মনিরামপুরে ইউটিউব দেখে রঙিন ফুলকপি চাষ করে কৃষক প্রদীপের চমক
হেলাল উদ্দিন, মনিরামপুর: যশোরের মনিরামপুর উপজেলার পলাশী গ্রামে সফল কৃষক প্রদীপ বিশ্বাস এবার রঙিন ফুলকপি আবাদ করে চমক দেখিয়েছেন। রঙিন ফুলকপি দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি এর স্বাদ ও গুণাগুণ এবং দামের দিক বিবেচনায় এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
উপজেলার রোহিতা ইউনিয়নের পলাশী গ্রামের কৃষক প্রদীপ কুমার বিশ্বাস সারা বছরই তার জমিতে নানা ধরনের সবজি চাষাবাদ করে থাকেন। তবে এবার তিনি ইউটিউব দেখে ও কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে রঙিন ফুলকপি চাষ করে চমক দেখিয়েছেন। প্রদীপ তার ২০ শতক জমিতে রঙিন জাতের ফুলকপি চাষ করে ১০গুন লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।
তার এমন সফলতা দেখে রঙিন ফুলকপি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরাও। কৃষক প্রদীপ বিশ্বাস বলেন- আমি এনজিওতে চাকরী করতাম। ২০১৪ সালে চাকুরী ছেড়ে বাড়ী এসে চাষাবাদে মন দিই। সেই থেকে টেলিভিশন, পত্র-পত্রিকা, কৃষি বিভাগসহ বিভিন্নভাবে সহায়তা নিয়ে নতুন নতুন জাতের ফসলের আবাদ করে আসছি।
নতুন জাতের সবজির আবাদ করা আমার এক ধরনের নেশা। সর্বশেষ ইউটিউব চ্যানেল থেকে রঙিন ফুল কপির আবাদ দেখে এ চাষের ওপর ঝুঁকে পড়ি।
স্থানীয় কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে রঙিন ফুলকপির চাষ করি। বীজ থেকে চারা তৈরি করি। চারা রোপণের ৭০ থেকে ৭৫ দিন পর ক্ষেতে আসে রঙ্গিন ফুলকপি। বীজ থেকে শুরু করে ফসল তোলা পর্যন্ত ২০ শতক জমিতে রঙিন ফুলকপি আবাদ করতে প্রায় হাজার দশেক টাকা খরচ হয়েছে।
সপ্তাহ দুই হলো ফুলকপি বিক্রি শুরু করছি। এতে খরচের টাকা ওঠে গেছে। আশা করছি হাজার পঞ্চাশ টাকা বিক্রি করতে পারবো।
তিনি আরও বলেন- আমার ক্ষেতের রঙিন ফুলকপি দেখতে প্রতিদিনই এলাকার কৃষকসহ সাধারণ মানুষ ভিড় করছেন। তাছাড়া বাজারে নিয়ে যাওয়া মাত্রই বিক্রি হয়ে যায়।
রোহিতা ইউনিয়নের কৃষি উপ-সহকারী তুহিন কুমার বিশ্বাস বলেন- যশোর অঞ্চল “টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের” আওতায় মনিরামপুর কৃষি অফিসের মাধ্যমে কৃষক প্রদীপ কুমার বিশ্বাসকে রঙিন ফুলকপির বীজ ও সার-কীটনাশক প্রদান করা হয়।
কৃষক প্রদীপ কুমার বিশ্বাস শাক-সবজি চাষে খুবই আগ্রহী। তিনি প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপি চাষ করে বেশ লাভবান হবেন। তার দেখাদেখি স্থানীয় অনেক কৃষকই এখন রঙিন ফুলকপি চাষ করবে বলে আগ্রহী হচ্ছেন।
মনিরামপুর উপজেলা কৃষি স¤প্রসারন অফিসার অজয় কুমার বিশ্বাস বলেন- মনিরামপুর উপজেলা সবজি চাষের জন্য অন্যতম। এ জনপদকে সবজি চাষের ভান্ডার ও বলা হয়ে থাকে। চলতি মৌসুমে অন্ততঃ ২২০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন সবজির আবাদ করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার ঋতুরাজ সরকার বলেন- রঙিন ফুলকপি যেমন দেখতে সুন্দর, তেমনি এতে বিটা কেরোটিন থাকে। চোখ এবং ত্বককে ভাল রাখে।
এ ছাড়া অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে; যেটি ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। সাদা কপির মতোই আবাদের সময় একই লাগে। চাষ পদ্ধতিও একই। অন্যদিকে- দামে চড়া, সহজে বিক্রি ও আবাদ করা যায় বিধায় চাষিরা রঙিন ফুলকপি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)