কলারোয়ায় ননএমপি শিক্ষকদের দুর্দশা, শিক্ষক এখন রাস্তার ধারে চায়ের দোকানদার!
ননএমপিও শিক্ষক, এখনো বেতন হয়নি। সংসার চলে না, বেঁচে থাকার তাগিদে বেঁছে নিয়েছেন অন্য পেশা, তিনি এখন চায়ের দোকানদার। যে আঙিনায় কোমলমতি ছেলে মেয়েদের জন্য শিক্ষা দেওয়া হয়, এখন সেই আঙিনায় চলছে একজন শিক্ষকের চায়ের দোকান। এটা হল ভাগ্যের নির্মম পরিহাস।
২০১০ সালে সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার কাজীরহাট ডিগ্রী কলেজে বাংলা বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগ পেয়েও আজও কোন বেতন পাননি ভোলা নাথ মন্ডল।
ভোলানাথ মন্ডলের মতো ননএমপিও শিক্ষকদের মানবেতর জীবন ও হৃদয়ভাঙ্গা কান্না কবে শুনতে পাবে সরকার সেটা কেউ জানে না। উপজেলার বোয়ালিয়া মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি স্তরের শিক্ষকদেরও একই অবস্থা। অসহায়ত্বের নির্মম পরিহাসে তারা আজ অনেকেই মুখ লুকিয়ে চলেন।
একজন সাধারণ ঘরের চা বিক্রেতা তার অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও তার নিজের মেধার জোরে আজ ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।
কলারোয়া সরকারী কলেজ ক্যাম্পাসে মেইনরোডের ধারে প্রভাষক ভোলানাথ মন্ডলের চায়ের ও আখের দোকান। তিনি আজ একজন চা বিক্রেতা। কিন্তু এমনটা হওয়ার কথা ছিল না তার। কী সেই ঘটনা? ঘটনাস্থল সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলায়। চাকুরী জীবনে বেতন না পেয়ে হতাশ হয়ে শেষে সংসারের বোঝা কাঁধে নিয়ে ফুটপাতে দোকান খুলে বসলেন প্রভাষক ভোলানাথ মন্ডল। ছোটবেলা থেকে মেধাবী ভোলানাথ ২০০৩ সালে খুলনা বি.এল কলেজ থেকে মাস্টার্স পাশ করেন। ভোলানাথ মন্ডল শ্যামনগর উপজেলার কৈইখালীর প্রভাশ চন্দ্র মন্ডল ছেলে। তিনি অভাব অনাটনের সংসারে ধার দেনা করে শিক্ষিত হয়েছেন। তাদের পরিবারের ইচ্ছা ছিল বড় চাকুরী পেয়ে ধার দেনাগুলো পরিশোধ করে সংসারে হাসি ফুটাবে। এই স্বপ্নে ভোলানাথকে লেখাপড়া শিখেয়েছিলেন। দীর্ঘ ১১ বছর যাবৎ বেতন না পাওয়ার কারণে সেই মানুষটিকে বাধ্য করেছে চায়ের দোকান দিতে। বাবা অসুস্থ থাকায় ৬ সদস্যের পরিবারের দেখভালের দায়িত্ব তার একারই। সেই দায়িত্ব বোধ থেকে এবং আলোকিত সমাজ গড়তে তিনি বেছে নেন শিক্ষকতার মহান পেশা। তিনি একজন সংস্কৃতমনা লোক হিসেবে কলারোয়ায় পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে তিনি টিউশনি করে সংসার চালালেও করোনায় সবকিছু বন্ধ থাকায় তার সেই আয়ের পথটিও বন্ধ হয়ে যায়। কোন উপায়ন্তর না দেখে তিনি নিজের সংসার চালানোর জন্য বেছে নিয়েছেন কলারোয়া বাজারের ফুটপাতে ভ্রাম্যমান চা, পান ও আখের দোকানদার হিসেবে।
এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রনালয় যদি ভোলা নাথের মত মেধাবীদের মেধার বিচার করে একটু সদয় হয়, তবে আগামী দিনে এই ভোলানাথদের মতো শিক্ষকরাই হবেন দেশের সম্পদ।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)