তিন স্থলবন্দর দিয়ে
ভারতে ভিসার মেয়াদ শেষ হলে বিশেষ ব্যবস্থায় ফেরা যাবে
২৬ এপ্রিল সোমবার থেকে ১৪ দিনের জন্য বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।
এই সময়ের মধ্যে সীমান্ত দিয়ে কেউ ভারতে যেতে বা আসতে পারবে না।
তবে ভারতে অবস্থান করা বাংলাদেশি নাগরিক- যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে- তারা বিশেষ অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশে আসতে পারবেন।
করোনা মহামারিতে দীর্ঘদিন বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভারতের টুরিস্ট ভিসা বন্ধ রয়েছে।
তবে চিকিৎসা ও ব্যবসার জন্য ভারতে যেতে পারছেন বাংলাদেশি নাগরিকরা। সেই কারণে ভারতে প্রচুর পরিমাণে বাংলাদেশি নাগরিক অবস্থান করছেন।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস জানান, আগামি ১৪ দিন বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত বন্ধ থাকাকালে শুধু যেসব বাংলাদেশি নাগরিকের ভিসার মেয়াদ শেষ হতে চলেছে, তারা ভারতের কলকাতা মিশন থেকে বিশেষ অনুমতি নিয়ে ও নেগেটিভ টেস্ট রিপোর্ট দেখানো সাপেক্ষে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবেন। এছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না।
তিন স্থলবন্দর দিয়ে ফিরতে পারবেন বাংলাদেশিরা
ভারতে করোনার পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় দেশটির সঙ্গে ১৪ দিনের জন্য সীমান্ত স্থল বন্ধ করা হয়েছে। তবে ভারতে অবস্থানরত যেসব বাংলাদেশির ভিসার মেয়াদ ১৫ দিন বা তার চেয়ে কম রয়েছে, তাদের জন্য তিন স্থলবন্দর খোলা রাখা হয়েছে। এই তিন পথ দিয়ে যথাযথ অনুমোদন সাপেক্ষে দেশে ফিরতে পারবেন বাংলাদেশিরা।
বেনাপোল, আখাউড়া ও বুড়িমারি- এই তিন স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করা যাবে।
তবে এই স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরলেই ১৪ দিন বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে যাত্রীদের।
রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিকিউরিটি সার্ভিস ডিভিশনের সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব), মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়. বিজিবি এবং কলকাতা ও আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এতে বলা হয়, সোমবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে ৯ মে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত স্থলবন্দর দিয়ে লোকজনের চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের যে সব নাগরিক চিকিৎসার জন্য বর্তমানে ভারত অবস্থান করছেন তাদের ভিসার মেয়াদ ১৫ দিনের কম হলে এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোভিড-১৯ পিসিআর টেস্টে নেগেটিভ সনদ থাকলে তারা বাংলাদেশ মিশন নয়াদিল্লি, কলকাতা কিংবা আগরতলা থেকে অনুমতি নিয়ে বেনাপোল, আখাউড়া এবং বুড়িমারি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবেন। এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে প্রবেশ করার পর দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। এই তিনটি স্থলবন্দর ছাড়া অপর যে কোনো বন্দর দিয়ে লোকজনের চলাচল দুই সপ্তাহের জন্য পুরোপুরি স্থগিত থাকবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পণ্য পরিবহনকারী পরিবহনগুলোকে বাংলাদেশে প্রবেশের পূর্বে যথাযথভাবে জীবাণুমুক্ত করা হবে। চালক ও হেলপারকে কোভিড-১৯ নিরাপত্তা প্রটোকল কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।
এতে বলা হয়, এই সময়ে পণ্য আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে রেলপথ ব্যবহারকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের আলোকে নয়াদিল্লি, কলকাতা এবং আগরতলা মিশন ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবে। দুই সপ্তাহ পর এই সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করা হবে।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, বাংলাদেশ প্রবাসীদের বিদেশ যাওয়ার সুবিধার্থে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, বাহরাইন এবং সিঙ্গাপুরে বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
এদিকে, ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন তাদের দেশের নাগরিকদের জানিয়েছে, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ১৪ দিন স্থলবন্দর বন্ধ থাকার সিদ্ধান্ত ভারতকে জানিয়েছে। এই সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ স্থগিত থাকবে। তবে কোনো ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশ থেকে ভারতে যেতে চাইলে ভারতীয় হাইকমিশন তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ ব্যাপারে ভারতকে সহযোগিতা করতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়তা দিয়েছে।
২ সপ্তাহের আগে ফিরতে পারবেন না ভারতে থাকা বাংলাদেশিরা
ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নেওয়ায় দেশটির সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে রবিবার সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সোমবার থেকে আপাতত দুই সপ্তাহের জন্য ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করা হচ্ছে।
এতে সমস্যায় পড়বেন ভারতে অবস্থান করা বাংলাদেশিরা।
বর্তমানে দেশটিতে দু’হাজারের মতো বাংলাদেশি অবস্থান করছেন। যাদের মধ্যে প্রায় ১৫শ’ রোগী এবং ৫শ’র বেশি ব্যবসায়ী আছেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের হাই-কমিশনার তৌফিক হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, হ্যাঁ মোটামুাটি দু’হাজারের মতো বাংলাদেশি ভারতে অবস্থান করছেন। তবে এখনই সঠিকভাবে বলতে পারবো না।
কতজন রোগী, কতজন আদার্স। কারণ আজ এখানে ছুটির দিন। তবে যারা ভারতে আছেন তারা দু’সপ্তাহের জন্য ফিরতে পারবেন না।
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাতিক্রম যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ। তবে এমন কোনো ব্যক্তি থাকলে তাদের এখানে (দূতাবাসে) যোগাযোগ করতে হবে। এখান থেকে একটি পত্র দেওয়া হবে, তাই নিয়ে দেশে ফিরতে হবে।’
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)