মহাকাশে যাচ্ছেন তারা সাড়ে ৫ কোটি ডলারের টিকেট কেটে
দু’জন দাদা আর অন্যজন তিন সন্তানের জনক। এই তিন ধনকুবেরদের প্রত্যেকে সাড়ে পাঁচ কোটি ডলার বা ৪৬৫ কোটি টাকারও বেশি দামের টিকেট কেটে আট দিনের জন্য আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন ভ্রমণে যাচ্ছেন। এই পুরো ক্রু গঠিত হচ্ছে ব্যক্তিগত নাগরিকদের নিয়ে যা মহাকাশ স্টেশনের ইতিহাসে প্রথম।
আগামী বছরের শুরুর দিকে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে। তিন পর্যটক হলেন- ওহাইয়োর রিয়েল স্টেস্ট বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান কনোর গ্রুপের ম্যানেজিং পার্টনার ল্যারি কনোর, কানাডার বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ম্যাভরিক কর্পের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক প্যাথি এবং ব্যবসায়ী ও ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর সাবেক পাইলট এইট্যান স্টিবে। কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্পেসএক্স ড্রাগন নামের মহাকাশযানে করে তারা মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছাবেন এবং সেখানে আট দিন অবস্থান করবেন।
তিন পর্যটকের সঙ্গে থাকবেন নাসার সাবেক নভোচারী ও অ্যাক্সিওম স্পেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইকেল লোপেজ-অ্যালেগ্রিয়া। অ্যালেগ্রিয়া এর আগে চারবার মহাকাশে গিয়েছেন। এই ভ্রমণ দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে তার প্রতিষ্ঠান অ্যাক্সিওম স্পেস। অ্যালেগ্রিয়া পর্যটকদের প্রশিক্ষণও দেখভাল করছেন এবং মিশনের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন থাকবেন।
মঙ্গলবার পর্যটকদের পরিচয় প্রকাশ করে অ্যাক্সিওম জানায়, এই মিশন যদি পরিকল্পনা মাফিক সফল হয়, তাহলে মানবজাতির মহাকাশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে এটি হবে একটি মাইলফলক। এর ফলে মহাকাশ আরও সহজলভ্য হবে এবং মহাকাশ ভ্রমণে বিভিন্ন দেশের সরকারগুলোর একচেটিয়া কর্তৃত্ব হ্রাস পাবে।
প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবছর মহাকাশে দু’টি ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা করছে। এছাড়া নিজস্ব একটি মহাকাশ স্টেশন তৈরি পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের। নাসা আশা করছে এটি তৈরি হলে তা ২২ বছর ধরে কাজ করা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনকে কোনো একদিন প্রতিস্থাপিত করতে পারবে।
এর আগে বেশ কয়েকজন ধনী নাগরিক স্পেস স্টেশনের গিয়েছেন। রাশিয়ার সয়ুজ নভোযানের মাধ্যমে তারা মহাকাশে যান কারণ আমেরিকায় এ ধরনের ফ্লাইট পরিচালনায় নাসার নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু ২০১৯ সালে নাসা তাদের অবস্থান থেকে সরে আসে। নাসার পক্ষ থেকে বলা হয়, এ ধরনের মিশন বাণিজ্যিকভাবে মহাকাশ শিল্প গড়ে উঠতে সহায়তা করবে এবং নাসাও লাভবান হবে।
ব্যক্তিগত নাগরিকদের মহাকাশে পাঠানোর ইচ্ছা নাসার অনেক আগে থেকেই ছিল। এ লক্ষ্যে তারা ‘স্পেসফ্লাইট পার্টিসিপেন্ট’ নামে একটি প্রকল্পও চালু করে। এই প্রকল্পের আওতায় প্রথমে মার্কিন কংগ্রেসের কিছু সদস্য মহাকাশে যান। এরপর নাসা ক্রিস্টা ম্যাকঅলফি নামে নিউ হ্যাম্পশায়ারের এক শিক্ষিকাকে মহাকাশে পাঠানোর জন্য নির্বাচিত করে। ১৯৮৬ সালে স্পেস শাটল চ্যালেঞ্জার বিস্ফোরিত হয়ে ম্যাকঅলফিসহ শাটলের সকল নভোচারী নিহত হন। এই দুর্ঘটনার পর মহাকাশে সাধারণ নাগরিকদের পাঠানোর পরিকল্পনা বাদ দেয় নাসা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)