও আমাদের নিকট হস্তান্তর করেনি।
এদিকে গত জুম্মার নামাজের দিন কলারোয়া উপজেলা চত্বরের অস্থায়ী মসজিদে ইউএনও জহুরুল ইসলাম মুসল্লীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সম্ভব হলে আগামি জুম্মা থেকেই অসমাপ্ত নির্মিত মডেল মসজিদের একটি ফ্লোরে আমরা নামাজ শুরু করতে পারি।
স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষে ইউএনও তার প্রতিক্রিয়ায় আরও জানান, তিনি মসজিদটির সার্বিক কার্যক্রম শুরু করার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।
তবে স্বল্প সময়ের মধ্যে নামাজসহ সার্বিক কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
দরজা-জানালাসহ আনুষঙ্গিক মসজিদটির সর্বশেষ অবস্থা জানতে গণপূর্ত বিভাগ, সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলী কাউছার মো: আব্দুল ওযাহিদ মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কল রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, নির্মাণকাজসহ যাবতীয় কাজ অসম্পন্ন রেখেই গত ২০২২ইং সালের ৩০ অক্টোবর মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি উদ্বোধন করা হয়। সেদিন সারাদেশে ৪র্থ পর্যায় কলারোয়াসহ নির্মাণাধীন ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হয়। গণভবন থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উপজেলা প্রশাসনের আয়াজনে এদিন মসজিদটি উদ্বোধন করা হয়।
প্রায় ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলা পরিষদের অফিসের সামনে নির্মিত মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের হলরুমে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. মোস্তফা লুৎফুল্লাহ।
কিন্তু বড়ই পরিতাপের বিষয় উদ্বোধনের আড়াই বছর পেরিয়ে গেছে। মসজিদটি এখনও চরম অযত্ন আর অবহেলায় ধর্মীয় কার্যক্রমহীন স্থবির হয়ে পড়ে রয়েছে। ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ ক্ষুব্ধ সচেতন এলাকাবাসী দ্রুত কাজ সম্পন্ন করে নামাজ-বন্দেগিসহ অন্যান্য কার্যক্রম শিগগির দ্রুত কাজটি শেষ করতে সংমিষ্ট দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তির যথাযথ প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)