গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজে দিশেহারা রাজগঞ্জের গরু পালনকারি ও খামারিরা, মারা গেছে ৫ গরু
হেলাল উদ্দিন, মনিরামপুর: যশোরের মনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভাইরাস রোগ। রাজগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় এ রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
গত কয়েক দিনে লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১০ গরু মারা গেছে। এ অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গরু পালনকারি কৃষক ও খামারিরা। তবে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন ও সময় নিয়ে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
জানা যায়- রাজগঞ্জের রোহিতা, খেদাপাড়া, হরিহরনগর, ঝাঁপা, চালুয়াহাটি ও মশি^মনগর ইউনিয়নে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ। এক গরু থেকে অন্য গরুতে ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভাইরাসে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা।
ব্যাপক ভাবে গরুর এ রোগ দেখা দেয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছে গরু পালনকারি কৃষকরা ও খামারিরা। স্থানীয় গরুর মালিকরা জানান- আক্রান্ত গরুর প্রথমে জ্বর, ব্যথা ও গলা ফুলে যায়, খাবারে অরুচি দেখা দেয়। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গোলাকার গুটি বা ফোস্কা ওঠে, পায়ে এবং শরীরের নিম্নাংশে পানি জমে ফুলে যায়।
এক পর্যায়ে গুটি বা ফোস্কা ফেটে গিয়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়। এ রোগ এক গরু থেকে ছড়িয়ে পড়ছে অন্য গরুতে। আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা করেও মিলছে না তেমন সুরাহা। অধিকাংশ গরু মারা যাচ্ছে। চিকিৎসা করেও রোগ না কমায় হতাশায় পড়েছে গরুর মালিকেরা। রাজগঞ্জের হানুয়ার গ্রামের রনি হোসেন জানান- হঠাৎ গরুর জ্বর আসে এরপর গায়ে ও গলার পাশে ফোস্কা উঠে গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে।
তেমন খাবার খাচ্ছে না দুর্বল হয়ে পড়ছে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ দিয়ে লাভ হচ্ছে না। হানুয়ার গ্রামের গরু পালনকারি সাথি বেগম জানান- স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খাওনোর পরও কোন লাভ হচ্ছে না।
প্রায় ২৫ দিন চিকিৎসা করার পর গরুর সম্পূর্ণ গা ফেটে গন্ধ বের হচ্ছে। এলাকায় নতুন করে আরও অনেক গরু আক্রান্ত হয়েছে। খোজ নিয়ে জানা গেছে- সম্প্রতি লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগে আক্রান্ত হয়ে রাজগঞ্জের হানুয়ার গ্রামের সাহাদুজ্জামারে একটি, ছাকাত মাস্টারের একটি, মোরশেদ আলীর একটি, কোমলপুর গ্রামের শুধাংশুর একটি, খালিয়া গ্রামের ইন্দ্রজিতের একটি গরু মারা গেছে।
এদিকে এ রোগের চিকিৎসা দিতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় প্রাণী চিকিৎসকেরা। তারা কৃষকদের সচেতন ও গোয়াল ঘর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন।
স্থানীয় এক পল্লী প্রাণী চিকিৎসক জানান- আক্রান্ত গরুকে স্বাভাবিক খাবারের পাশপাশি বেশী করে স্যালাইন খাওয়াতে হবে। মুখে স্যালাইন খাওয়াতে না পারলে শরীরে পুশ করতে হবে। আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসা দিতে হবে।
গরু পালনকারি কৃষকরা ও খামারীরা জানান- সরকারি ভাবে এখনো কোনো ভ্যাটেনারি মেডিকেল টিম গ্রামে সরেজমিনে আসেনি। তাদের খোজও পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে স্থানীয় পল্লী প্রাণী চিকিৎসকেরায় আমাদের ভরসা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)