টাকা ধার করে পশু কোরবানি দেওয়া যাবে কী?
আজ আমরা আলোচনা করবো কেউ যদি ঋণ করে, ধার করে কোরবানি করেন তাহলে সে কোরবানি বিশুদ্ধ হবে কিনা এবং আগে থেকে কেউ ঋণগ্রস্ত রয়েছেন সে ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি কোরবানি করলে সে কোরবানি ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণযোগ্য হবে কিনা এ বিষয়ে।
এই দুটি মাসলার প্রথমটির উত্তর হলো, কেউ চাইলে ধার করে, ঋণ করে কোরবানি করতে পারেন যদি পরবর্তীতে এই ঋণ শোধ করার সৎউদ্দেশ্য তার থাকে তাহলে তিনি ঋণ করে কোরবানি করতে পারেন।
জাগতিক যেকোন কাজ যেমন আমরা ঋণ করে লোন করে করতে পারি; রাসুলে কারিম (সঃ) নিজের জীবনেও তিনি লোন করেছেন, সাহাবায়ে ইকরামের অনেকে লোন করেছেন; অতএব লোন করে তিনি কোরবানি করতে পারেন।
যেকোনো ভালো কাজ এমন কি দান-সাদকাহ, হজ-উমরাহ করার জন্যও যদি কেউ ঋণ করেন এবং তার ঋণ পরিশোধ করার সৎ উদ্দেশ্য রয়েছে, ব্যবস্থা রয়েছে তাহলে তিনি ঋণ করে ভালো কাজ করতে পারেন কোরবানিটাও একই রকম। তবে, ঋণ করে কোরবানি করা তার জন্য আবশ্যক নয়। সামর্থ না থাকলে ইসলামি শরিয়া তাকে ঋণ করে কোরবানি করতে বাধ্য করে না।
দ্বিতীয় মাসালারটি হলো ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি কোরবানি না করে ঋণ পরিশোধ করলে যদি তার ঋণ কমে, অর্থাৎ ঋণ পরিশোধ করার বিষয়টিকে তিনি যদি অগ্রাধিকার দেন তাহলে সেটি তার জন্য উত্তম হবে।
এ বিষয়ে কারও কোনো দ্বিমত নেই। আর ঋণ থাকা অবস্থায় কোরবানি করা তার জন্য সঠিক হবে কিনা এর উত্তর হলো, ঋণ দুই প্রকার কিছু ঋণ আছে যেগুলোকে ইসলামি শরিয়ার পরিভাষায় বলা হয় দাইনে মোয়াজ্জেল (স্বল্প মেয়াদি ঋণ), অর্থাৎ যে ঋণ দ্রুত পরিশোধ করার প্রেশার রয়েছে বা প্রাপকের দাবি রয়েছে সেক্ষেত্র এই ধরনের ঋণ দ্রুত শোধ করার স্বার্থে কোরবানি না করে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। আর যদি দাইনে মউয়াজ্জেল (দীর্ঘমেয়াদি ঋণ) হয়, তাহলে সেই ঋণ থাকা অবস্থায় কোরবানি করা যাবে।
যেমন একজন ব্যক্তির তার স্ত্রীর কাছে মোহারানার ঋণ রয়েছে। আরও এই রকম সিস্টেম্যাটিক ঋণ রয়েছে যেগুলো হয়ত তিনি ধারবাহিকভাবে কিস্তিতে শোধ করছেন, সেক্ষেত্রে তিনি কোরবানি করতে পারেন।
আমাদের সমাজে অনেক ব্যক্তি আছেন যারা অধীনস্থ কর্মকর্তা, কর্মচারী এমনকি কাজের লোকের পাওনাকে আটকে রেখে তারা বড় বড় গরু কোরবানি করেন, ইসলামি শরিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে এটি জঘন্য অপরাধ। অন্যের হক না দিয়ে কোরবানি করলে তাতে আল্লাহ সুবানাহুতা’লা মোটেও সন্তুষ্ট হবেন না। অতএব, আমাদের কারো এ ধরনের ঋণ থাকলে আমরা কোরবানির উপরে ঋণ পরিশোধকে অগ্রাধিকার দেবো।
সূত্র: বিশিষ্ট ইসলামিক ব্যক্তিত্ব শায়খ আহমাদুল্লাহ’র বক্তব্য ও মতামত অবলম্বনে
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)