ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঐতিহাসিক জয়
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রাথমিক ফলাফলে বিজয়ী হয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসকে ইলেকটোরাল কলেজ ভোটে বড় ব্যবধানে পরাজিত করেছেন তিনি। ফলে দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউজের দখল পাচ্ছেন সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ফলে তিনি হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হতে প্রয়োজন হয় ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের। সেই ম্যাজিক ফিগার এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছেন ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প। তিনি ম্যাজিক ফিগারের চেয়েও বেশি ভোট পেয়েছেন। বার্তা সংস্থা এপির তথ্য অনুযায়ী, রিপাবলিকান এই প্রার্থী ২৭৭টি এবং ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস পেয়েছেন ২২৪টি ইলেকটোরাল ভোট। তবে এখনও আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা হয়নি। এজন্য কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।
কিন্তু চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা হওয়ার আগেই ট্রাম্প ও তার সমর্থকরা দেশজুড়ে বিজয় উদযাপন শুরু করেছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট এরই মধ্যেই নিজেকে ‘বিজয়ী’ ঘোষণা করেছেন।
এক ভাষণে ট্রাম্প বলেন, তিনি একটি ‘অসাধারণ বিজয়’ পেয়েছেন। তার দ্বিতীয় শাসনামল ‘আমেরিকার স্বর্ণযুগ’ হবে দাবি করে রিপাবলিকান নেতা আরও বলেন, এটি আমেরিকার মানুষের জন্য একটি অসাধারণ বিজয়, যা আমাদের আবার আমেরিকাকে মহান করতে সাহায্য করবে।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয় সময় ৫ নভেম্বর ভোরে শুরু হয় ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এতে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় ভোট দিতে দেখা যায় ভোটারদের। ভোটের প্রাথমিক ফলাফল সামনে আসতে শুরু করলে ট্রাম্পের বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা ক্রমেই স্পষ্ট হতে থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে তার দলের ইলেকটোরাল ভোটের পাল্লা।
গত নির্বাচনে দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি ট্রাম্প। ফলাফল, নির্বাচনে হার। কিন্তু এবার সেসব রাজ্যে দারুণভাবে ‘কামব্যাক’ করেছেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট। জয় ছিনিয়ে এনেছেন বেশিরভাগ ব্যাটেলগ্রাউন্ডে।
‘রক্তস্নাত জয়’
এবারের নির্বাচনে মূল লড়াইটা হওয়ার কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে।
কিন্তু প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে নাস্তানাবুদ হওয়ার পর ডেমোক্র্যাট শিবিরে জোর দাবি ওঠে, ৮১ বছর বয়সী জো বাইডেনকে সরিয়ে অন্য কাউকে প্রার্থী করা হোক। তার ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিচ্ছিলেন একের পর এক অর্থদাতা। তবুও শেষপর্যন্ত লড়াইয়ে থাকার ঘোষণা দিয়েছিলেন বাইডেন।
কিন্তু গত ১৩ জুলাই নির্বাচনী সমাবেশে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার ঘটনার পর বদলে যায় সব হিসাব-নিকাশ। কপালজোরে প্রাণে বেঁচে যাওয়া ট্রাম্প আসন্ন নির্বাচনী ভূমিধস জয় পেতে চলেছেন বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেন বিভিন্ন পর্যবেক্ষক ও বিশ্লেষক।
এ অবস্থায় নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ডেমোক্র্যাটদের নাটকীয় কিছুই করতে হতো। এর মধ্যে তৃতীয়বারের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন বয়সের ভারে নুয়ে পড়া বাইডেন। আর তারপরেই নির্বাচনী দৌড় থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন তিনি। তার জায়গায় লড়াইয়ে নামেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।
কমলাকে পেয়ে আগের চেয়ে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে ডেমোক্র্যাট শিবির। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে নির্বাচনী লড়াই। ধারণা করা হয়েছিল, নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিযোগিতা হবে দুই নেতার মধ্যে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনেকটা হেসেখেলেই জয় ছিনিয়ে নেন রিপাবলিকান প্রার্থী। প্রতিপক্ষের মুখের বুলি নয়, নির্বাচনী সভায় গুলির আঘাতে রক্তাক্ত ট্রাম্পের মুষ্ঠিবদ্ধ হাতের দৃশ্যই ভোটারদের বেশি আকৃষ্ট করেছে, তা নির্বাচনের ফলাফলেই স্পষ্ট।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)