উত্তর কোরিয়ায় আট লাখ করোনা শনাক্ত ৩ দিনে
প্রথবারের মতো করোনার উপস্থিতি শিকারের পর উত্তর কোরিয়ায় গত ৩ দিনে ৮ লাখ ২০ হাজার ৬২০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে ৪২ জন। দেশটিতে দিন দিন ব্যাপকভাবে ছড়াচ্ছে এ ভাইরাস। রোববার এ খবর জানা গেছে এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে।
প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়া থেকে বিবিসির একজন সংবাদদাতা জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ায় কোনো করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নেই এবং টেস্টিং ক্ষমতাও সীমিত। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও অত্যন্ত খারাপ।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ জানিয়েছে, রোববার (১৫ মে) নতুন করে ১৫ জন ‘জ্বর’ নিয়ে মারা গেছেন। এখন পর্যন্ত মোট ৪২ জন মারা গেছেন। ৩ লাখ ২৪ হাজার ৫৫০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মহামারি ঠেকাতে দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
উত্তর কোরিয়া সেদেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কথা স্বীকার করে নেবার দু’দিন পরই দেশটির নেতা কিম জং উন দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিপর্যয় হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এক জরুরি বৈঠকে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এই ভাইরাস রুখতে সর্বাত্মক লড়াইয়ের ডাক দেন।
এর আগে গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো করোনার প্রাদুর্ভাবের কথা জানায় দেশটি। এরপরই পুরো দেশে লকডাউন জারি করা হয়। বিশ্বব্যাপী মহামারির প্রাদুর্ভাবের পর থেকে গত দুই বছর ধরে উত্তর কোরিয়ায় কোনো কোভিড রোগীর সংবাদ পাওয়া যায়নি। অবশ্য সেখানে করোনা টেস্ট হয়েছিল কি না বা এ নিয়ে কোনো প্রচারও প্রকাশ পায়নি।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ দেশটির ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির জরুরি বৈঠকে কিমের বক্তব্যের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ‘আমরা যদি মহামারি নীতি বাস্তবায়নে মনোযোগ না হারাই এবং দল ও জনগণের একক ঐক্যের ভিত্তিতে সাংগঠনিক শক্তি ও নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখি পাশাপাশি আমাদের মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইকে শক্তিশালী করি তাহলে আমরা সংকট আরও দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারব।
উত্তর কোরিয়ায় গত বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে করোনা সংক্রমণের কথা স্বীকার করে। এর একদিন পর বৃহস্পতিবার থেকে দেশটিতে লকডাউন জারি করা হয়।
দেশটিতে ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম কেসিএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
চলতি বছর এপ্রিলের শেষ থেকে উত্তর কোরিয়ায় জ্বরে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। অন্তত পাঁচ লাখের বেশি মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হন।
দেশটির শীর্ষ নেতা কিম জং উনকে এক টিভি ভাষণে প্রথমবারের মতো মাস্ক পরতে দেখা যায়। কিম জং উন করোনার এ প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে জরুরি বৈঠক করছেন। তবে উত্তর কোরিয়ার সরকারি ভাষ্যমতে, বুধবার প্রথমবারের মতো কোভিড রোগী শনাক্তের কথা বলা হলেও দেশটিতে অনেক দিন থেকেই করোনাভাইরাসের উপস্থিতি আছে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের।
করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার পরই নিজেদের সব সীমান্ত বন্ধ করে দেয় উত্তর কোরিয়া। এ পদক্ষেপের মাধ্যমেই দেশে ভাইরাসটির প্রবেশ বন্ধ করতে চেয়েছে তারা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)