রবিবার, জানুয়ারি ১৯, ২০২৫

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

ঈদের আনন্দ ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে গাজার শিশুদের কাছ থেকে এমনি মর্মস্পর্শী অভিমত

রমজান মাসের শেষে মুসলিমরা যখন সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর পালনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন গাজার শিশুরা বলছে তাদের কাছ থেকে ঈদের আনন্দ ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।

জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ বলছে, গাজা ভূখণ্ডে যত মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, তাদের মধ্যে এক শতাংশ শিশু অনাথ হয়েছে অথবা তাদের দেখাশোনা করার জন্য প্রাপ্তবয়স্ক কেউ নেই।

এমন কোন ক্যাম্প নেই যেখানকার শিশুরা একজন বা বাবা-মা দুজনকেই হারিয়েছে- এমন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যায় নি।

‘এই ঈদ অন্য কোন ঈদের মতো নয় কারণ যুদ্ধ চলছে। আমরা আমাদের পরিবার হারিয়েছি’ বলেন রাফাহর এগার বছর বয়সী লায়ান।

লায়ান ও তার ১৮ মাস বয়সী বোন সিয়ার। তাদের পরিবারে একমাত্র তারাই এখন বেঁচে রয়েছে।

পরিবারের বাকি সদস্যরা গাজায় অক্টোবরের বোমা হামলা থেকে বাঁচতে শহরের আল আহলি হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিলো। সে সময় তারা নিহত হয়।

লায়ান সেই রাতে তার পরিবারের ৩৫ সদস্যকে হারায়। তাদের মধ্যে বাবা–মা ও নিজের পাঁচ ভাই বোন ও ছিলো।

‘আমাদের পরিবার হাসপাতালে পৌঁছানোর মাত্র আধ ঘণ্টার মধ্যে দুইটা ক্ষেপণাস্ত্র আমাদের উপর আঘাত করে। আমি জেগে উঠে দেখলাম, আমার পরিবারের সব সদস্যরা টুকরো টুকরো হয়ে গেছে’।

গাজা শহরের জনাকীর্ণ হাসপাতালে এই হামলায় শত শত লোক নিহত হয়।

লায়ান তার আন্টি এবং বড় কাজিন আলীর সাথে স্বচ্ছন্দে আছে, যাদের সাথে সে ও তার বোন দক্ষিণ গাজার রাফাহতে একটি তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছে।

যুদ্ধে সবকিছু নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার আগে, লায়ান ঈদের আগে বাবা-মার সঙ্গে নতুন জামা কিনতে যেতো।

তারা ঈদে বিস্কুট বানাতো যা স্থানীয়ভাবে এটি ‘মামোল’ নামে পরিচিত। তারা পরিবারের সঙ্গে আনন্দ করতো।

কিন্তু এই বছর আর কোন পারিবারিক জমায়েত হবে না। ‘এই ঈদে কেউ আমাদের দেখতে আসবে না‘। সে বলছিল।

যুদ্ধের কারণে কয়েক হাজার লোক তাদের চাকরি হারিয়েছে। অর্থ স্বল্পতায় থাকলেও ২৪ বছর বয়সী আলী এই মুহূর্তে লায়ান ও তার বোনের দেখাশোনা করছে। সে নিজের সামর্থ্যের মধ্যে তাদের ও অন্যান্য কাজিনদের পোশাক ও খেলনা কিনে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

যুদ্ধের আগে গাজা শহরের নিকটবর্তী জৈতুনে লায়ানের কাজিনরা তাদের পরিবারের অন্যান্য ৪৩ সদস্যের সাথে একটি ভবনে থাকতেন। এখন যারা বেঁচে আছেন তারা দক্ষিণ গাজার একটি তাঁবুতে থাকেন।

লায়ানের মতো তার আরেক কাজিন ১৪ বছর বয়সী মাহমুদও যুদ্ধে অনাথ হয়েছে।

মাহমুদ তার বাবা-মা ও বেশিরভাগ ভাই-বোনকেই আল আহলি হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার একই ঘটনায় হারিয়েছে।

যখন ওই হামলা হয় তখন সে বাইরে তার পরিবারের জন্য পানি আনতে গিয়েছিলো।

‘যখন আমি ফিরে এসেছিলাম, আমি সবাইকে মৃত দেখতে পেলাম। যা দেখলাম তাতে আমি হতবাক হয়ে গেলাম,’ বলছিল মাহমুদ।

যুদ্ধের আগে, মাহমুদ বডি বিল্ডিং চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখতো এবং মিশরে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছিলো।

এখন তার একমাত্র স্বপ্ন উত্তর গাজা ভূখণ্ডে নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়া এবং বাবা-মার স্মৃতিচারণ করা।

‘এই ঈদে কোন আনন্দ নেই। আমরা আগে ঈদের সময় রাস্তায় বাতি জ্বালাতাম কিন্তু এখন আমরা সাজসজ্জা হিসেবে শুধুমাত্র তাঁবুতে একটা দড়ি ঝুলাতে পারি।’

ফিলিস্তিনের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ৪৩ হাজারের বেশি শিশু বাস করে যাদের একজন বা বাবা-মা উভয়ই নেই।

সঠিক পরিসংখ্যান বের করা কঠিন, কিন্তু ইউনিসেফ ধারণা করেছে যে, গাজা ভূখণ্ডে অন্তত ১৭ হাজার শিশু সঙ্গীহীন অবস্থায় রয়েছে অথবা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বাবা -মায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একা হয়ে পড়েছে।

সাধারণত ঈদ বলতে পরিবারের সদস্যদের জমায়েত এবং এই উৎসব পালন করতে বিশেষ ধরনের খাবার তৈরি করাকে বুঝায়।

কিন্তু এ দুইটিরই অনুপস্থিতি ও চলমান যুদ্ধের কারণে শিশুদের শুধুমাত্র তাদের আগের স্মৃতি ধারণ করেই থাকতে হবে।

গাজাবাসীদের টেবিলে ঈদে যেসব খাবার থাকে তার অন্যতম হচ্ছে সুমাকিয়া (মাংসের ঝোল) এবং ফাসিখ (লবণাক্ত মাছ)। কিন্তু উৎসবের প্রধান আকর্ষণ থাকে ঈদ বিস্কুট।

বাস্তুচ্যুত লোকেদের জন্য রাফাহ শহরের দক্ষিণে একটি ক্যাম্পে অন্তত ১০ জন মহিলা ঈদের বিস্কুট তৈরি করতে ফিলিস্তিনি মাজদ নাসার ও তার পরিবারের তাঁবুতে জড়ো হয়েছেন।

গাজার উত্তর থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া ২০ বছর বয়সী মাজদ একটা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

যাতে ক্যাম্পে থাকা শিশু ও তাদের পরিবারকে ঈদের স্বাদ ফিরিয়ে দেয়া যায়। তিনি নিকটস্থ তাঁবুর সব প্রতিবেশীদের একসাথে বিস্কুট বানাতে আমন্ত্রণ জানান।

এই যুবক ক্যাম্পে থাকা ৬০ টি পরিবারের মধ্যে গোল কেক বিতরণ করেছে, যেগুলোর কেন্দ্র ফাঁপা বা গর্ত করা।

পুরো গাজা ভূখণ্ড জুড়ে সতের লাখ বাস্তুচ্যুত লোক কঠোর পরিস্থিতিতে বাস করছে এবং খাদ্য ও পানির তীব্র সংকটে তারা ত্রাণ সহায়তার উপর নির্ভর করে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

একই রকম সংবাদ সমূহ

যুদ্ধবিরতি : গাজার রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ, হামাস যোদ্ধারাও

যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি গাজাজুড়ে রাস্তায় নেমে আসেছে।বিস্তারিত পড়ুন

অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন: ব্রিটিশ ব্যারিস্টারের দ্বারস্থ হয়েছিলেন হাসিনা

আলজাজিরার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করতে ব্রিটেনের সবচেয়ে খ্যাতিমান ব্যারিস্টারদের মধ্যে একজনের সঙ্গেবিস্তারিত পড়ুন

দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত: টিউলিপকে ইলন মাস্ক

দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তাধীন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আর্থিক সম্পৃক্ততার অভিযোগবিস্তারিত পড়ুন

  • টিউলিপকে নিয়ে উত্তপ্ত ব্রিটিশ পার্লামেন্ট, উঠে এলো ড. ইউনূসের নাম
  • ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হামাস
  • টিউলিপের পদত্যাগ নিয়ে যা বললেন আসিফ নজরুল
  • টিউলিপের দুর্নীতি ও পদত্যাগ নিয়ে যা বললেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
  • অবশেষে দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিক
  • লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল ছড়ালো নতুন এলাকায়
  • এবার টিউলিপকে সরে যেতে বললো যুক্তরাজ্যের দুর্নীতিবিরোধী জোট
  • বিশাল স্বর্ণের খনির সন্ধান পেল পাকিস্তান
  • তদন্তের ফলের ভিত্তিতে টিউলিপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন স্টারমার
  • ‘অনেক করেছেন’ হাসিনা, আমৃত্যু তাকে ভারতে রাখার পক্ষে মণি শঙ্কর আইয়ার
  • বাংলাদেশের সরকার পতনে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতা বিশ্বাস করে না ভারত
  • অবশেষে মায়ের বুকে ছেলে, এক মধুর মুহূর্ত