মনিরামপুরে স্বামীর পরকীয়ায় শিশু সন্তানকে নিয়ে স্ত্রীর আত্মহত্যা!
যশোরের মনিরামপুরে অন্তঃসত্ত্বা মা ও এক মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৭ আগস্ট) বিকাল ৫টায় উপজেলার কুলটিয়া ইউনিয়নের লখাই ডাংগা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
রাত ৮টার দিকে পুলিশ মরদেহ দুটি থানায় নিয়ে যায়।
পুলিশ এ সময় ঐ নারীর স্বামী সুজাতপুর গ্রামের কনার মণ্ডলকে আটক করেছে।
ওই নারীর নাম পিয়া মণ্ডল (২২)। তার মেয়ের নাম অদৃতা মণ্ডল (৩)।
কনার মণ্ডল মশিয়াহাটি ডিগ্রি কলেজের সমাজ বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক।
উপজেলার কুলটিয়া গ্রামে তিনি স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন।
এলাকাবাসী জানায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে মা পিয়া মন্ডল তিন বছরের কন্যাকে প্রথম গলায় রশি ঝুলিয়ে মেরে পরে নিজেও ওই রশিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।
এলাকায় গুঞ্জন আছে- স্বামী কনা মন্ডলের পরকীয়ার প্রতিবাদ করে প্রথম মেয়েকে গলায় রশিদিয়ে ঝুলে পরে নিজেই ওই রশিতে আত্মহত্যা করেন।
মনিরামপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আশিক সুজয় মামুন ও মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের পর থেকে কণার মণ্ডলের পরকীয়া নিয়ে প্রভাষক স্বামীর সঙ্গে পিয়া মণ্ডলের ঝগড়া লেগেই থাকত। এরই জেরে মাসখানেক আগে একমাত্র সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান পিয়া। ভালো হওয়ার আশ্বাস দিয়ে পিয়াকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন স্বামী কণার মণ্ডল। তারপরও স্বামীকে ফেরাতে না পেরে এক রশিতে মেয়েকে ঝুলিয়ে হত্যার পর পিয়া মণ্ডল আত্মহত্যা করেন।
শনিবার সন্ধ্যায় যশোরের মনিরামপুরের কুলটিয়া গ্রামে নিহত মা ও মেয়ের লাশ উদ্ধারের পর স্বজনদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানান মনিরামপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম।
এদিকে এ ঘটনায় স্বামী কণার মণ্ডলকে আটক করেছে পুলিশ।
থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, স্বামী কণার পরকীয়া সম্পর্কের কারণে প্রায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকত। এ নিয়ে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়া ও সার্বিক তদন্তের পর আত্মহত্যার পুরো রহস্য উন্মোচন হবে বলে তিনি জানান।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মেয়েকে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে মারার পর পিয়া আরেক রশিতে আত্মহত্যা করেছেন।
স্বজনরা জানান, চার বছর আগে পাশের উপজেলা অভয়নগর থানার দত্তগাতী গ্রামের ভগিরথ মণ্ডলের মেয়ে পিয়াকে বিয়ে করেন কণার মণ্ডল। বিয়ের পর তারা কুলটিয়া বাজারের পাশে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। তবে থেকে কণার মণ্ডলের পরকীয়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায় ঝগড়া হতো।
স্বজনদের ধারণা, স্বামীর ওপর অভিমান করে পিয়া মণ্ডল মেয়ে কথাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর নিজে ফাঁসিতে আত্মহত্যা করেছেন।
পিয়া মণ্ডলের মা শিপ্রা মণ্ডল বলেন, জামাই কণারকে বহুবার ভালো হতে বলেছি, কথা শুনেনি। মেয়েটাও তাকে (কণার) বিপথ থেকে ফিরে আসতে বললেই মারধর করত।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখর চন্দ্র রায় জানান, কণার মণ্ডল মশিয়াহাটি কলেজের প্রভাষক। তারা কুলটিয়া গ্রামের ফাল্গুন মণ্ডলের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। শনিবার ভাড়া বাড়ির রান্নাঘর থেকে দুই দড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় তাদের লাশ উদ্ধার করা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)