মণিরামপুরে শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিজ স্কুলছাত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগ
যশোরের মণিরামপুরে আব্দুস সামাদ (৩২) নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিজ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীকে (১৪) বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে। এক সপ্তাহ আগে তিনি বিয়ে করেছেন বলে জানা গেছে। পরে গত রোববার (০৫ জুন-২০২২) বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে ওই শিক্ষক গা-ঢাকা দিয়েছেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুস সামাদ উপজেলার জালালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বাংলা বিষয়ের শিক্ষক। তিনি একই উপজেলার ঢাকুরিয়া গ্রামের শওকত আলীর ছেলে।
জানা গেছে- এক সপ্তাহ আগে ওই ছাত্রীকে যশোরে নিয়ে গোপনে বিয়ে করেন শিক্ষক আব্দুস সামাদ। বাল্যবিবাহের শিকার ওই ছাত্রী জালালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমানত হোসেনের ভাগনি। আমানত হোসেন নিজে দায়িত্ব নিয়ে আব্দুস সামাদের সঙ্গে ভাগনির বিয়ে দিয়েছেন। এরপর থেকে নিয়মিত স্বামীর বাড়ি আসা-যাওয়া করছে ওই ছাত্রী।
এদিকে- দুই-তিন দিন পরে শিক্ষক-ছাত্রীর বিয়ের ঘটনাটি প্রকাশ পায়। এরপর থেকে বিদ্যালয় এলাকায় হইচই পড়ে যায়। অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুস সামাদ ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রধান শিক্ষক আমানত হোসেনের শাস্তি দাবি করছেন এলাকাবাসী। তবে, নিজের বিয়ের কথা অস্বীকার করেছে ওই ছাত্রী। কিন্তু বিয়ের ঘটনা সত্য বলে জানিয়েছে বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষার্থীরা।
জালালপুর গ্রামের মুর্শিদ হাসান ইমন নামের একজন বলেন- যেখানে শিক্ষকদের উচিত বাল্য বিয়ে বন্ধ করা, সেখানে শিক্ষক নিজেই এমন কাজ করেছেন। তা-ও আবার নিজ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীকে প্রধান শিক্ষকের সহায়তায় বিয়ে করেছেন। বিষয়টি ঘৃণিত। এর প্রভাব অন্য ছাত্রীদের ওপর পড়বে। আমরা এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রীর বাবা বলেন- আমার মেয়েকে সামাদ মাস্টারের সঙ্গে বিয়ে দিইনি। ওদের বিয়ের কথাবার্তা চলছিলো।
অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুস সামাদ বিয়ের বিষয়টি প্রচার হওয়ার খবর পেয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে গা-ঢাকা দিয়েছেন। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
জালালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমানত হোসেন বলেন- শিক্ষক আব্দুস সামাদ আমার প্রতিষ্ঠানের এক ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন এমন খবর লোকমুখে শুনছি। ওই ছাত্রী আমার ভাগনি হলেও তার পরিবার বিয়ের বিষয়ে আমাকে কিছু জানায়নি। আমি বিয়েতে ছিলামও না।
খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জিন্নাহ বলেন- ঘটনাটি জানার পর বিদ্যালয়ে ও সংশ্লিষ্ট এলাকায় গ্রাম-পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনা সত্য হলে ওই শিক্ষককে ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হবে।
মণিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন- জালালপুর বিদ্যালয়ের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। ওই শিক্ষক পলাতক রয়েছেন। তার বেতন বন্ধসহ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, প্রধান শিক্ষকের বিষয়েও তথ্য নেওয়া হচ্ছে। তিনি জড়িত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)