গ্রামীণ টেলিকমের অর্থ আত্মসাৎ: আদালতে এসে আবার জামিন নিলেন ড. ইউনূস
গ্রামীণ টেলিকমের অর্থ আত্মসাতের মামলায় নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ আসামি আদালতে হাজির হয়ে আবার জামিন পেয়েছেন। মামলাটি বিচারিক আদালতে স্থানান্তরিত হওয়ায় তাঁরা নতুন করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত প্রত্যেক আসামিকে জামিন পূর্ব শর্তে জামিন দেন।
বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানি পিছিয়ে আগামী ২ জুন ধার্য করা হয়েছে। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেন এসব আদেশ দেন।
সব আদালতে হাজির ছিলেন। মামলাটি বিচারিক আদালতে স্থানান্তরিত হওয়ার কারণে প্রথা অনুযায়ী আসামিরা নতুন করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত প্রত্যেক আসামিকে জামিন পূর্ব শর্তে জামিন দেন বলে দুদকের বিশেষ পিপি মোশারফ হোসেন কাজল নিশ্চিত করেন।
ড. ইউনূস ছাড়াও গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক মো. শাহজাহান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, নূরজাহান বেগম, পরিচালক এস. এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী ও জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান, ইউনিয়নের প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম ও দপ্তর সম্পাদক মো. কামরুল হাসান এই মামলার আসামি।
সব আদালতে হাজির ছিলেন। মামলাটি বিচারিক আদালতে স্থানান্তরিত হওয়ার কারণে প্রথা অনুযায়ী আসামিরা নতুন করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত প্রত্যেক আসামিকে জামিন পূর্ব শর্তে জামিন দেন।
এদিকে ড. ইউনূসসহ সাতজনের পক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য সময়ের আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, সিনিয়র বিশেষ জজ ও মহানগর দায়রা জজ গত ২ এপ্রিল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন। একই দিনে মামলা বিচারের জন্য স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। ওই আদেশের জাবেদা নকলের জন্য আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু জাবেদা নকল এখনো পাওয়া যায়নি। বিজ্ঞ আদালতের উক্ত আদেশ পর্যালোচনা করার প্রয়োজন রয়েছে। উক্ত আদেশ পর্যালোচনার পর অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানি করতে চান অভিযুক্তরা। আসামিরা ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪১ (এ) ধারা মতে মামলা থেকে অব্যাহতের আবেদন করবেন। কাজেই অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির পিছিয়ে দেওয়া হোক। আসামি পারভীন মাহমুদও অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে দুদকের পিপি মোশারফ হোসেন কাজল অভিযোগ গঠন শুনানি পিছনের বিষয়ে আপত্তি দেন। তিনি বলেন, সিনিয়র বিশেষ গজ আদালত এই তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। কাজেই শুনানি করার সুযোগ দেওয়া হোক। পরে আদালত সময় মঞ্জুর করে পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।
এদিকে আসামি পারভীন মাহমুদের পক্ষে অ্যাডভোকেট শাহিনুর রহমান পাসপোর্ট জিম্মায় নেওয়ার নেয়ার আবেদন করেন। তিনি জানান পারভীন মাহমুদ অস্ট্রেলিয়ায় যাবেন। তার ভিসা করার জন্য পাসপোর্ট এর প্রয়োজন। আদালত পাসপোর্ট জিম্মায় দেওয়ার আদেশ দেন এবং অস্ট্রেলিয়ার ভিসা পাওয়ার পর আবার আদালতে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ২ এপ্রিল ঢাকার সিনিয়র বিশেষ জজ ও মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আস-সামছ জগলুল হোসেন ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে বিশেষ জজ-৪ এ মামলাটি বিচারের জন্য স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে অভিযোগ গঠনের জন্য ২ মে দিন ধার্য করেন। এই মামলায় গত ৩০ জানুয়ারি দুদক আদালতে ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে।
গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী কল্যাণ তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এই মামলা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে তহবিল থেকে ২৫ কোটি ২২ লাখ ছয় হাজার ৭৮০ টাকা লোপাটের অভিযোগ আনা হয়। মামলায় এজাহারভুক্ত ১৩ আসামির সঙ্গে তদন্তে পাওয়া নতুন আরও একজনের নাম যুক্ত করা হয়েছে। গত বছরের ৩০ মে দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
গত ৩ মার্চ ড. ইউনূসসহ ৮ জন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান। পরবর্তীতে অন্যান্য আসামিরাও আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)