কাজ করছে না মোবাইল ইন্টারনেট, নেটওয়ার্ক; ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ
রাজধানীসহ সারাদেশে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন না গ্রাহকরা। দুপুর আড়াইটার দিক থেকে মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে কোনো ওয়েবসাইট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রবেশ করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন অনেক গ্রাহক।
মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ রেখেছে। তবে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের দাবি, সন্ত্রাসীরা হামলা চালানোয় অনেক এলাকায় ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেছে। সরকার ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করেনি।
মোবাইল অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোন জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ রেখেছে। এ বিষয়ে আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।
রবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ মোবাইল ইন্টারনেটের ফোরজি সেবা বন্ধ রেখেছে। তারা এর বেশি কিছু জানেন না। একই কথা জানিয়েছে বাংলালিংকও।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী দুপুর আড়াইটার দিকে বলেন, আমরা ইন্টারনেট বন্ধ করিনি। অনেক জায়গায় সমস্যার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। সন্ত্রাসীরা অনেক এলাকায় হামলা চালিয়ে ক্যাবলের ক্ষতি করছে। এতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।
ফের ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে চলমান পরিস্থিতিতে আবারও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। একই সঙ্গে মেটার আরও তিনটি প্ল্যাটফর্ম মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রামও চালানো যাচ্ছে না।
আওলাদ হোসেন নামে একজন গ্রাহক লিখেছেন, স্বাভাবিকভাবে মোবাইলের ফোরজি নেটওয়ার্ক দিয়েও ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভিপিএন ব্যবহার করে এখন ফেসবুক লগইন করতে হচ্ছে।
শিবলি কানন নামে আরেকজন লিখেছেন, খিলগাঁওয়ে আছি। মোবাইলের ইন্টারনেট দিয়ে ফেসবুক ঢুকতে পারছি না। আপনাদের কী অবস্থা?
তার পোস্টের নিচে কমেন্ট করেছেন লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী ও রাজবাড়ীর তিনজন ব্যবহারকারী। তারা নিজেদের অবস্থান করা এলাকার নাম জানিয়ে সেখান থেকেও ভিপিএন ছাড়া মোবাইল ইন্টারনেট দিয়ে ফেসবুক ও মেসেঞ্জার চালানো যাচ্ছে না বলে উল্লেখ করেছেন।
তবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) স্পেকট্রাম (তরঙ্গ) বিভাগের দুজন কর্মকর্তা নাম-পরিচয় না উল্লেখ করে জানান, ফেসবুকের ক্যাশ সার্ভার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে শুনেছি। তবে তারা এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না।
অন্যদিকে, মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো এ নিয়ে কথা বলতে নারাজ। গ্রামীণফোন ও রবির দুজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কিছু জানেন না বলে দাবি করেন।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে মোবাইল নেটওয়ার্কে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন গ্রাহকরা।
এর আগে গত ২ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মোবাইল নেটওয়ার্কে মেটা (ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ) বন্ধ করে দেয়া হয়। প্রায় ৬ ঘণ্টার পর রাত সাড়ে ৭টার দিকে তা আবারও সচল হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত ১৮ জুলাই রাত আনুমানিক ৯টার দিকে সারাদেশে ইন্টারনেট শাটডাউন হয়ে যায়। এরপর গত ২৩ জুলাই রাতে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা সচল হয়। ধীরে ধীরে সব জায়গায় ব্রডব্যান্ড সেবা চালুর পর গত ২৮ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট সচল হয়।
তবে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো তখনো বন্ধ রেখেছিল সরকার। ৩১ জুলাই প্ল্যাটফর্মগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম খুলে দেওয়া হয়। তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশের সংবিধান, নিজেদের কমিউনিটি গাইডলাইন এবং সহিংসতামূলক কনটেন্ট প্রচার না করার প্রতিশ্রুতিও পেয়েছে সরকার।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)