নড়াইলে ১৩ বছরের কিশোরীকে ব্ল্যাকমেইল করে আত্মহত্যা করতে বাধ্য!
নড়াইলের দেবভোগ গ্রামের এক কিশোরীকে ব্ল্যাকমেইল করে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করছে বলে অভিযোগ করেন, নিহতের মা-বাবা, দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বিচারের আশায়।
নড়াইল শেখহাটি ইউনিয়নের দেবভোগ গ্রামের মনি মোহন বিশ্বাসের বড় মেয়ে নবম শ্রেণীর ছাত্রী মিতা বিশ্বাস (১৩) গত (৩ আগস্ট) নিজ ঘরের আড়ার সাথে গলায় দড়ি দিয়ে আত্নহত্যা করে।
জানা যায়, মনি মোহনের পাসের বাড়ির শিপ্রা ভদ্র ধর্ম ভাই ডাকে পলাশ দেবকে সেই সুবাদে পলাশ ৩-৪ বছর ধরে শিপ্রা ভদ্রের বাড়িতে যাওয়া আসা করে এরই মধ্য ৫-৬ মাস ধরে পলাশ দেব মিতার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে এসময় শিপ্রা ভদ্র পলাশ ও মিতা কে নিজের ঘরে সময় কাটাতে সহযোগীতা করে দিত,এভাবেই দির্ঘদিন ধরে পলাশ ও মিতার সম্পর্ক চলে।
ইতিমধ্যে পলাশ দেব মিতাকে গোপনে একটি মোবাইল ফোন কিনে দেয়, তার সুবাদে পলাশ মিতাকে বিভিন্য সময় ফোন করে ডেকে নিয়ে আসত শিপ্রা ভদ্রের ঘরে, সুকৌসলে শিপ্রা ভদ্র বাড়ি থেকে ঘেরের উদ্দেশে চলে যেতেন ওদের দুজন কে রেখে।
ধ্রুত প্রতারক পলাশ দেব গোপনে সহযোগী সত্যজিত হালদার কে নিয়ে দুজনের মেলামেশার ভিডিও ধারণ করতো, এভাবেই চলে তাদের প্রতারনার ফাদ।
কিশোরী মিতা পলাশের প্রতারণা কোন ভাবেই বুঝতে পারেনি।
এরই মধ্যে মিতাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার কথা বলে পলাশ কিন্তু অল্প বয়াসে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য রাজি না মিতা, এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে প্রতারক পলাশ।
গত (৩০জুলাই) মিতাকে সুকৌসলে ডেকে নিয়ে পলাশের গোপনে কিনে দেয়া মোবাইল ফোনটি নিয়ে নেন প্রতারক পলাশ এবং পলাশের সাথে পালিয়ে না গেলে অডিও রেকডিং ও গোপনে ধারন করা দুজনের মেলামেশার ভিডিও গ্রামবাসি কে দেখাবে বলে হুমকি দেন, পলাশ ও সহযোগী সত্যজিত হালদার।
মিতা কিশোরী হলেও বাবা মায়ের সন্মান বাচাঁতে এবং নিজের ভুলের জন্য মিতার ছোট দুই বোন কে গত (৩ আগস্ট) বলে আমার পলাশের সাথে অনেক দিন ধরে সম্পর্ক তাই পলাশ আমাকে নিয়ে পালিয়ে যাবে বলেছে কিন্তু আমি পালিয়ে যাবনা বলে আমার কাছে থাকা পলাশের কিনে দেয়া মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে এবং আমার সাথে পলাশের মেলামেশার সব কিছু ভিডিও ও কথাবার্তা রেকডিং করে রেখেছে, আমি ওর সাথে জেতে রাজি না হওয়াতে এখন পলাশ সব কিছু গ্রামের লোকজনদের দেখাবে বলে ভয় দেখাচ্ছে, বাবা মা কে বলে দিশ এই বলে শিপ্রা নিজের রুমে গিয়ে দরজাঁ আটকিয়ে আড়ার সাথে গলাই দড়ি নিয়ে আত্নহত্যা করে।
এদিকে, খবর পেয়ে শেখহাটি ফাড়ি হতে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং মিতার লাশ ময়না তদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে ময়না তদন্ত ঐ দিন না হলে পরের দিন মদয়না তদন্ত সম্পর্ন হয়।
পরে মৃত মিতার বাবা মনি মোহন বিশ্বাস নড়াইল পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ নিয়ে হাজির হন, সাথে সাথে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম (বার) নড়াইল সদর থানায় লিখিত অভিযোগটি মনি মোহন বিশ্বাস কে দিয়ে পাঠিয়ে দেন, সাথে সাথে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে অভিযোগটি দায়ের করেন।
এদিকে শিপ্রা ভদ্র অভিযোগ অশিকার করে বলেন, আমার বাড়িতে মিতা কোন দিনও আসেনি পলাশকে আমি ধর্ম ভাই ডেকেছি সেই জন্য পলাশ আমার বাড়িতে আসে এবং মাঝে মদ্ধে আমাদের কাজ কর্ম করে দেয় পলাশ।
সহযোগী সত্যজিত হালদার সাংবাদিকদের আসার খবর পেয়ে বাড়িতে ফোন রেখে সুকৌসলে পালিয়ে যায়।
অভিযুক্ত প্রতারক পলাশ কে ফোন করে সরে যেতা বলে শিপ্রা, বুঝতে পেরে শিপ্রার ফোন দিয়েই পলাশের ফোনে আবারও ফোন দিয়ে পলাশের অবস্থান জানার জন্য ফোন করা হয় কিন্তু ধ্রুত পলাশ আর ফোন রিসিভ করে না কিছু ক্ষন পরে পলাশের একটি মদিদোকান সহ ফোন নন্ধ করে গাঁঢাকা দেয়।
এর পর পলাশের বাড়িতে গিয়েও পলাশের সাক্ষাৎকার নেয়া যায়নি,তবে পলাশের বড় কাকি ও মায়ের সাথে কথা বল্লে তারা জানান,পলাশ মোবাইলে ওই মেয়ের সাথে কথা বলতে পারে কিন্তু আমরা জানি না ঐ মেয়ে মরে যাওয়ার পরে আমরা সুনেছি পলাশের সাথে সম্পর্ক ছিল।
দুজনের সম্পর্ক থাকতে পারে তাই বলে মরতে হবে, আমাদের জানালে আমরা বিয়ে দিয়ে নিয়ে আসতাম বলেও জানান।
নিহত মিতার মা জানান, আমার মেয়ে ছোট কিছুদিন আগে সত্যজিত আমার মেয়েকে একটি ছেলের সাথে প্রেম করতে বলে কিন্তু আমার মেয়ে রাজি না থাকায় সত্যজিত আমার মেয়েকে গালমন্দ করে এবং আমার মেয়ের সাথে পলাশের সম্পর্ক তাও আমরা জানতাম না।
সত্যজিতের কাছে আমার মেয়ের ও পলাশের রেকডিং সহ ভিডিও করা আছে এবং গ্রামে মিটিং করে সবাই কে দেখাবে বলে হুমকি দিয়েছে সত্যজিত এবং মিতা মরার ৩দিন আগে শিপ্রা এসে আমার সাথে ঝগড়া করেছে এবং আমার মেয়ে সহ আমাদের দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়ে গেছে তার ৩দিন পরেই আমার মেয়ে আত্নহত্যা করেছে।
আমার মেয়ে কে পরিকল্পিত ভাবে আত্নহত্যা করতে বাদ্ধ্য করেছে ওরা, আমার মেয়ে আত্নহত্যা করা আগে মিতা তার ছোট দুই বোন কে সব কিছু বলে আত্নহত্যা করেছে বলেও জানান তিনি।
মিতার বাবা মনি মোহন বিশ্বাস জানান,আমার মেয়েকে পলাশ, সত্যজিত, শিপ্রা রেকডিং ও ভিডিও করে ব্ল্যাকমেইল সহ ভিডিও গ্রামবাসি কে দেখাবে বলে ভয় দেখিয়ে আত্নহত্যা করতে বাদ্ধ্য করেছে, আমার মেয়ের মৃত্যু জন্য ওরা দায়ী।
আমি গরিব মানুষ এজন্য আমি আইনী কোন সহযোগীতা পাচ্ছি না, আমি বার বার শেখহাটি পুলিশ ফাড়িতে ও নড়াইল সদর থানায় গেলেও কোন সুরহা পাচ্ছি না, সঠিক তদন্ত করে দোশীদের আইনের আওতায় এনে বিচার করার যোরদাবী জানায়।
সাংবাদিকদের দেখে প্রতিবেশী এক বৃদ্ধা জানান, মিতা মরার ৩দিন আগে শিপ্রা মিতার মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করেছে আমি দেখেছি বলেও জানান।
শেখহাটি পুলিশ ফাড়ির তদন্ত অফিসার মো:আলিমুজ্জামান জানান, দেবভোগ গ্রামের মনি মোহন বিশ্বাসের মেয়ে মিতা বিশ্বাস কেন বা কি কারনে আত্নহত্যা করেছে আমরা তদন্ত করছি, আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে উপযুক্ত প্রমান পেলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করবো বলে জানান তিনি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)