সায়ন্তিকার বিরুদ্ধে ৫০ হাজার রুপি ও পোশাক মেরে দেওয়ার অভিযোগ প্রযোজকের
‘ছায়াবাজ’ সিনেমার শুটিং শেষ না করে মাঝপথে কলকাতায় ফিরে গেছেন পশ্চিমবঙ্গের নায়িকা সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর ফলে আটকে গেছে তাজু কামরুল পরিচালিত সিনেমাটি।
প্রযোজক মনিরুল ইসলামের দাবি, নৃত্য পরিচালক মাইকেল বাবুর সঙ্গে কাজ করবেন না বলেই ঢাকা ছেড়েছেন সায়ন্তিকা। সঙ্গে এটাও জানান, মাইকেলের বিরুদ্ধে সায়ন্তিকা হাত ধরার যে অভিযোগ করেছেন, তা সত্য নয়।
এদিকে, শনিবার এ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে কথা বলেছেন সায়ন্তিকা। সেখানে অভিনেত্রী দুষেছেন প্রযোজককে।
সায়ন্তিকা দাবি করেছেন, নৃত্য পরিচালক নয়, বরং মূল সমস্যার নেপথ্যে সিনেমার প্রযোজক। কোনো ধরনের পরিকল্পনা ছাড়াই শুরু হয়েছে ‘ছায়াবাজ-এর শুটিং। বারবার চেষ্টা করেও টেকনিক্যাল সমস্যার সমাধান পাননি তিনি।
সায়ন্তিকার এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হয় প্রযোজক মনিরুল ইসলামের সঙ্গে। অভিযোগের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি তিনিও সায়ন্তিকার বিরুদ্ধে আনলেন অপেশাদারত্বের অভিযোগ।
প্রযোজক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সায়ন্তিকার সমস্ত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও হাস্যকর। হাত ধরা নিয়ে সায়ন্তিকার সমস্যা মাইকেল বাবুর সঙ্গে। তিনি পরিচালককে ফোন করে মাইকেল বাবুকে মারতেও চেয়েছিলেন। এখন আমার বিরুদ্ধে সায়ন্তিকা কেন অভিযোগ করছেন, সেটাই তো বোধগম্য নয়। আমার সঙ্গে তাঁর সমস্যা হলে মাইকেলকে কেন বসিয়ে রাখবেন? একজন তারকা যদি নিজের ব্যক্তিত্ব ধরে রাখতে না পারেন, তাহলে আর কী বলার আছে।’
শুটিংয়ে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ প্রসঙ্গে মনিরুল বলেন, ‘কীভাবে শুটিং হবে, এটা ঠিক করেন পরিচালক। আগে থেকে পরিকল্পনা ছিল গানের দৃশ্য দিয়ে শুরু হবে শুটিং। অপেশাদারি আচরণ আমি নই, সায়ন্তিকা করেছেন। চুক্তির বাইরে আমরা তাঁকে ৫০ হাজার রুপি দিয়েছি পোশাকের জন্য। অথচ তিনি কোনো পোশাক নিয়ে আসেননি। এরপর আবার ড্রেসম্যান মনিরকে দিয়ে পোশাকের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সেই পোশাকগুলোও সায়ন্তিকা ফেরত দিয়ে যাননি।’
প্রযোজক মনিরুল আরও বলেন, ‘মাইকেলের ডিরেকশনে গানের শুটিং করার সময় ড্রেস পরিবর্তন করার জন্য বেলা ২টায় হোটেলে যান নায়ক-নায়িকা। ফিরে আসেন সন্ধ্যা ৬টায়। ড্রেস চেঞ্জ করতে চার ঘণ্টা সময় লাগে, এমনটা কখনো দেখিনি। এ ছাড়া যেদিন আমরা শুটিং প্যাকআপ করে পুরো ইউনিট নিয়ে চলে আসি, সেদিন নায়ক-নায়িকা হোটেলেই থেকে যান। ওই দিন তাঁরা সেখানে কী করছিলেন? এ প্রশ্নের জবাব তাঁরা কী দেবেন? এ কথাগুলো কখনো সামনে আনতে চাইনি। কিন্তু এখন আর চুপ করে থাকতে পারলাম না।’
নৃত্য পরিচালক পরিবর্তন নিয়ে প্রযোজক মনিরুল বলেন, ‘চারটি গানে তিনজন নৃত্য পরিচালকের কাজ করার কথা। প্রথম গানটি করেছিলেন সাইফ খান কালু। তাঁর আরেকটি গান ছিল শিশুশিল্পীকে নিয়ে। সে গানটি পরে করার কথা। তাই কালু চলে এসেছেন। সেখানেই তাঁকে তাঁর পেমেন্ট দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর পরিচালক কাকে দিয়ে নৃত্য পরিচালনা করাবেন, সেটা তাঁর বিষয়। সায়ন্তিকা মাইকেলকে বলেছেন, ‘‘বাচ্চা ছেলে’’। মাইকেল তো নৃত্য পরিচালক সমিতির সদস্য। নিশ্চয়ই তাঁর যোগ্যতা না থাকলে তিনি কোনো সংগঠনের সদস্য হতে পারতেন না। মাইকেলের বিরুদ্ধে এমন কথা বলে সায়ন্তিকা আমাদের পুরো ইন্ডাস্ট্রিকে অসম্মান করেছেন।’
চিত্রনাট্য ও শট ডিভিশন আগে থেকে জানালে কাজটি শেষ করতে চান সায়ন্তিকা—নায়িকার এমন মন্তব্যে অবাক হয়েছেন প্রযোজক। তাঁর কথায়, ‘সায়ন্তিকাকে তিন মাস আগে গল্প পাঠানো হয়েছে। তিনি যদি গল্প না পড়ে অন্যান্য কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, তাহলে কী করার! আর চিত্রনাট্য না পড়ে তিনি কীভাবে সিনেমায় অভিনয়ের জন্য রাজি হয়ে গেলেন।’
নায়িকা ও প্রযোজকের পাল্টাপাল্টি এমন অভিযোগে ‘ছায়াবাজ’ সিনেমাটি নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। তবে এ বিষয়ে জানতে সিনেমাটির পরিচালক তাজু কামরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)