ভুল চিকিৎসার অভিযোগ: সাতক্ষীরায় এক পা হারিয়ে পঙ্গু এক ব্যক্তি!
এক পা হারিয়ে পঙ্গু হয়ে পড়লেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম। একটি দুর্ঘটনা থেকে চিকিৎসার মাধ্যমে তাকে সারানোর নামে ভুল চিকিৎসা হয়েছে বলে অভিযোগ করে এ ব্যাপারে তিনি দায়ী করেছেন সাতক্ষীরার সদর হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স সার্জন ডা. হাফিজউল্লাহ্কে।
তার পায়ের ক্ষতি করলেন কেনো একথা জানতে গিয়ে ওই ডাক্তারের কাছে লাঞ্ছিত হয়েছেন কামরুল ইসলামের স্ত্রী মেহেরুন্নেছা। তিনি এ ঘটনায় সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ করে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন এবং স্ত্রীকে লাঞ্ছনার প্রতিকার চেয়েছেন।
ডান পা হারানো কামরুল ইসলাম জানান ২০২০ সালের ১৯ আগস্ট তিনি সাতক্ষীরা ভোমরা সড়কের মাহমুদপুরে এক দুর্ঘটনায় আহত হন। তাকে দ্রুত নিয়ে আসা হয় সাতক্ষীরা ট্রমা অর্থোপেডিক কেয়ার সেন্টারে ডা. হাফিজউল্লাহর কাছে। তিনি তাকে চিকিৎসা দেন এবং ১৬ দিন সময় লাগবে বলে জানান।
তার হাঁটুর নিচে পায়ের গোড়ালির ওপরে হাড়ের সমান্তরালে রড বসিয়ে রোগীকে ছাড়পত্র দেন একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর । কামরুল ও তার স্ত্রী জানান তখনও ক্ষত শুকায়নি। আলগা ক্ষত অবস্থায় হাড়ও জোড়া লাগেনি।
এমন অবস্থায় তাকে ছাড়পত্র দিয়ে ডাক্তার বলেন দৈনিক ১০টি ডিম ও ১০টি লেবু একসঙ্গে মিশিয়ে খাওয়াতে। তাতেই সব সেরে যাবে। আফসোস করে কামরুল জানান এরপরও বারবার করে সাতক্ষীরা ট্রমাতে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু হাড় জোড়া লাগে না। এমনকি মাংসে পচন ধরতে থাকে। হাড়ও নষ্ট হতে থাকে। এ অবস্থায়ও ডাক্তার নিয়মিত ফি ছাড়াও চিকিৎসা সরঞ্জামের টাকা নিতে থাকেন এবং ট্রমা কেয়ার থেকে তাকে বারবার সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।
নিরুপায় হয়ে কামরুল ইসলাম তার স্ত্রীকে নিয়ে সাতক্ষীরা সরকারি মেডিকেল কলেজের দুই ডাক্তারের আল নূর ক্লিনিকে যান। সেখানে ডা. এনামুল হক পলাশ ও ডা. আলমগীর কবির তাকে চিকিৎসা দেন। এসময় তারা বলেন কামরুল ইসলামের হাড় ও মাংস নষ্ট হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে তারা পয়ের হাঁটুর নিচের অংশ কেটে ফেলেন। কামরুল হাসান জানান ট্রমা সেন্টারে তার চিকিৎসা, ওষুধপত্র এবং বিভিন্ন সরঞ্জামাদি কেনার জন্য সর্বনি¤œ ৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। আর তার শেষ পরিণতি হলো পা কেটে ফেলা।
অভিযোগ করে তিনি বলেন গত রোববার সদর হাসপাতাল চত্বরে কেন তার পা কেটে বাদ দিতে হলো ডা. হাফিজউল্লাহর কাছে একথা জানতে চান তার স্ত্রী মেহেরুন্নেছা। ডা. হাফিজউল্লাহ তাকে বলেন আমি তোমাকে চিনি না। বহু লোকের সামনে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে ডাক্তার মেহেরুন্নেছার গলা চেপে ধরে ধাক্কা দেন এবং গাড়ি নিয়ে চলে যান।
এরপরই হাসপাতালের ডাক্তার কর্মচারীদের পরামর্শ মোতাবেক কামরুল ইসলাম সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করে ক্ষতিপূরন ও লাঞ্ছিত করার প্রতিকার দাবি করেছেন।
জানতে চাইলে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়েত বলেন কাগজপত্রসহ অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য মেডিকেল অফিসার ডা. জয়ন্ত সরকারকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অপরদিকে সাতক্ষীরা ট্রমা কেয়ার সেন্টারের স্বত্ত্বাধিকারী ডা. হাফিজউল্লাহ বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। যতটুকু সম্ভব ততটুকু চিকিৎসা তাকে দেওয়া হয়েছে। রোগীকে আবারও তার কাছে নিয়ে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়। অথচ তিনি না এসে অন্য কোথাও নিয়ে পা কেটে ফেললে তার দায় আমার নয়।
তা ছাড়া মুখে মাস্ক পরা অবস্থায় এক নারী এ বিয়য়ে অভিযোগ করতে চাইলে আমি তাকে বলেছিলাম আপনি স্থানীয় চেয়ারম্যান অথবা কোনো মেম্বরকে আমার ট্রমা কেয়ার্ েএসে কথা বলুন। কাগজপত্র না দেখে রাস্তাঝাটে কিছু বলা সম্ভব নয়।
সূত্র পত্রদূত
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)